ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৫০২

করোনা সারাতে হোমিও, উপকারি নাকি ক্ষতিকারক?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০৯:৩৭ ১০ জুন ২০২০  

মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণে সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন গত মাসে সমস্ত বেসরকারি চিকিৎসককে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় আয়ুর্বেদ ও হোমিওপ্যাথি ওষুধ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।

হোমিওপ্যাথি ওষুধ আর্সেনিকাম অ্যালবাম ৩০ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিতর্কের কারণ কভিড-১৯-এর প্রতিষেধক ওষুধ হিসেবে একে বেশ কিছু রাজ্যে সুপারিশ করা হয়েছে। এর আগে আয়ুষ মন্ত্রণালয় কভিড-১৯ প্রতিষেধক হিসেবে যেসব প্রতিষেধকের তালিকা তৈরি করে, সেখানে এর নাম ছিল।

বিতর্কের শুরু যে জায়গা থেকে তাহলো কভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে এ ওষুধ কাজ করে বলে কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণ মেলেনি শুধু এমনই নয়, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরাও তেমনটাই বলছেন।

আর্সেনিকাম অ্যালবাম ৩০ রাজস্থান, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কেরালা সরকার সুপারিশ করেছে। মহারাষ্ট্র সরকার এ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করলেও মুম্বাইয়ের পুর কর্তৃপক্ষ অন্তত দুটি ওয়ার্ডের অতি ঝুঁকি সম্পন্ন এলাকায় এই ওষুধ বিতরণ করেছে। হরিয়ানা কারা কর্তৃপক্ষ ও মুম্বাই পুলিশও যথাক্রমে বন্দি ও কর্মকর্তাদের মধ্যে এই ওষুধ বিতরণ করছে।


ডিসটিলড ওয়াটারের সঙ্গে আর্সেনিক মিশিয়ে গরম করে এই ওষুধ তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়া চলে তিন দিন ধরে। জলে আর্সেনিক দূষণের ফলে শারীরিক সমস্যার কথা সর্বজনবিদিত। এর ফলে ত্বকের ক্যানসার, ফুসফুস ও হৃদরোগ হতে পারে। এই হোমিওপ্যাথিক ওষুধে ১ শতাংশের কম আর্সেনিক থাকে বলে জানিয়েছেন মুম্বাইয়ের প্রেডিকটিভ হোমিওপ্যাথি ক্লিনিকের চিকিৎসক অমরীশ বিজয়কর। তিনি বলেন, 'আর্সেনিকাম অ্যালবাম শরীরের প্রদাহের জন্য ব্যবহৃত হয়। ডায়েরিয়া, সর্দি-কাশির জন্য এই ওষুধ ব্যবহৃত হয়।' একটি কোর্সের জন্য প্রয়োজনীয় একটি ছোট শিশির দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা।

অধ্যাপক জি ভিটৌলকাস ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ ক্ল্যাসিকাল হোমিওপ্যাথি জার্নালে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন আর্সেনিকাম অ্যালবাম সাধারণভাবে হোমিওপ্যাথরা উদ্বেগ, চাঞ্চল্য, ঠান্ডা লাগা, আলসার বা জ্বালা-যন্ত্রণার জন্য ব্যবহার করে থাকেন। এটি পাউডার ও ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায়।

 সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন হোমিওপ্যাথি (CCRH)-এর সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সভায় মত প্রকাশ করা হয় যে আর্সেনিকাম অ্যালবাম ৩০ কভিড-১৯ প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। কাউন্সিল একটি ফ্যাক্ট শিট প্রকাশ করে জানায়, এই ওষুধ কেবলমাত্র ফ্লুয়ের সম্ভাব্য প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পরের দিন আয়ুষ মন্ত্রণালয় পর পর তিন দিন খালি পেটে এই ওষুধ খাওয়ার সুপারিশ করে এবং বলে যে স্থানীয়ভাবে রোগের প্রকোপ দেখা দিলে এক মাস পরেও এই ওষুধ ফের খাওয়া যায়।
আয়ুষ মন্ত্রণালয় ইনফ্লুয়েঞ্জা ও শ্বাসজনিত অসুখের চিকিৎসায় এর ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে এই ওষুধের সুপারিশ করেছে। বেশ কিছু হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক বলেছেন এক একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে এক একটি ওষুধ একেক রকমভাবে কাজ করে ফলে সকলের জন্য একটি সর্বজনীন প্রতিষেধক দেওয়া উচিত নয়। হোমিও চিকিৎসক বাহুবলী শাহের মতে 'যদি আদৌ এ ওষুধ ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা চিকিৎসার একটি অংশ হতে পারে, পূর্ণ চিকিৎসার জন্য কখনোই নয়।' সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস