ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৩৮

করোনাকালে উদীয়মান অর্থনীতি

চীন-ভারতের চে’ ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:২৯ ৩ মে ২০২০  

অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিচারে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে অর্থ বাণিজ্যের সাময়িকী ইকোনমিস্ট। যেখানে করোনাভাইরাস সঙ্কটে সবচেয়ে কম ঝুঁকিতে থাকা দশ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের নাম।

 

বিশ্বের ৬৬টি দেশের এই তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে নবম স্থানে, যা চীন ও ভারতের চেয়েও ভালো। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কেবল বাংলাদেশের নামই তুলনামূলক নিরাপদে থাকা দেশের তালিকার শীর্ষ দশে এসেছে।

 

চীন থেকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মহামারী যে বড় ধরনের অর্থনৈতিক দুর্যোগ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে কারও সন্দেহ নেই।

 

ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা বন্ধ থাকায় তিন দশকের মধ্যে এবারই প্রথম বছরের শুরুর তিন মাসে অর্থনীতি সঙ্কুচিত হওয়ার তথ্য দিয়েছে চীন সরকার।

 

ইউরোপ ও আমেরিকায় মহামারীর প্রকোপ শুরু হয়েছে পরে। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের অনেক দেশেই এখনও লকডাউন ওঠেনি। তাদের ক্ষতির তথ্যও সুনির্দিষ্টভাবে আসতে শুরু করেনি।

 

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাসহ শতাধিক দেশ ইতোমধ্যে আইএমএফ এর সহায়তা চেয়েছে। মিশরের মত কোনো কোনো দেশ আগের ঋণ শুধতে না পেরে বেইল আউট চেয়েছে।

 

ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সের বরাত দিয়ে ইকোনমিস্ট জানিয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উদীমান অর্থনীতির দেশগুলোর বন্ড ও শেয়ার বাজার থেকে গত চার মাসে ১০০ বিলিয়ন ডালেরের বেশি তুলে নিয়েছে। তুলে নেওয়া অর্থের এই অংক ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার সময়ের তিনগুণ।

 

ইকোনমিস্ট লিখেছে, কোভিড-১৯ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে অন্তত তিনভাবে। লকডাউনের কারণে মানুষ ঘরে থাকতে বাধ্য হওয়ায় উৎপাদনও বন্ধ থাকছে। বিশ্বজুড়ে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় রপ্তানি আয় কমে যাচ্ছে। আর বিশ্বের বড় একটি অংশ বেকায়দায় থাকায় বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহেও টান পড়ছে।   

 

এই মহামারী যদি জুলাইয়ের আগেও থিতিয়ে আসে, তারপরও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জিডিপি এবার আইএমএফের গত অক্টোবরের পূর্বাভাস থেকে ৬.৬ শতাংশ কম হবে বলে মনে করছে ইকোনমিস্ট।


সঙ্কট মোকাবেলা করতে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর অন্তত আড়াই ট্রিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হতে পারে বলে ইকোনমিস্টের ধারণা। আর এই টাকা তাদের সংগ্রহ করতে হবে বিদেশ থেকে, অথবা নিজেদের রিজার্ভ ভেঙে চলতে হবে।


ইকোনমিস্ট লিখেছে, করোনাভাইরাসের মহামারীর অভিঘাতে কোন দেশ অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে এবং কোন দেশ তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় আছে, তা বুঝতে এই তালিকা করেছে তারা।


উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর শক্তি আর দুর্বলতার জায়গা বিচার করতে গিয়ে চারটি সূচক ইকোনমিস্ট বিবেচনায় নিয়েছে। এগুলো হলো- জিডিপির শতাংশ হিসেবে সরকারের ঋণ, বিদেশি ঋণ, ঋণের সুদ এবং রিজার্ভ।

 

করোনাভাইরাস সঙ্কটে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ অবস্থায় থাকা শীর্ষ দশ হল - বতসোয়ানা, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, পেরু, রাশিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, বাংলাদেশ ও চীন।

 

আর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দশ দেশ হল - ভেনেজুয়েলা, লেবানন, জাম্বিয়া, বাহরাইন, অ্যাঙ্গোলা, শ্রীলঙ্কা, তিউনিশিয়া, মঙ্গোলিয়া, ওমান ও আর্জেন্টিনা।

 

ইকোনমিস্টের বিচারে ঝুঁকির বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।

 

৬৬ দেশের এই তালিকায় ভারত ১৮, পাকিস্তান ৪৩ এবং শ্রীলঙ্কা ৬১তম অবস্থানে রয়েছে।