ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৭০২

ধর্মঘট না `কর্মবিরতি` চলছে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৪০ ২০ নভেম্বর ২০১৯  

বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় পরিবহন শ্রমিকরা দাবি আদায়ের জন্য আকস্মিকভাবে কাজ বন্ধ করে দেন। কখনো তারা ধর্মঘটের ডাক দেযন, আবারো কখনো ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সেটিকে 'কর্মবিরতি' হিসেবে বর্ণনা করেন।
নতুন সরকার পরিবহন আইন সংস্কারের দাবিতে গত দুইদিন ধরে শ্রমিকরা যা করছেন সেটিকে তারা 'কর্মবিরতি' হিসেবে বর্ণনা করছেন।
শ্রম আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, 'কর্মবিরতি' শব্দটি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবহন শ্রমিকরা দেখাতে চাইছেন বিষয়টিতে সংগঠনের কোনও দায় নেই। এটা শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করছে বলে তারা দেখাচ্ছেন।
শ্রম আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উত্তম কুমার দাশ বলেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী 'ধর্মঘটের' বিষয়টি মালিক পক্ষ এবং শ্রমিক পক্ষের বিষয়। কিন্তু পরিবহন খাতে উভয় পক্ষের স্বার্থ এক হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এখানে শ্রমিকদের দাবি সরকারের কাছে। সেজন্য তারা 'ধর্মঘটের' পরিবর্তে 'কর্মবিরতি' শব্দটি ব্যবহার করছে। আইন নিয়ে তাদের যদি কোনও ক্ষোভ থাকে, তাহলে বিষয়টি তারা আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। কিন্তু কোনওভাবেই জনজীবন বিপর্যস্ত করে কর্মবিরতিতে যেতে পারে না।
এছাড়া বাস-ট্রাক শ্রমিকরা যেভাবে বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে সেটি দেশের আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য বলে উল্লেখ করেন বিশ্লেষকরা।


ধর্মঘট নিয়ে আইন কী বলছে?
কোনও শ্রমিক সংগঠন যদি ধর্মঘট পালন করতে চায়, তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ নিয়ম মেনে চলতে হয় শ্রমিক সংগঠনগুলোকে।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ধর্মঘট ডাকতে পারে স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠন। তাদের যদি কোনও দাবি থাকে, তাহলে বিষয়টি নিয়ে প্রথমে আলোচনা করতে হবে মালিক পক্ষের সঙ্গে। মালিক-পক্ষ বিষয়টি সুরাহা না করলে তখন তারা বিষয়টি নিয়ে যাবে শ্রম অধিদপ্তরে। সেখানে মালিক ও শ্রমিক - উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মধ্যস্থতার চেষ্টা করা হবে।
শ্রম অধিদপ্তরের মধ্যস্থতায় যদি মালিক এবং শ্রমিক-পক্ষ একমত না হয়, তখন আইন অনুযায়ী দুটো রাস্তা খোলা থাকে।
আইনজীবী দাশ বলেন, বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক-পক্ষ তখন আদালতে যেতে পারে কিংবা তারা ধর্মঘট পালন করতে পারে। কিন্তু চাইলেই আকস্মিকভাবে ধর্মঘটে যেতে পারে না। ধর্মঘট পালন করতে হলে শ্রমিক সংগঠনকে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে তাদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের মতামত নিতে হবে। দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিক যদি ধর্মঘটের ডাক দেয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ৭ থেকে ১৪ দিনের নোটিশ দিয়ে ধর্মঘট পালন করতে পারে। এ পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শ্রমিকরা বলছেন, তারা কোনও বেআইনি কাজ করছেন না। বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম বলেন, চলমান কর্মবিরতিতে দেশের কোনও আইন ভঙ্গ হয়নি। মালিকরা গাড়ি দিচ্ছে না, শ্রমিকরাও কাজে যাচ্ছে না। এখানে আগে থেকে নোটিস দেবার কিছু নেই।
তিনি দাবি করেন, দেশের কোথাও পরিবহন শ্রমিকরা যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে না।

জনদুর্ভোগ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর