ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৭ পৌষ ১৪৩১
good-food
৮৪৯

দেশের দৃষ্টিনন্দন ৬ পাহাড়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:০৭ ৬ আগস্ট ২০২৩  

বাংলাদেশ নিম্নভূমির দেশ হলেও এর দক্ষিণ পূর্বে চট্টগ্রামে পাহাড়, উত্তর পূর্বে সিলেটে নিচু পাহাড় এবং উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে কিছু উচ্চভূমি আছে। নিচে দেশের সর্বোচ্চ পাহাড় সমূহ- দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ একটা তালিকা দেওয়া হলো।

 

১. সাকা হাফং

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া। (আনুষ্ঠানিকভাবে ত্লাংময়কে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সরকারি ভাবে তাজিংডং বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া স্বীকৃত। সাকা হাফং চূড়াটি ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম আরোহণ করেন ইংরেজ পর্বতারোহী জিং ফুলেন। সেসময় তিনি চূঁড়াটির উচ্চতা নির্ণয় করেন ১,০৬৪ মিটার ।

 

তার দেখানো এ অবস্থান রাশিয়া নির্মিত ভৌগোলিক মানচিত্রে এর অবস্থানের সাথে হুবহু মিলে যায়। ২০০৭ সালে প্রথম বাংলাদেশী দল ত্লাংময় আরোহণ করেন। ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে সেই দলে ছিলেন দেশের এভারেস্ট আরোহণকারী পর্বতারোহী সজল খালেদ। মূলত সেই সময় থেকে পরিচিত হয়ে উঠে ত্লাংময় নামটি। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে দুটি অভিযাত্রিক দল সাকা হাফং-এর উচ্চতা নির্ণয় করেন ৩,৪৮৮ ও ৩,৪৬১ ফুট। বাংলাদেশের স্বীকৃত সর্বোচ্চ চূড়া তাজিংডং ।

 

২. তাজিংডং

তাজিংডং বাংলাদেশের একটি পর্বতশৃঙ্গ। সরকারিভাবে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে স্বীকৃত।  এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার সাইচল পর্বতসারিতে অবস্থিত। সরকারি হিসেবে তাজিংডং পর্বতের উচ্চতা ১,২৮০ মিটার  হলেও এর প্রকৃত উচ্চতা ৭৯০ মিটার ।

তাজিংডং ভ্রমণ গাইড ও খরচের বিস্তারিত» আদার ব্যাপারী

পূর্বে কেওক্রাডংকে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মনে করা হত, আধুনিক গবেষণায় এই তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে বেসরকারী গবেষণায় সাকা হাফং পর্বতকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ দাবী করা হয়, তবে এটি এখনও সরকারিভাবে স্বীকৃত নয়।

 

৩. কেওক্রাডং

কেওক্রাডং বা কেওকাড়াডং বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। কেওক্রাডং বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলায় অবস্থিত। অর্থাৎ বান্দরবানেরও দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। একসময় যখন একে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মনে করা হতো তখন এর উচ্চতা পরিমাপ করা হয়েছিল ১,২৩০ মিটার।

 

অধুনা রাশিয়া কর্তৃক পরিচালিত এসআরটিএম উপাত্ত এবং জিপিএস গণনা থেকে দেখা গেছে এর উচ্চতা ১,০০০ মিটারের বেশি নয়। শৃঙ্গের শীর্ষে সেনাবাহিনী কর্তৃক উৎকীর্ণ যে ফলক দেখা যায় তাতে এর উচ্চতা লেখা হয়েছে ৩,১৭২ ফুট।

 

জিপিএস সমীক্ষায় উচ্চতা পাওয়া গেছে ৯৭৪ মিটার (৩,১৯৬ ফুট)। এই পরিমাপটি রুশীয় পরিমাপের সাথে খাপ খায়। এসআরটিএম উপাত্ত এবং মানচিত্রের মাধ্যমে এই পরিমাপ করা হয়েছে।

৪. জো তল্যাং/মোদক মুয়াল

বাংলাদেশের উচ্চতম সাতটি পর্বতশৃঙ্গ এর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চূড়ার কৃতিত্ব ধারন করে আছে এই পর্বত। দীর্ঘদিন ধরে জনগন মনে করে আসত জো তল্যাং হচ্ছে বাংলাদেশের উচ্চতম শিখর। তবে নাসার উপগ্রহের তথ্য অনুযায়ী স্পষ্ট হয় এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর চূড়া।আবার কয়েকটি স্যাটেলাইটের তথ্য অনুযায়ী দুমলং দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং জো তল্যাং তৃতীয় বৃহত্তর।

সাকা হাফং, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত সামিটের গাইডলাইন » আদার ব্যাপারী

জো তল্যাং মূলত বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের পূর্ব দিগন্তকে রক্ষন করেছে। বান্দরবান জেলার থানচিতে অবস্থিত এই সুবিশাল পর্বত।জো তল্যাং এর জো শব্দের অর্থ হলো বাওম ভাষায় মিজো যা ভারতের মিজোরাম থেকে উদ্ভব হয় কারন তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশ বৃহত্তর ভারতের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আর তল্যাং দ্বারা পাহাড় নির্দেশিত হয়। অ্যামেরিকা ও রাশিয়ার টপোগ্রাফিক মানচিত্র অনুসারে জো তল্যাং কে মোদক মুয়াল হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

 

৫. যোগী হাফং

জোতলাং আর যোগী হাফং পাহাড় প্রেমীদের কাছে পরিচিত দুটি নাম। বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে দুর্গম অঞ্চলে এই দুই পাহাড়ের অবস্থান। বাংলাদেশের মোদক তং রেঞ্জের পাহাড়গুলোর উচ্চতা সব থেকে বেশি। বেসরকারিভাবে বাংলাদেশের ২য় এবং ৪র্থ চূড়া যথাক্রমে জোতলাং এবং যোগী হাফং। বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারকে পৃথক করতে দাঁড়িয়ে আছে স্বমহিমায়।

চিত্র:যোগী হাফং থেকে আইয়াং ত্লং চূড়া (১ম) এবং জো-ত্লং চূড়া (২য়).jpg -  উইকিপিডিয়া

৬. দুমলং

দুমলং বাংলাদেশের একটি পর্বতশৃঙ্গ। বেসরকারিভাবে এটিকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ বলে দাবী করা হয়। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। এ পর্বতের উচ্চতা ৩,৩১৪ ফুট।  এটি রাঙ্গামাটি জেলার সর্বোচ্চ পর্বত ও দেশের ১০০০ মিটারের অধিক উচ্চতার ৩ টি পর্বতের মধ্যে একটি।