ঢাকা, ০৬ জানুয়ারি সোমবার, ২০২৫ || ২৩ পৌষ ১৪৩১
good-food
৬০

ডেঙ্গু শনাক্তে ‘এনএস১ এলাইজা’ বেশি নির্ভরযোগ্য: গবেষণা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০৩:৫৩ ৫ ডিসেম্বর ২০২৪  

এইডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু শনাক্তে দেশে প্রচলিত তিন ধরনের পরীক্ষার মধ্যে ‘এনএস১ এলাইজা’ পরীক্ষা তুলনামূলকভাবে বেশি নির্ভরযোগ্য, যা তুলনামূলক কম খরচে করা যায়। ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার-এনআইএলএমআরসির এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

 

মঙ্গলবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে এনআইএলএমআরসির ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান আরিফা আকরাম তিন ধরনের পরীক্ষার ফলাফল উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশে ডেঙ্গু শনাক্তে যে তিন ধরনের পরীক্ষা হয় সেগুলো হলো- এনএস১ আইসিটি, এনএস১ এলাইজা ও আরটি-পিসিআর।

 

এনএস১ এলাইজা পরীক্ষাটি তেমন ব্যয়বহুল না হওয়ায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সারা দেশে সহজলভ্য করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

 

আরিফা আকরাম জানান, এনআইএলএমআরসিতে সংরক্ষিত ৫০০ জন রোগীর মধ্য থেকে ২০০টি নমুনা তিনি গবেষণায় ব্যবহার করেছেন। এতে দেখা গেছে, তিনটি পরীক্ষার মধ্যে ডেঙ্গু শনাক্তকরণে ‘এনএস১ এলাইজা’ পরীক্ষাটি তুলনামূলকভাবে ভালো ফল দেয়।

 

তিনি বলেন, “এনএস১ আইসিটি পরীক্ষার খরচ ৫০ টাকা, কিন্তু এই পরীক্ষায় অনেক বেশি ‘ফলস নেগেটিভ’ ফল পাওয়া যায়। এর মানে হল রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত। কিন্তু পরীক্ষায় তা ধরা পড়ে না।

 

“ডেঙ্গু নির্ণয়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। তবে এর প্রতিটি পরীক্ষায় খরচ পড়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। অন্যদিকে এনএস১ এলাইজা পরীক্ষায় শনাক্ত সঠিক হয়, খরচ ৪০০ টাকার মত।”

 

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে ডেঙ্গু নির্ণয়ে এনএস১ আইসিটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। এতে অল্প সময়ে পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়। কিন্তু এ পরীক্ষায় ‘ফলস নেগেটিভ’ অনেক বেশি হওয়ায় কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও তা জানতে পারেন না। ফলে চিকিৎসা নেন না বা চিকিৎসা নিতে দেরি করেন। এ কারণে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।

 

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, দেশের সব এলাকায় ‘এনএস১ এলাইজা’ পরীক্ষার ব্যবস্থা সরকারের করা উচিত। খরচের কথা না ভেবে পরীক্ষায় সরকারের ভর্তুকি দেওয়া উচিত। ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুর ক্ষতি বিবেচনায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি বেশি হবে না।

 

“রোগ শনাক্তের অভাবে একজন মানুষ যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যায়, রোগে ভুগে তার কর্মক্ষমতা কমে যায়… এই খরচটা কত। সরকার যদি ডেঙ্গু শনাক্তের খরচটা বহন করে সেটা কতখানি কস্ট অ্যাফেক্টিভ? রোগী যদি জানতে পারে তার ডেঙ্গু হয়েছে তাহলে সে সাবধান হয়ে যাবে।”

 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনআইএলএমআরসির পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহেদ আলী জিন্নাহ। আইসিডিডিআর,বির বিজ্ঞানী আমিনুর রহমান, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক তারেখ মাহবুব খান, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ ইউসুফ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক (মনিটরিং) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ বক্তব্য রাখেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর