ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪০১

টি-ব্যাগ থেকে শরীরে ঢুকছে কোটি কোটি প্লাস্টিক কণা!

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:২৬ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

অফিসে বা পথেঘাটে চা পান করতে হলে আমাদের বেশিরভাগেরই পছন্দ টি-ব্যাগ। চা ছাঁকার ঝামেলা না থাকায় এটি সহজেই ব্যবহার করা যায়। কিন্তু আপনি কী জানেন, শরীরে টি-ব্যাগের মারাত্মক প্রভাব রয়েছে! 


মার্কিন বিজ্ঞানী নাখাইল টুফেনজি বিষয়টি সামনে এনেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এক কাপ চায়ে ব্যবহৃত টি-ব্যাগ থেকে ১১০০ কোটি প্লাস্টিক কণা আমাদের শরীরে র ভেতরে ঢোকে। টি-ব্যাগ এক ধরনের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়। গরম পানির সংস্পর্শ সেই প্লাস্টিকের কণা গলে চায়ের সঙ্গে মিশে যায়। 


ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির গবেষক নাখাইল বাজারে প্রচলিত চারটি আলাদা চা কোম্পানির টি- ব্যাগের ওপর গবেষণা চালান। প্রতিবারই একই ফল আসে তার কাছে। তিনি জানান, এক কাপ চায়ে ব্যবহৃত একটি টি ব্যাগে ১১০০ কোটি প্লাস্টিক কণা বিদ্যমান। এছাড়া ৩০০ কোটি অতিসূক্ষ্ম প্লাস্টিক কণা থাকে। 


সম্প্রতি আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি জার্নাল এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। 

 

অধ্যাপক টুফেনজি জানান, বেশ কয়েকটি সংস্থা কাগজের পরিবর্তে প্লাস্টিক উপাদান মিশ্রিত টি-ব্যাগ বানাচ্ছে। আর এই সব টি-ব্যাগ থেকেই আমাদের শরীরে ঢুকছে প্লাস্টিকের বিষ। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে কার্সিনোজেনের উপস্থিতিও লক্ষ্য করেছেন তারা।

 

অধ্যাপক টুফেঙ্কজির মতে, টি-ব্যাগে যে পিনের সাহায্যে সুতো আটকানো থাকে সেই পিনও আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ঘাতক হতে পারে। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা এফএসএসআই-ও এ বিষয়ে অধ্যাপক টুফেনজির সঙ্গে একমত হয়ে টি-ব্যাগের পিনের বিকল্প খোঁজার পরামর্শ দিয়েছে চা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোকে।

 

অস্ট্রেলিয়ার নিউ ক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকও টি-ব্যাগ ব্যবহারে বিপদের আশঙ্কা করছেন। নিউ ক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সমীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এক সপ্তাহে একজন ব্যক্তির শরীরে প্রায় ৫ গ্রাম প্লাস্টিক প্রবেশ করে টি-ব্যাগের সাহায্যে। সুতরাং টি-ব্যাগে ব্যবহৃত উপাদান সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

 

তবে এই চা পান করার পর মানুষের স্বাস্থ্যে কী প্রভাব পড়ে, তার বিস্তারিত এখনও অজানা। যদিও বিজ্ঞানীরা এ বিষয়টি শিগগির বের করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন এবং আশ্বস্ত করেছেন, প্রভাব বের করতে চেষ্টা চলছে।

 

গবেষকদের পরামর্শ, অনেক চা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান টি-ব্যাগের ক্ষেত্রে কাগজের পরিবর্তে প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে জনসাধারণকেই সচেতন হতে হবে। কেননা, প্লাস্টিক আমাদের শরীরের এবং সমগ্র প্রকৃতির ক্ষতি করছে।

 

এর আগে বোতলজাত পানিতে প্লাস্টিকের প্রভাব নিয়ে পর্যালোচনা করেছিল জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এমনকি গতে মাসে সংস্থটি বলেছিল, মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো বর্তমানে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এই প্লাস্টিক কীভাবে মানব স্বাস্থ্যে প্রভাব বিস্তার করে, এ সম্পর্কে আরও গবেষণা দরকার।

 

ডব্লিউএইচও-এর জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য নির্ধারণ বিভাগের পরিচালক মারিয়া নেইরা বলেন, আমাদের জরুরিভাবে মাইক্রোপ্লাস্টিকের স্বাস্থ্যের প্রভাব সম্পর্কে আরও জানতে হবে। কারণ এগুলো আমাদের পানীয়ের সঙ্গে সর্বত্র রয়েছে।