ঢাকা, ২৭ নভেম্বর বুধবার, ২০২৪ || ১৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৭৮২

কাদেরকে দেখতে ভিড় না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৩০ ৩ মার্চ ২০১৯  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি বিভাগের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি আছেন ওবায়দুল কাদের। বিকেলে তাকে দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কাদেরের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছেন বলে জানান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। প্রধানমন্ত্রী এ সময় হাসপাতালে ভিড় না করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন বলেও তিনি জানান।

বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, আপনারা সবাইকে জানিয়ে দেন, আমরা যেন নিরিবিলি তার চিকিৎসা করতে পারি। কেউ যেন ভিড় না করেন।

এর আগে দুপুরে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও বিএসএমএমইউ কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসান জানান, ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক।তার শরীর এতটাই নাজুক যে বিদেশ নেয়ার মতো নয়।

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরএই ভালো, এই খারাপপরিস্থিতিতে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা ক্রমেই সংকটাপন্ন হচ্ছে। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা না গেলে সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে কিছুই বলা যাচ্ছে না। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়ার কথা চিন্তা করা হলেও এই মুহূর্তে সেই পরিস্থিতিতে নেই।

ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসায় বিএসএমএমইউয়ের হৃদরোগ বিভাগের পক্ষ থেকে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসানের নেতৃত্বে বোর্ডে রয়েছেন প্রিভেনটিভ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক, অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ চৌধুরী, অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত ভৌমিক, অধ্যাপক ডা. একেএম আক্তারুজ্জামান, কার্ডিও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রেজওয়ানুল হক, অধ্যাপক অসিত বরণ অধিকারী, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান।

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কাদেরকে দেখতে বিএসএমএমইউতে যান প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দলের সাধারণ সম্পাদককে দেশের বাইরে নেয়া হবে কি নানেতারা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপাতত দেশের বাইরে নেয়ার দরকার নেই। এখানেই চিকিৎসা চলবে। প্রায় আধা ঘণ্টা হাসপাতালে ছিলেন শেখ হাসিনা। বিকাল ৪টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও তাকে দেখতে যান। এরপরপরই যান স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।

হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ওবায়দুলকে। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) নম্বর বেডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তাকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭২ ঘণ্টা না গেলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, সকালে এনজিওগ্রামের পর কাদেরের হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। তার হার্টে রিং পরিয়ে একটি ব্লক সচল করা হয়েছে। পরে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। চিকিৎসকদের অনেকেই বলছেন- আসছে ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

সকালে এনজিওগ্রাম করার পর সেতুমন্ত্রীকে বিদেশ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য এদিন সন্ধ্যা ৭টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়। পরে দুপুরে বিফ্রিংয়ে বিএসএমএমইউর কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান জানান, সিঙ্গাপুরে নেয়ার মতো অবস্থায় নেই কাদের।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আসার সঙ্গে সঙ্গে সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। তখন রক্তচাপ স্থিতিশীল ছিল না। আমরা সেটি স্টেবল করেছি। এনজিওগ্রামে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটি আর্টারি থেকে ব্লক অপসারণ করা হয়।

সকালে বিদেশ নেয়ার পরামর্শ দিয়ে দুপুরে কেন নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আলী আহসান বলেন, যেকোনো মুহূর্তে উনার অবস্থা অবনতির দিকে যেতে পারে। আমাদের এখানেও ভালো চিকিৎসা হয়। তবে উন্নত চিকিৎসার যেহেতু শেষ নেই, সেই কারণেই বিদেশে নেয়ার কথা বলা হয়েছিল।

একটি ব্লক অপসারণের পর এখন ওবায়দুল কাদের কেমন আছেন, জানতে চাইলে কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান বলেন, তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা যাবে না।

এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে ওবায়দুল কাদেরকে বিএসএমএমইউর ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়া হয়। সেখান থেকে জরুরি ভিত্তিতে তাকে সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) ভর্তি করা হয়। পরে এনজিওগ্রাম শেষে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে।

সেতুমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের জানান, সকালে ফজরের নামাজ শেষে হঠাৎ করেই শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা অনুভব করেন মন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার মেডিকেল চেকআপ করেন চিকিৎসকরা। চেকআপ শেষে দ্রুত এনজিওগ্রাম করা হয়।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর