ঢাকা, ১৯ জানুয়ারি রোববার, ২০২৫ || ৬ মাঘ ১৪৩১
good-food
১১০০

নজিরবিহীন ভুয়া ভোটের নির্বাচন: বামজোট

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:২৬ ১১ জানুয়ারি ২০১৯  

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইতিহাসের কলঙ্কিত নির্বাচন। এমন কলঙ্কজনক নির্বাচন দেশের ইতিহাসে আর হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোট । 

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত ‘ভোট ডাকাতি, জবর দখল ও অনিয়মের নানা চিত্র’ শীর্ষক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া বাম জোটের প্রার্থীরা এই শুনানিতে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও অভিযোগ তুল ধরেন।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)'র সাধারণ সম্পাদক ও বাম জোটের সমন্বয়ক  কমরেড মো. শাহ আলম গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নজিরবিহীন ভুয়া ভোটের নির্বাচন উল্লেখ করে গণশুনানির শুরু করেন  ।

গত ৩০ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন আওয়ামী মহাজোট ২৮৮ আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেন। তখন থেকেই এই নির্বাচন নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা, সমালোচনা। এর মধ্যেই বাম জোট আজ তাদের বক্তব্য মিডিয়ার মাধ্যমে জাতির কাছে পেশ করেছে। এবং এই নির্বাচনকে কলঙ্কিত নির্বাচন ও  নজিরবিহীন ভুয়া ভোটের নির্বাচন উল্লেখ করেছে। 

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, বাম গণতান্ত্রিক  জোটসহ ভোটে অংশ  নেয়া ব্যক্তিবর্গ দাবি করেছে, এই নির্বাচনে জনগন ভোট দেয়নি, জনগনের পরিবর্তে প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোটেই আগের দিনই আওয়ামীলীগ তৃনমূল ভোটের বাক্স ভোরে রেখেছে। উল্লেখ্য, ভোটের দিন ভোটের এরকম ঘটনা দায়ি করে এমনকি হিরো আলমও ভোট  বর্জন করেন।

৩০ শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে বাম গণতান্ত্রিক জোট ১৩১ টি আসনে ১৪৭ জন প্রার্থী দেয়।  যার ভিতর সব কটিতে হারার সাথে সাথে তারা জামানত হারায়। কি, কেন, কিভাবে  নির্বাচন হল এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে তারা আজ  গণশুনানির শুরু করেন।   

দিনব্যাপী গণশুনানিতে বাম দল থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৮০ জন প্রার্থী অংশ নেয়ার সাথে সাথে তাঁদের নির্বাচনী এলাকায় ভোটের সময়কার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক ও  ঢাকা-১২ আসন অংশ নেয়া কোদাল মার্কার প্রার্থী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নির্বাচনের আগের দিন রাতেই কেন্দ্রভেদে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোট সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা হয়েছে। আমরা যারা প্রার্থী ভোট দিতে গিয়েছিলাম, দেখেছি, একটা ভোটকেন্দ্রে ভোটারের তেমন কোনো ভিড় নেই অথচ নয়টা বা সাড়ে নয়টার মধ্যেই ব্যালট বাক্স ভরে গেছে।’ 

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এর মতো কলঙ্কজনক নির্বাচন আর নেই।প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে একটা নির্বাচন হলো, কিন্তু সেই নির্বাচনে জনগণকে অংশ নিতে দেওয়া হলো না। সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনের কর্তৃত্ব কাজ করেছে।’ তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে থেকেই পুরো একটা একতরফা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। 

নরসিংদী-৪ আসনে কাস্তে মার্কা  সিপিবির কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দ্র অভিযোগ করেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকায় একটি ভোটকেন্দ্রের এক প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নির্বাচনের আগের দিন আমার কাছে স্বীকার করেন, প্রশাসনের নির্দেশ ৩৫ শতাংশ ভোটের সিল যেন নির্বাচনের আগের রাতেই দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের চাপে পরে তা ৪৫ শতাংশ হয়ে যায়। সেই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নির্বাচনের আগের দিন রাতে আমাকে বলছিলেন, “এখন আমি কীভাবে এই বাড়তিটুকু ম্যানেজ করব”’।

রাজশাহী-১ আসনের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের প্রার্থী আলফাজ হোসেন বলেন, ভোটের নানা অনিয়ম রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ প্রশাসনকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হলেও তার কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৫৭ আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে মাত্র ৫টি আসন। বিএনপিকে ছাপিয়ে ২২ আসন পেয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হয়েছে জাতীয় পার্টি।