ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৯২১

কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:১৯ ২৫ অক্টোবর ২০২০  

কয়েক বছর আগেও গ্রামের সব বাড়িতে থাকত থানকুনি পাতার গাছ। পরবর্তীতে শহরতলীর বেশ কিছু বাড়িতে লাগানো হতো এটি। কারো হাত-পা কেটে গেলে কিংবা পেটের কোনও সমস্যা হলেই খোঁজ পড়তো এর। কোনও এক ঘরে ঠিকই পাওয়া যেত এই পাতা। 

 

প্রাচীন আর্য়ুবেদ শাস্ত্রে থানকুনি পাতার প্রচুর গুণাগুণ বর্ণিত রয়েছে। অনেক ওষুধ তৈরি হতো এর রস থেকে। কিন্তু এখন এটি প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাও থানকুনি পাতা চেনে না। তবে শরীর সুস্থ রাখতে এই পাতার জুড়িমেলা ভার। প্রতিদিন এর রস খেলে স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও চিন্তা থাকবে না। 

 

শুধু আমাদের দেশেই নয়, খ্রিস্টপূর্ব ১৭ শতক থেকে আফ্রিকা, জাভা, সুমাত্রাতেও ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় থানকুনির পাতা। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে এটি বাটা খুবই উপকারী। দেখে নিন এর উপকারিতা-

 

নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে উপকারিতা অনেক। কারণ, প্রাকৃতিক এসব উপাদানের কোনও বিকল্প হয় না।

ক্ষত নিরাময়ে:  কোনোভাবে চোট পেলে কিংবা হাত-পা কেটে গেলে, দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করতে থানকুনি পাতার জুড়ি নেই। এটি বেটে কাটা জায়গায় লাগালে ব্যথা কম হয়। রক্ত পড়াও বন্ধ হয়। এমনকি ক্ষত থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে না।

 

শরীরে রক্তপ্রবাহ ঠিক থাকে: অনেকের থ্রম্বোসিসের সমস্যা থাকে। এছাড়া অনেকের দেহে অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে রক্তপ্রবাহে সমস্যা হয়। থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত শুদ্ধ থাকে। ফলে শরীরের প্রতি কোষে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যায়।েএতে বিভিন্ন সমস্যার উপশম হয়। হাত-পা ফুলে যাওয়া-এসব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

 

রক্ত জমাট বাঁধে না: থানকুনি পাতায় নানারকম খনিজ উপাদান থাকে, যা তাড়াতাড়ি রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। যে কারণে অনেক জটিল রোগ থেকে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয়া একদম উচিত নয়। এর ফলে হার্ট, কিডনি ও মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। অন্য অঙ্গও কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। তাই বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল করতে হবে।

 

শরীরের ভেতরের জ্বালা কমায়: কোনও কারণে শরীরের ভেতরে কোনও ক্ষত হলে নানারকম সমস্যা হয়। জ্বর, ক্লান্তি এসব আসতেই পারে। এর সঙ্গে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি হতে পারে। এমনকি খিদে কমে যাওয়া, পেশির ব্যথা এগুলোও থাকে। থানকুনি পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারি উপাদান। ফলে খুব তাড়াতাড়ি জ্বালা, যন্ত্রণা কমে। এছাড়া ক্লান্তি ভাব দূর হয়। সেই সঙ্গে অনেক ইনফেকশন থেকেও দূরে রাখে।

 

অলসার নিরাময়ে: পেটের যেকোনও রোগে থানকুনি পাতা খুব ভালো। আমাশয় থেকে আলসার সেরে যায় এর গুণেই। নিয়মিত এটি খেলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। ক্রনিক আমাশয়ের ক্ষেত্রে খুবই ভালো এই পাতা।


মানসিক অবসাদ কমায়: যারা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য খুব ভালো থানকুনি পাতার রস। এটি স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে মানসিক চাপ ও অস্থিরতা কমে। অ্যাংজাইটির আশঙ্কা কমে।

 

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ে: নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যে কারণে ব্রেনসেল ভালোভাবে কাজ করতে পারে। স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে বুদ্ধি বাড়ে। এই কারণেই বাচ্চাদের থানকুনি পাতার রস খাওয়ানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি অ্যালঝাইমার্সের ওষুধও তৈরি হয় এই থেকে।

 

ঘুমের সমস্যা: ঘুম হয় না? রাতের পর রাত জেগে কাটান? তাহলে প্রতিদিন সকালে উঠে থানকুনি পাতা ভেজানো পানি খান। স্নায়ু শিথিল হবে। ঘুম আসবেই।

 

ডিটক্সিফিকেশন: গাজর কিংবা পাতিলেবুর রস শরীরের ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। কিন্তু থানকুনি পাতা যে খুব ডিটক্সিফিকেশন করে তা কি জানতেন? প্রতিদিন এই পাতার রসের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খান। যাবতীয় টক্সিন বেরিয়ে যাবে। শরীর থাকবে ফুরফুরে।