ঢাকা, ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪৪১

মৃত ছাত্রের চিকিৎসা ব্যয়ে বিস্ময়

ডেঙ্গুজ্বরে বিল ১লাখ ৮৬হাজার!

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:৫০ ২৮ জুলাই ২০১৯  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ফিরোজ কবীর স্বাধীন (২৫)। পড়তেন ফিন্যান্স বিভাগে। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গেল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ঢাবি’র এই শিক্ষার্থী। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২২ ঘণ্টা।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত এই রোগীর ২২ ঘন্টার চিকিৎসা বিল ধরিয়ে দেয়া হয় ১ লাখ  ৮৬ হাজার ৪৭৪ টাকা। তবে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে মৃত্যুর পর বিল কিছু কম রাখা হয় বলে জানা গেছে।

কিন্তু এত টাকা বিল নিয়ে এখনও কাটেনি ধোয়াশা। স্বাধীনের চিকিৎসা খরচ বাবদ হাসপাতালের বিলের কপি ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা সবার মুখে মুখে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া।

 

ফিরোজ কবীর স্বাধীনের ২২ ঘণ্টার চিকিৎসায় হাসপাতালের বিল থেকে দেখা যায় : ওষুধ বাবদ ৩২ হাজার ৩২১ টাকা ৫১ পয়সা, ল্যাবরেটরি চার্জ ৭৩ হাজার ৮৩৬ টাকা, মেডিক্যাল হসপিটাল সাপ্লাইতে ১০ হাজার ২১৯ টাকা। বাকি টাকা অন্যান্য কয়েকটি খাতে ধরা হয়েছে। মোট বিল দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪৭৪ টাকা!

 

এ বিলের বিষয়ে স্বাধীনের পরিবার ও সহপাঠীদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তেমন কোনো তথ্য দিতে পারেনি স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

 

এমন বিল প্রসঙ্গে স্বাধীনের বড় ভাই মো. ফজলুল করীম অভিযোগ করেন, হাসপাতালগুলো রোগীদের অসহায়ত্ব নিয়ে ব্যবসা করছে।

 

তিনি গণমাধ্যমকে জানান, একদিনও পার হয়নি আর এর ভেতর বিল উঠলো দুই লাখ টাকার কাছাকাছি। তারা কী করলেন আমার ভাইয়ের জন্য যে চিকিৎসা খরচ এত হলো। তারপরও মনকে বোঝাতে পারতাম যদি আমার ভাইকে বাঁচানো যেত।

 

স্বাধীনের বড় বোনের স্বামী হুমায়ুন কবীর বলেন, স্কয়ার হাসপাতালে ২০-২১ ঘণ্টা চিকিৎসাধীন ছিল স্বাধীন। এই সময়ের মধ্যে বিল উঠল এক লাখ ৮৭ হাজার টাকা! হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, আইসিইউর বিল ৬০-৭০ হাজার টাকার মতো আসতে পারে। সেটি হিসাব করে উপস্থিত সময়ে আমরা ৫৭ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়েছিলাম তাদের। কিন্তু এখন এত টাকা বিলের হিসাব আমরা মেলাতে পারছি না।

 

এক সহপাঠী জানান, স্বাধীনকে কত দামি ওষুধ দিয়েছিল তারা যে ওষুধ বাবদ ৩২ হাজার টাকা বিল করা হলো? সার্ভিস চার্জের নামে তারা রোগীর স্বজনদের গলা কাটছে।

 

স্বাধীনের পরিবার ও সহপাঠীদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিলের বিষয়ে জানতে গণমাধ্যমকর্মীরা স্কয়ার হাসপাতালের অভ্যর্থনা ডেস্কে গেলে এ বিষয়ে তারা কোনো বলতে পারবেন না বলে জানান।

 

পুরো বিষয়টি তৃতীয় তলায় বিলিং সেকশন দেখেন বলে জানান তারা। সে অনুযায়ী বিলিং সেকশনে গেলে তারা বলেন, হাসপাতাল থেকে কোনো ডকুমেন্ট দেয়া হয় না।

পরে সেখানে বিলের কপি দেখানো হলে তারা আবারও বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না।’