ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৫১৫

টাঙ্গাইলে নকল সিগারেট কারখানার সন্ধান

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৫৩ ১২ এপ্রিল ২০১৯  

টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে নকল সিগারেট কারখানার সন্ধান পেয়েছে ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কর্তৃপক্ষ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোররাতে একটা প্রিভেন্টিভ দল শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ওই কারখানায় অভিযান চালায়।

কারখানাটি বাইরে অটোরাইসমিলের সাইনবোর্ড টানিয়ে আসছিল। কিন্তু ভেতরে সিগারেট উৎপাদনের মেশিনারি পাওয়া যায়। ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।

অভিযানকালে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোরগোল্ড লিফব্র্যান্ডের প্যাকেট পাওয়া গেছে। এগুলো যাচাই করে দেখা যায়, এসব সিগারেট নকল। এছাড়া অভিযানে বিপুল পরিমাণ উন্নতমানের সিগারেট ফিল্টার উদ্ধার করা হয়।

অভিযানে দুই ভ্যান সমান তিন টন সিগারেটের তামাক জব্দ করা হয়েছে। এসব তামাক প্রক্রিয়াজাতকৃত এবং সিগারেট ব্যবহারের উপযোগী। প্রিভেন্টিভ দল কারখানায় স্থাপিত অতি উন্নতমানের দুই সেট মেশিনও জব্দ করে।

অভিযানে ২০ সদস্যের ভ্যাট কর্মকর্তা দলের নেতৃত্ব দেন উপ-কমিশনার আবদুস সাদেক।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি এক বছরের অধিক সময় ধরে অবৈধভাবে নকল সিগারেট প্রস্তুত করে আসছিল। এসব সিগারেটের মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর ব্র্যান্ডই বেশি। এই কারখানার জন্য কোনো ভ্যাট নিবন্ধন নেয়া হয়নি। ভ্যাটের নিবন্ধন ব্যতীত এই কার্যক্রম পরিচালনা করা অবৈধ।

বিষয়ে ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কমিশনার . মইনুল খান বলেন, অবৈধভাবে সিগারেট উৎপাদনের কারণে সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে ক্রেতা সাধারণ নকল সিগারেট কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। একইসঙ্গে ক্রেতার স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে।

সিগারেট থেকে আহরিত ভ্যাট মোট রাজস্বের প্রায় এক চতুর্থাংশ। আর এনবিআরের মোট রাজস্ব আয়ের এক দশমাংশ। সিগারেট খাতে মোট ভ্যাটের পরিমাণ ২২ হাজার কোটি টাকার ওপরে।

ভ্যাট কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি অন্য ব্যবসার আড়ালে অবৈধভাবে সিগারেট উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। ফলে, ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নানামুখী ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়ছে। আজকের এই অভিযানে অভিযোগের সত্যতা মিললো।

মইনুল খান জানান, দেশের অন্যান্য এলাকাতেও আরো বেশ কিছু গোপন সিগারেটের কারখানা রয়েছে বলে ধারণা করছি। শিগগির এদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযানে দেখা যায়, কারখানার বাইরে সাইনবোর্ড আছেমেসার্স শাকিল অটোরাইস মিলকামাতি, কালিহাতি, টাঙ্গাইল। অনুসন্ধানে দেখা যায়, আশেপাশের লোকজন ভেতরে রাইসমিল হিসেবে জানতো।

অভিযানের সময় উপস্থিত গার্ড শফিকুল ইসলাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, কারখানার জায়গার মালিক স্থানীয় শাহ আলম। তবে, করিম টোব্যাকোর কেউ এটি পরিচালনা করেন। ফ্যাক্টরি থেকে কুষ্টিয়ার করিম টোবাকোর কিছু কাগজপত্র পাওয়া যায়।

অভিযানের খবর পেয়ে মালিকপক্ষ তাদের সহযোগিরা আগেই পালিয়ে যায়। তবে প্রাপ্ত আলামত অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ভ্যাট কর্মকর্তারা জানান।

এই কারখানায় স্থাপিত উন্নতমানের মেশিন দিয়ে দৈনিক প্রায় ২০ লাখ শলাকা সিগারেট প্রস্তুত করা সম্ভব। সেই হিসাবে এই ধরনের একটি গোপন প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চস্তরের সিগারেট উৎপাদনের ভিত্তিতে মাসে গড়ে প্রায় ৫১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি হতে পারে।

এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরো অনুসন্ধানের পর অন্যান্য আইনেও মামলা করা হবে।