ঢাকা, ২৭ নভেম্বর বুধবার, ২০২৪ || ১৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৮৭৯

কর্ণফুলি তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের খনন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:৩৯ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের মূল নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ কাজের উদ্বোধন করেন।

এরইমধ্যে এই প্রকল্পের ৩২ শতাংশেরও বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নদীর তলদেশে টানেল খননের জন্য চীন থেকে আনা হয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। খননকাজে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রকল্প এলাকার অদূরেই স্থাপন করা হয়েছে ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ সাব স্টেশন। চার বছরের মধ্যেই এই টানেল নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

 

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পাশ ঘেঁষেই বয়ে চলেছে কর্ণফুলী নদী। এ নদীকে ঘিরে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ওয়ান সিটি টু টাউন হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। চীন থেকে আনা বিশালাকার এসব যন্ত্র দিয়েই কর্ণফুলী নদীর তলদেশে খনন করা হবে ১০ দশমিক ৮ মিটার ব্যাসের দুটি টিউব।

 

এরই মধ্যে টানেলের ৩২ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আজ রোববার শুরু হয়ে গেল টানেলের মূল নির্মাণকাজ।  

এদিকে, দক্ষিণাঞ্চলের বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন জানান, টানেলের খননকাজের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে প্রকল্প এলাকায় স্থাপিত বিদ্যুৎ সাব স্টেশন থেকে। এজন্য প্রতিদিন ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হলেও ৩০ মেগাওয়াট পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে এই বিদ্যুৎ সাব স্টেশনের।

দেশের প্রথম এই টানেল তৈরীতে ব্যয় হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। নির্মাণকাজ শেষ হবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে।

 

এদিকে আরেকটি মঞ্চ থেকে ফলক উন্মোচন করে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল চট্টগ্রাম শহরের বন্দর এলাকার সঙ্গে নদীর অন্য তীরের আনোয়ারা উপজেলাকে সড়কপথে যুক্ত হবে।

এ টানেল চালু হলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে। পাশাপাশি কর্ণফুলীর দুই সেতুর ওপর যানবাহনের চাপ কমবে।

 

দুটি প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশে যোগ দিতে আজ রোববার সকাল পৌনে ১১টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনের পর মোনাজাত ও দোয়ায় অংশ নেন তিনি।

 

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, গৃহায়ন ও গণপুর্তমন্ত্রী স ম রেজাউল করিম, ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রামের মেয়র আজম নাসির উদ্দীন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।

 

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বেইজিংয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

টানেল বোরিং মেশিন পতেঙ্গা অংশ থেকে মাটি কেটে কেটে নদীর ১৮-৩১ মিটার গভীর দিয়ে এগিয়ে যাবে অন্য প্রান্তের দিকে। পাশাপাশি যন্ত্রের সাহায্যে কংক্রিট সেগমেন্ট যুক্ত হয়ে গড়ে তুলবে টানেলের কাঠামো। এরকম দুই হাজার সেগমেন্ট ইতোমধ্যে চীন থেকে নিয়ে আসা হয়েছে প্রকল্প এলাকায়।

 

 যমুনা নদীর নিচ দিয়ে গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলার মধ্যেও আরেকটি টানেল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

 

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে বাস্তবায়নাধীন বন্দরনগরীর প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৫০কোটি ৮৪ লাখ টাকা। নির্মাণ কাজের দায়িত্বে রয়েছে ম্যাক্স-রেঙ্কিন জেভি।

লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নয়টি পয়েন্টে ২৪টি র‌্যাম্প থাকবে।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর