ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৫২৪

টেস্টিং সল্ট খাচ্ছেন না বিষ?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:৫৫ ৬ মার্চ ২০২১  

খাবার সুস্বাদু করতে দেদারসে ব্যবহার হচ্ছে টেস্টিং সল্ট। নুডলস, চিপস, ফাস্টফুড, চাইনিজ খাবার-সবকিছুতেই রয়েছে এটি। ইদানিং আধুনিক গৃহিণীরাও নেট রেসিপি দেখে খাবারে তা ব্যবহার করছেন। কিন্তু কৃত্রিম স্বাদ বৃদ্ধিকারী টেস্টিং সল্ট নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ভয়ানক নীরব ঘাতক! বিশ্বব্যাপী একাধিক গবেষণার পর তারা এ আশঙ্কা করছেন।

 

পাশ্চাত্যের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেস্টিং সল্টের আগ্রাসন বিশ্বজুড়ে অ্যালকোহল ও নিকোটিনের চেয়েও বড় বিপদ ঘটাতে পারে। আবার এটি নানাভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধন করে।

 

অপরদিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের শঙ্কা, টেস্টিং সল্টের প্রতিক্রিয়ায় তীব্র মাথাব্যথা, হজমযন্ত্রের গোলযোগ, উচ্চরক্তচাপ, স্ট্রোক, খিঁচুনিসহ বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি দীর্ঘমেয়াদে মস্তিষ্কের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।

 

এবার জেনে নেওয়া যাক টেস্টিং সল্ট দেহের কি কি ক্ষতি করে-
* শিশুদের পছন্দের খাবার চিপস। এতে ব্যবহৃত হচ্ছে ঝাঁঝালো স্বাদযুক্ত টেস্টিং সল্ট। এছাড়া প্যাকেটজাত স্যুপ, নুডলস, সসেজ, চানাচুর, ডাল ভাজা, বিস্কুটের মতো অনেক শুকনো খাবারে হরদম মেশানো হচ্ছে এটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব লবণযুক্ত খাবার থেকে পরিণত মানুষের চেয়ে শিশুর মস্তিষ্কের কোষকে দ্রুত নিষ্ক্রিয় ও অবসন্ন করে দিতে পারে।


* পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলেন, চাইনিজ রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পর যদি কারও তীব্র মাথাব্যথা, বমি ভাব, খিঁচুনি, চামড়ায় ফুসকুড়ি, হাত-পায়ে দুর্বলতা ও কাঁপুনি, বুকে চাপ, অবসাদ, ঝিমুনিভাব ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে বুঝতে হবে এগুলো টেস্টিং সল্টের প্রতিক্রিয়ার ফল।


* এ লবণযুক্ত খাবার গভীর মনোযোগে কাজ করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করে। মেজাজ হয়ে উঠতে পারে খিটখিটে। এতে থাকা এক্সাইটোটক্সিন বা উত্তেজনা সৃষ্টিকারী বিষ অণু শরীরের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম বা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উত্তেজিত করে। ফলে তীব্র মাথাব্যথা, এমনকি গর্ভপাত পর্যন্ত হতে পারে।

 

* গর্ভবতী মায়ের খাবারে অতিমাত্রায় টেস্টিং সল্টের ব্যবহার হলে অনাগত সন্তান অটিজম, মস্তিষ্কের রোগ ও বুদ্ধিবৃত্তিক অসম্পূর্ণতা নিয়ে জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে।

 

* গত তিন দশকে টাইপ-২ ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে টেস্টিং সল্টযুক্ত খাবারের প্রতি আঙুল তুলেছেন গবেষকরা।


* প্রচুর টেস্টিং সল্টযুক্ত টমেটো সস, সয়া সস জাতীয় খাবার মানুষের স্নায়ুকোষকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়।

 

* বিশেষজ্ঞদের মতে, টেস্টিং-সল্ট মেদ, স্থূলতা, মস্তিষ্কের নানারকম রোগসহ মস্তিষ্কের ক্যান্সার, মলাশয় ও স্তন ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, পার্কিনসন্স, আলঝেইমার্স, ফাইব্রোমায়েলজিয়া, গেঁটে বাত, অনিদ্রা, বিষণ্নতা ইত্যাদি দীর্ঘস্থায়ী রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

 

* টেস্টিং সল্টের প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন রকম এলার্জি, হাঁপানি ও ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

খাদ্যপণ্য কেনার সময় প্যাকেটের গায়ে ভালোভাবে এর উপাদানগুলো দেখে নিন। তাতে টেস্টিং সল্টের উল্লেখ আছে কি না, থাকলে কি পরিমাণ রয়েছে তা জেনে চিন্তা করুন খাবেন কি না। অনেক সময় প্যাকেটের গায়ে টেস্টিং সল্ট শব্দটি উল্লেখ থাকেন না। পরিবর্তে লেখা থাকে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট কিংবা আরও সংক্ষেপে এমএসজি। আসলে যে নামই লেখা থাক না কেন জিনিস কিন্তু একই।

 

আবার কোনো খাবার মুখে দিলে যদি ঝাঁঝালো নোনা স্বাদ পাওয়া যায়। তাহলে বুঝতে হবে এটি টেস্টিং সল্টেরই কৃতিত্ব। তাই সবারই এই স্বাদের খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। নয় তো এ থেকেই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে বড় ধরনের কোনও রোগ।