ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩১৪

কী করবেন পক্স হলে?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:২১ ১৮ মে ২০২১  

গরমের শুরুতে যাতনাময় একটি রোগ জলবসন্ত বা চিকেন পক্স। আগে এই রোগে অনেক মানুষের মৃত্যু হতো। ছোঁয়াচে এ রোগ সারা বছর দেখা গেলেও এ সময়েই প্রাদুর্ভাব বেশি।

 

চলতি মাসে চিকেন পক্সে আক্রান্ত হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম ফারিহা নুসরাত জেরিন। তিনি জাবির ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৪৬ ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তাই চিকেন পক্স সম্পর্কে জানতে হবে ও সচেতন হতে হবে। আসুন এ সম্পর্কে যেসব বিষয় জানা জরুরি।


যেভাবে বুঝবেন চিকেন পক্স
ভাইরাস সংক্রমণে এ রোগের শুরুতে শরীর ম্যাজম্যাজ, হালকা ব্যথা, অল্প জ্বর থাকবে, গায়ে ছোট ছোট বিচি বা র্যাশ উঠবে। সাধারণত এ র‌্যাশ বুকে-পিঠে দেখা যায়। তবে সারা শরীরেই উঠতে পারে। এ বিচিগুলোতে পানি থাকে, দেখতে অনেকটা ফোসকার মতো।


কী করবেন
এ রোগীকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে। থালাবাসন, কাপড়চোপড় বা রোগী স্পর্শ করে এমন সবই অন্যদের থেকে পৃথক করে দিতে হবে। কুসুম গরম পানিতে গোসল করা ভালো।


খাবার
রোগী মাছ-মাংস, ডিম-দুধ সবই খাবে। পুষ্টিকর খাবার খেলে রোগ আরোগ্য সহজ হবে। চুলকানির জন্য এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ এবং যাতে অন্য কোনো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ না ঘটে সেজন্য অ্যান্টিস্যাপ্টিক দেয়া যেতে পারে। জ্বর, গা ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল এবং সারা শরীরে লোপিও ক্যালাসিন লোশন লাগানো যায়।


যেসব কাজ করবেন না
এমন কোনো খাবার খাবেন না যা থেকে রোগীর পূর্ব থেকে শরীরে অ্যালার্জি বা চুলকানি হতো। চিকেন পক্সের ক্ষত খোঁটা যাবে না। খুঁটলে স্থায়ীভাবে দাগ বসে যাবে। এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। ছয় মাসের মধ্যে দাগ এমনিতেই চলে যায়। এজন্য মুখে ডাবের পানি বা প্রসাধনী ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।


চিকিৎসা
চিকেন পক্স হলে নিয়ম মেনে চলাটা খুব জরুরি। নিয়ম মেনে চললে ১০-১৫ দিনেই পক্স ভালো হয়ে যায়।
বাইরে বের হতে দেয়া যাবে না। এতে বাইরের বাতাসে পক্স শুকাতে দেরি হতে পারে। চিকেন পক্সে সাধারণত বিশেষ কোনো ধরনের ওষুধ প্রয়োজন হয় না। তবে শরীর খুব চুলকায়। সে জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।


এ ছাড়া পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া সব পক্স বের হওয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হোমিও কিংবা ইউনানি জাতীয় ওষুধ খাওয়াতে পারেন। চিকেন পক্স হলে সেপসিস, এনকেফালাইটিস, নিউমোনিয়া ও অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই এসবের চিকিৎসাও করানো প্রয়োজন।


ছোঁয়াচে হওয়ায়
চিকেন পক্স অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ। ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ, হাঁচি-কাশি এবং ব্যবহৃত জিনিসপত্রের মাধ্যমেই এটি বেশি ছড়ায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে আলাদা একটি ঘরে রাখা উচিত। ব্যবহৃত পোশাক, গামছা এগুলো যাতে অন্য কেউ ব্যবহার না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন। পক্স ভালো হয়ে গেলে শিশুর ব্যবহৃত সব কাপড়-চোপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে গরম পানি এবং স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে দিন।


গোসল
পক্স হওয়ার ৫-৬ দিন পর থেকে নিমপাতা ও হলুদ একসঙ্গে বেটে পুরো শরীরে মেখে ৪-৫ দিন গোসল করাতে হবে। এ ছাড়া কিছুদিন পানিতে নিমপাতা সিদ্ধ করে গোসল করিয়ে দিন।


দাগ দূর করতে
চিকেন পক্সের দাগ দূর করতে বিশেষ ধরনের লোশন পাওয়া যায়। এগুলো লাগাতে পারেন। এ ছাড়া কচি ডাবের পানি দিয়ে শরীর, মুখ ধোয়ালেও দাগ দূর হয়।


পরিষ্কার কাপড় পরাতে হবে 

র‌্যাশ ঝরা শুরু করলে এগুলো যেখানে-সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে জমা করুন। খোসা এমনিতেই না উঠলে নখ দিয়ে ওঠানোর চেষ্টা করা উচিত নয়। এতে শরীরে দাগ হয়ে যেতে পারে।