ঢাকা, ২৩ নভেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৫৩

কাদায় খেললে বাড়ে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:৫৫ ২৭ অক্টোবর ২০২২  

শৈশবে কাদায় খেলেননি বা গায়ে মাখেননি-এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। এজন্য মা-বাবার বকাও কম শুনতে হয়নি। তারা বলতেন, কাদায় খেললে নানা রোগ হবে। তবে তাদের বিশ্বাস ভেঙে দিলেন গবেষকরা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা যায়, কাদায় খেললে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে উপকৃত হয়। তাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
 

 

এ নিয়ে জোরালো যুক্তি দিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, শিশুদের স্বাস্থ্যে কাদার প্রভাব ইতিবাচক। এতে শিশুরা কিছু 'বন্ধু অণুজীবে' আক্রান্ত হয়। ফলে তাদের শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। বেশ কয়েকটি রোগের বিরুদ্ধে লড়ায় করে এসব অণুজীব। এসব রোগের মধ্যে অ্যালার্জি, অ্যাজমা, হতাশা ও অবসাদ উল্লেখযোগ্য।

 

গবেষকদের সঙ্গে একমত হয়েছেন মনস্তত্ত্ববিদরাও। তারাও বলছেন, শিশুদের ঘরের বাইরে খেলাধুলার জুড়ি নেই। এতে মস্তিস্ক প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখা এবং এর সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ পায়। প্রাকৃতিক পরিবেশে মন ও মস্তিস্ক ভালো বোধ করে। এটা মনের ক্লান্তি দূর করতে ভূমিকা রাখে।

 

২০০৯ সালে এক গবেষণা অনুযায়ী, যে শিশুরা মনোযোগ সংকট-সংশ্নিষ্ট জটিলতায় ভুগছে, তাদের প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট পার্কে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ওই পার্কে অবশ্যই ঘাস, গাছ ও বাতাস থাকতে হবে।

 

ইতালির পেলারমো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ও শিশু মনস্তত্ত্ববিদ ফ্রান্সেসকো ভিট্রানো বলেন, ঘরের ভেতরে ভিডিও গেম আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে শিশুরা যেন প্রকৃতির কাছে যায়। পাঁক কাদার মধ্যে খেলাধুলা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়ক। অনেক শিশুর চিকিৎসায় তিনি এ পদ্ধতিও ব্যবহার করেছেন। ভিট্রানো মনে করেন, কাদায় খেললে শিশুরা ক্রমেই শরীরের নানা সংকেত সম্পর্কে অবগত হয়।

 

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব উন্নয়ন ও পরিবার বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এলিজাবেথ গেরশফের নেতৃত্বে এক গবেষণায় দেখা যায়, ঘরের বাইরে প্রাকৃতিক পরিবেশে খেলাধুলা করা শিশুদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এতে তাদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ে; স্থূলতা দূর হয়।

 

গবেষকরা মনে করছেন, কাদার মধ্যে 'গোপন কিছু' আছে! সেটা হলো মানুষের সেই 'পুরোনো বন্ধু'। এ বিষয়ে প্রথম ধারণা পাওয়া যায় ১৯৮০ সালের দিকে। এই বন্ধুরা হচ্ছে কাদার অণুজীব। প্রাগ-ঐতিহাসিক কাল থেকে মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এসব অণুজীব প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। এগুলোর বেশিরভাগই ক্ষতিকারক নয়। একাধিক গবেষণায় এর প্রমাণও পাওয়া গেছে।
 

তবে কাদামাটিতে খেলাধুলার অর্থ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা বা হাত-মুখ না ধুয়ে খাওয়া-দাওয়া করাকে বোঝাচ্ছেন না গবেষকরা। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অবশ্যই বাধ্যতামূলক।