ঢাকা, ২৭ নভেম্বর বুধবার, ২০২৪ || ১৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১২৬৪

এক জেলাতেই তালিকায় নেই আড়াই লাখ বোরো চাষী

তাদের ধান যাবে কোথায়?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৪৬ ২১ মে ২০১৯  

 সরকারিভাবে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ার পরেও বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। খুচরা, পাইকারী ও প্রান্তি কৃষকসহ সবারই ধারণা ছিল সরকারের নির্ধারণ করা দামেই বাজারে একটি পরিবর্তন আসবে। কিš‘ ধানের বাজারে এর কিছুই পরিবর্তন হয়নি।

গত ১৫ মে সরকারিভাবে খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ায় কৃষকের মনে স্বস্তি দেখা দিয়েছিল। কিš‘ বাজারে এখনও ভালমানের ধান প্রতি মণ বিক্রি হ”েছ ৬৫০ টাকা থেকে ৭২০ টাকায়। কৃষকের ধারণা বর্তমান বাজারে এর কোনই পরিবর্তন হ”েছ না। আর সরকারিভাবে যে ধান কেনা হবে তা খুবই সামান্য। সরকারি সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কম হওয়ায় বগুড়ায় এবার গুদামে ধান দিতে পারবেন না প্রায় আড়াই লাখ বোরো চাষী।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, বগুড়ায় এবার ২ লাখ ৫৮ হাজার ৭৮১ জন চাষি বোরো ধান চাষ করেছেন। অথচ সরকারের গুদামে ধান দিতে পারবেন সর্বো”চ ১০ হাজার জন চাষি। বগুড়া জেলায় এবার বোরো ধানের ফলন হয়েছে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন । আর চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে ৫ হাজার ৫শ ৮৬ মেট্রিক টন। এ হিসাব অনুসারে চাষির একটি বড় অংশই বাদ পড়ে যা”েছ সরকারী সুবিধার বাইরে।  

ধান ক্রয়ের বিষয়ে  সাবগ্রামের একাধিক কৃষক জানান, কিভাবে তালিকায় নাম দিতে হবে বা কোথায় গিয়ে এ সুবিধা পাওয়া যাবে তার কিছুই জানেন না। এছাড়াও কোথাও কোন মাইকিংও করা হয়নি। যার জন্য হাটে বাজারে গিয়ে কম দামে ধান বিক্রি করতে হ”েছ।

আরেক কৃষক চাঁন মিয়া জানান, সরকার যে, ধান কিনছে এ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। ধানের হাটে যাওয়ার পর দেখছি ধানের দাম নেই। অথচ সরকার ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কিনছে। সবাইকে যদি জানিয়ে এ ধান ক্রয় করে তাহলে আমরা সবাই কোন না কোনভাবে উপকার পায়। 

এ বিষয়ে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম সাইফুল ইসলাম জানান, ধান চাল সংগ্রহ অভিযান বগুড়া জেলার লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার ৫শ ৮৬ মেট্রিক টন। আমাদের নীতিমালা অনুসারে একজন কৃষকের কাছ থেকে ১২০ কেজি থেকে শুরু সর্বো”চ ৩ টন পর্যন্ত নিতে পারবো। এ লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে এখানে আমরা ১০ হাজার কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান নিতে পারবো। ধান নেয়ার জন্য প্রতিটি খাদ্য গুদামে কৃষক সহায়তা কেন্দ্র চালু করেছি। কর্মিদের নিয়ে কৃষকের দোরগোড়ায় গিয়ে উঠান বৈঠক করবো। কত আদ্রতায় কিভাবে ধান শুকাতে হবে এ পরামর্শগুলো আমরা মাঠ পর্যায়ে দিবো।

তিনি  বলেন, বগুড়া জেলায় যাতে স্ব”ছতা ও নিষ্ঠার সাথে সরাসরি ধান কিনে কৃষকের প্রণোদনা দিতে পারি এ ব্যব¯’া আমরা করবো। পাশাপাশি সিদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহ করছি। সব মিলে প্রায় ৮৫ হাজার মেট্রিক টন চাল আমরা নিবো। এখানে প্রায় ৯০ হাজার কৃষক পরোক্ষভাবে এ ধান মিলারদের কাছে দেয়ার সুবিধা আছে। কোন কৃষক যাতে তাদের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত না হয় সে দিকে আমরা সব সময় লক্ষ্য রাখছি। অনিয়মে কোন ফোরিয়া ব্যবসায়ী বা খাদ্য কর্মকর্তারাও যদি জড়িত থাকে সবাইকে কঠোরভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সরকার এ বছর সারা দেশ থেকে ১১ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ ও আতপ চাল কিনবে এর মধ্যে ৩৬ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা কেজি দরে আতপ কেনার সিদ্ধান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দেড় লাখ মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। সবচেয়ে বেশি খাদ্য শস্য কেনা হবে দিনাজপুর থেকে ৮৪ হাজার মেট্রিক টন আর বগুড়া থেকে কেনা হবে ৭৮ হাজার মেট্রিক টন।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর