ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার, ২০২৫ || ৮ ফাল্গুন ১৪৩১
good-food
২২

গোপন বন্দিশালার নির্মমতার চিত্র তুলে ধরলেন তাজুল ইসলাম

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৭:১৮ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫  

একটা মানুষকে পৈশাচিকভাবে কতটা নির্মম নির্যাতন করা যায় তা গোপন বন্দিশালাগুলো পরিদর্শন না করলে বিশ্বাস করাটা কঠিন ছিল বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নিজ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘আয়নাঘর’ নামে কুখ্যাতি পাওয়া গোপন বন্দিশালা পরিদর্শনের ভয়াবহ বর্ণনা দেন তিনি।

সাংবাদিকদের তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত বুধবার তিনটি গোপন বন্দিশালা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। গুম কমিশন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়কসহ আমি (চিফ প্রসিকিউটর) বন্দিশালাগুলো পরিদর্শন করেছি এবং বীভৎসতার চিত্র আমরা দেখেছি।

তিনি বলেন, সেখানে ইলেক্ট্রনিক শক দেয়ার ব্যাবস্থা ছিল। বন্দিদের চোখ বেঁধে রাখা হতো। ৩ ফিট বাই ৩ ফিট এবং ২ ফিট বাই ২ ফিট অমানবিক সব সেল। একটা মানুষকে পৈশাচিকভাবে কতটা নির্মম নির্যাতন করা যায় তা গোপন বন্দিশালাগুলো পরিদর্শন না করলে মানুষের পক্ষে এগুলো বিশ্বাস করাটাই কঠিন ছিল।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার পদ্ধতিগতভাবে বাংলাদেশের ভিন্নমতকে দমন করার জন্য নির্যাতন ও গোপন হত্যাকে যে একটা কালচারে পরিণত করেছিল, সেটা উন্মোচিত হয়েছে।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন,যারা এই নির্যাতন বা নির্যাতন কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত আমরা তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে চাই।

মায়ের সঙ্গে এক হতভাগা মেয়ের বন্দিদশার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটা ১১ বছরের মেয়েকে তার মা’সহ তুলে নেয়া হয়েছিল। মেয়েটির সামনে মাকে হাতকড়া দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। মেয়েটির মা মোটা ছিল বলে হাতকড়া কেটে তার শরীরের মধ্যে বসে গিয়েছিল। ১১ বছরের মেয়েটাকে পাশেই চোখ বেঁধে রাখা হতো। বাথরুম করার সময়ও মেয়েটির মায়ের হাতকড়া খুলে দেয়া হতো না। 

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ১১ বছরের মেয়েসহ একজন নারী রেহাই পায়নি। পুরুষ সদস্যরা নির্যাতন করেছে। এমনকি মেয়েটির মা আজও ফিরে আসেনি। আমরা ধারণা করছি, হয়তো তাকে হত্যা করে তার লাশ কোথাও ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল ১১ বছরের মেয়েটি চিহ্নিত করতে পেরেছে কোথায় তাদের রাখা হয়েছিল, নির্যাতন করা হয়েছিল।

গোপন বন্দীশালার আলামত নষ্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক আলামত আমরা জব্দ করেছি। তবে আমরা দেখেছি গোপন বন্দিশালা বা নির্যাতন কেন্দ্রগুলোর ব্যাপক আলামত নষ্ট করা হয়েছে।

অপরাধ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর