ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩১৫

ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি সহ্য করা হবে না : পণ্য কেনা-বেচা খোলা মাঠে

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:০৩ ১৬ এপ্রিল ২০২০  

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে খোলা মাঠে সামাজিক দূরত্ব মেনে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিভাগের, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার ডিসি - এসপি ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ আহ্বান জানান।


করোনা সংক্রমণ এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আক্রান্তদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করুন। তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ না করে সুরক্ষিত থাকুন। সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। মাস্ক পরুন, গরম পানি খান, নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন।

 

তিনি আরো বলেন, করোনা মোকাবেলায় প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে এবং সেই অনুসারে কাজও শুরু হয়েছে। যাদের আসলেই প্রয়োজন, তারা যেন এই সহযোগিতা পান সেজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে তালিকা করতে বলা হয়েছে। তবে এই ত্রাণ নিয়ে কেউ দুর্নীতি করবেন না। ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।

 

এ সময় আসন্ন রমযান মাসে পণ্য পরিবহন ও খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

এসময় প্রধানমন্ত্রী জানান, করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় হতদরিদ্রদের জন্য আরো ৫০ লাখ অতিরিক্ত রেশনকার্ড দেয়া হবে। এছাড়াও ত্রাণ নিয়ে কোনো পর্যায়ের দুর্নীতিই সহ্য করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, দলমত নির্বিশেষে দুঃস্থ মানুষকে সহায়তা করতে হবে। 

 

তিনি বলেন, যেহেতু সবকিছু এখন বন্ধ। অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। যারা দিনমজুর কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, ছোট ব্যবসায়ী, এমনকি নিম্নবিত্তদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। সবাইকে সহযোগিতা করব। এমনকি এটা আমরা শুরু করেছি। মানুষের কাছে হাত পাততে পারে না যারা, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আরও ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ড করে দেব। ১০ টাকার ওএমএস চাল নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এটা স্থগিত করি।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নিয়েছিলাম। কিন্তু করোনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কারণে কিছুটা ধাক্কা আমাদের দেশে আসে আসে। এজন্য আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান বাতিল করি। জনসমাগম বাদ দিতে এসব করেছি আমরা।

 

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ বেশ কয়েকটি জেলায সব থেকে বেশি আক্রান্ত। অন্যান্য জেলায়ও কিছু আছে, কিন্তু ঢাকা এবং এর আশপাশে ভাইরাস কেন এত বেশি হলো, এটি নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চাই। এ রোগে এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি আমি। যারা এখন চিকিৎসারত আছেন তারাও দ্রুত আরোগ্য লাভ করুক, এটাই আমি চাই।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড যে যেখানে আছে প্রত্যেকে কিন্তু অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।


তিনি বলেন, এই করোনাভাইরাস এমন একটা জিনিস সারা বিশ্বে এ ধরনের ঘটনা আর কখনও দেখা যায়নি। সারাবিশ্বে ২৫০ কোটি মানুষ ঘরবন্দি। এটি একটি অদৃশ্য শক্তি, যা চোখে দেখা যায় না। এর প্রভাবে সারাবিশ্ব একটা জায়গায় চলে এসেছে। সারাবিশ্বের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা হবে। এভাবে চিন্তা করে আমরা ইতোমধ্যেই ৯২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করেছি।

 

এসময় কৃষি উৎপাদনে নজর দেয়ার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। রমজানে কোনো পণ্যসংকট যাতে না হয় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ত্রাণ পৌঁছাতে হবে সঠিক মানুষের হাতে। 

 

এর আগে গেল ৫ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের ১৩ জেলার এবং ১২ এপ্রিল বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৬ জেলার করোনা সম্পর্কিত খোঁজ এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।