ঢাকা, ২৩ নভেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৬২৮

টাক মাথার যত্নে যত করণীয়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:২০ ১৫ জুন ২০২৩  

গড়পড়তা সত্তরভাগ মানুষই জীবনের কোনো না কোনো বাঁকে এসে মাথায় টাকের সম্মুখীন হন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে মোট পুরুষের ৩৯ ভাগই মাথায় বিভিন্ন পর্যায়ের টাক সমস্যায় ভুগছেন। এই যে বিশাল এক জনগোষ্ঠী, যাদের মাথায় টাক রয়েছে, তাদেরও টাক মাথার যত্নের প্রয়োজন রয়েছে।

 

চুলের যত্নে অথবা চুল গজানোর জন্য হাজারো রকম গবেষণা, উপকরণ থাকলেও টাক মাথার পরিচর্যায় তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। এখনো টাক মাথার মানুষ বিভিন্ন সময়ে বিদ্রুপের সম্মুখীন হন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, তরুণদের এক উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মাথায় টাকের কারণে আত্মবিশ্বাসের অভাব অথবা বিষাদে ভুগছেন ।


টাক পড়ার কারণ:
টাক পড়ার পিছনের কারণ মূলত হরমোন ও জেনেটিক। জেনেটিক কারণেই অ্যান্ড্রোজেন হরমোন চুলের গোড়া বা ফলিকলের প্রতি অতি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে চুল পড়ার কারণ ঘটায়। সাধারণত মাথার মধ্যাঞ্চল আক্রান্ত হয়। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে, মাথার ওই অংশের চুল না থাকার অর্থ এই নয় যে, ত্বকের গভীরে চুলের ফলিকল এবং সংশ্লিষ্ট তেলগ্রন্থিগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আসলে টাক মাথায় চুলের ফলিকল ও তেলগ্রন্থি সংকুচিত অবস্থায় টিকে থাকে।

 

এছাড়াও মাথায় রয়েছে অযুত সহস্র ঘর্মগ্রন্থি। মাথায় পরিমিত পরিমাণ চুল থাকলে এ গ্রন্থিগুলোর নিঃসরণ মাথার ত্বক হয়ে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এতে চুলের মধ্যে এক ধরনের কোমলতা ও উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু মাথায় টাক পড়ে গেলে নিঃসৃত সেবাম ও ঘাম মাথার ত্বকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে মাথার ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে হয়ে যায়। কারো কারো মাথার ত্বকে এক ধরনের চকচকে ভাব চলে আসে।

 

কীভাবে মাথার ত্বকের যত্ন নেবেন:
প্রথমত:
মাথা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। অনেকেই চুল পড়ে যাওয়ার পর আর শ্যাম্পু ব্যবহার করেন না, যেনতেন প্রকৃতির ক্লিঞ্জার দিয়ে মাথা পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। এটা মোটেই উচিত নয়। ভালো মানের শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে এবং নিয়মিত ভাবে করতে হবে।

 

একনাগাড়ে কয়েকদিন শ্যাম্পু না করলে  তেলগ্রন্থি নিঃসৃত সেবাম এবং ত্বকের মরা কোষ মিলেমিশে মাথায় এক ধরনের আস্তরণের সৃষ্টি করে। এথেকে প্রায়ই মাথায় মেলাসেজিয়া নামক ইস্ট বা ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হয়। এর ফলে মাথায় প্রদাহ ও খুশকির উদ্ভব ঘটে।


দ্বিতীয়ত: ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। শীতকালে মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ভালো মানের একটি ময়েশ্চারাইজের ব্যবহার করা প্রয়োজন। কিছু কিছু ধরনের ময়েশ্চারাইজের বা তেল রয়েছে, যা একদিকে ত্বককে যেমন আর্দ্র রাখে অন্যদিকে ঠিক তেমনি মাথার ত্বকের চকচকে ভাবকে কমিয়ে আনে। এগুলোকে ম্যটিফাইং ময়েশ্চারাইজার বলা হয় এবং টাক মাথার জন্য এগুলো যথেষ্ট মানানসই।

 

তৃতীয়ত: মাথার ত্বকের নিরাপত্তা দিতে হবে। সূর্যের আলোর নিচে চলাফেরার সময় মাথায় একটি হেট বা টুপি পরা বাঞ্ছনীয়। এতে করে ফর্সা লোকেরা চর্ম ক্যান্সার থেকে রক্ষা পেতে পারেন। আবার গরমে অনেকেরই অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা হয়। এক্ষেত্রে একটি রুমাল বা টিস্যু দিয়ে ঘন ঘন মাথা মুছে ফেলা উচিত। স্যাবরিক ডার্মাটাইটিস ত্বকের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা।

 

উপযুক্ত পরিচর্যা না হলে টাক মাথায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে ত্বকে অতিরিক্ত খুশকি, ফুঁসকুড়ি দেখা যায়। এ ছাড়াও মাথায় অতিরিক্ত চুলকানি পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই একজন ভালো মানের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


টাক মাথার মানুষের জন্য কিছু অনুপ্রেরণা:
*গবেষণায় দেখা গেছে অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, টাক মাথার মানুষরা অনেক বেশি জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান।
** অন্য গবেষণায় দেখা গেছে, টাক মাথার মানুষেরা শক্তিশালী, পেশিবহুল এবং প্রভাবশালী হয়ে থাকেন।
*** তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ী তথ্য হলো: ৮২% মহিলা মনে করেন, টাক মাথার মানুষেরা অধিক আকর্ষণীয়।