ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৮১৯

রুখবে বাল্যবিয়ে-ইভটিজিং-নির্যাতন

গুয়াখোলার সাইকেল বালিকাদের গল্প

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:০৪ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

নড়াইল জেলার সদর উপজেলার গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক ছাত্রী বাইসাইকেল চালিয়ে স্কুলে যায়। নিজস্ব বাহন থাকায় এখন আর তাদের ভ্যানের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। যাতায়াতের জন্য বাবা মায়ের কাছ থেকেও বাড়তি টাকা নিতে হয় না।

মেয়েরা বাইসাইকেল চালানোয় প্রথম দিকে সামান্য সামাজিক সমস্যায় পড়লেও এখন সবাই স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিয়েছে। বাইসাইকেল থাকায় এখানকার শতাধিক ছাত্রী নিয়মিত ও সময়মত স্কুল করতে পারছে। স্কুলপড়ুয়া মেয়েরা আগামীতে বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, নারী নির্যাতনসহ সমাজ থেকে নানা কুসংস্কার দূর করার প্রত্যয় জানিয়েছে।

নড়াইল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী তিন শতাধিক। বিদ্যালয়টিতে নড়াইল সদর ও যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার ১১টি গ্রামের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে।

স্কুলের ছাত্রী কাকলী জানায়, বাইসাইকেলে করে স্কুলে এলে সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচে। আরেক ছাত্রী মানষী জানায়, শুধু নিজে নয়, বান্ধবীদেরও সাইকেলে করে স্কুলে নিয়ে আসে তারা। সাইকেল নিয়ে স্কুলে যাতায়াতে প্রথম দিকে অনেক কথা শুনতে হলেও এখন আর কেউ কিছু বলে না তাদের। এখন তারা সামনে চলার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

আগামীতে বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, নারী নির্যাতনসহ সমাজ থেকে সব প্রকার কুসংস্কার দূর করার ইচ্ছা তাদের। এ বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের পাশাপাশি ছাত্ররাও সাইকেল নিয়ে নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত করে। ছাত্রীদের কোনো বখাটে উত্যক্তের চেষ্টা করলে ছাত্ররা প্রতিহত করে। এ স্কুলের মেয়েদের মতো অন্যান্য স্কুলের মেয়েরাও এগিয়ে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা বাইসাইকেল আরোহী ছাত্রীদের।

গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মন্ডল জানান, সময় ও অর্থ বাঁচাতে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছেলেদের মতো মেয়েদেরও সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াতের জন্য উৎসাহ দেয়া হয়। এখন ছাত্রীদের অভিভাবকরা নিজের ইচ্ছায় মেয়েদের বাইসাইকেল কিনে দিচ্ছেন। এখানে ছেলে ও মেয়েদের আলাদা করে দেখা হয় না। বাইসাইকেল চালিয়ে ৫/৭ কিলোমিটার দূরের শিক্ষার্থীরা এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে থাকে।

তিনি বলেন, আগে ছেলেরা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে এলেও মেয়েদের ভ্যানে কিংবা পায়ে হেঁটে স্কুলে আসা যাওয়া করতে হতো। দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকদের যৌথ প্রয়াসে সাইকেল কিনে দেয়া হয় মেয়েদের। চার বছর আগে প্রথমে হাতে গোনা কয়েকজন ছাত্রী সাইকেল নিয়ে স্কুলে যাতায়াত শুরু করে। বর্তমানে শতাধিক ছাত্রী নিয়মিত সাইকেলে স্কুলে যাতায়াত করে। এ বিদ্যালয়ের পড়াশোনা ভালো হওয়ায় ফলাফলও দারুণ বলে তিনি জানান।

ফিচার বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর