ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২২৪

নতুন ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল: এআই দৌড়ের আগুনে ঘি ঢাললো মেটা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৫৭ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

গবেষকদের জন্য বিশাল এক ‘ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল’ প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট মেটা, যা নতুন এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থার মূল সফটওয়্যার। বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো যখন নিজস্ব পণ্যে এই প্রযুক্তি সমন্বয়ের পেছনে ‘গাট বেধে নেমেছে’, তখন শুক্রবারের এই ঘোষণা গোটা এআই দৌড়ের ‘আগুনে ঘি ঢালবে’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।

 

এআই প্রযুক্তি খাতে আধিপত্য বিস্তারের এই ‘প্রকাশ্য প্রতিযোগিতা’ শুরু হয় গত বছরের শেষে। সে সময়, আত্মপ্রকাশ ঘটে মাইক্রোসফট সমর্থিত সফটওয়্যার কোম্পানি ওপেনএআই’র নতুন চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’র। ফলে, নিজস্ব এআই সিস্টেম প্রকাশে অনেকটা বাধ্যই হয় গুগল ও চীনের বাইদু’র মতো টেক হেভিওয়েটরা।

 

অবাণিজ্যিক লাইসেন্সের অধীনে ‘লার্জ ল্যাংগুয়েজ মডেল মেটা এআই’ বা ‘এলএলএএমএ’ নামের নতুন এই ভাষা মডেল মিলবে সরকার, সুশীল সমাজ ও একাডেমিয়া সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গবেষক ও সংস্থার জন্য। --এক ব্লগ পোস্টে বলেছে মেটা। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এইসব বিশাল ভাষা মডেল বিভিন্ন তথ্যের সারসংক্ষেপ বা কনটেন্ট তৈরির উদ্দেশ্যে ব্যাপক পরিমাণ টেক্সট সংগ্রহ করতে পারে। পাশাপাশি, এগুলো বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দিতে পারে। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, এমন বাক্য যা দেখলে মনে হয় যে এটি মানুষের হাতেই লেখা।

 

এর আগে মেটা বলেছে, এই মডেলে আগের বিভিন্ন ব্যবস্থার চেয়ে তুলনামূলক কম কম্পিউটিং ক্ষমতা প্রয়োজন। আর এটি ল্যাটিন ও সিরিলিক বর্ণমালা’সহ ২০টি ভাষায় প্রশিক্ষিত হয়েছে। “মেটার আজকের ঘোষণা তাদের উৎপাদনশীল এআই সক্ষমতা পরীক্ষার উদ্দেশ্যে নেওয়া এক পদক্ষেপ বলে মনে হচ্ছে, যাতে তারা নিজেদের বিভিন্ন ভবিষ্যৎ পণ্যে সেগুলো প্রয়োগ করতে পারে।” --বলেন বিনিয়োগ কোম্পানি ‘ডিএ ডেভিডসন’-এর জ্যেষ্ঠ সফটওয়্যার বিশ্লেষক জিল লুরিয়া।

 

“জেনারেটিভ এআই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থার এমন এক নতুন অ্যাপ্লিকেশন, যেটিতে মেটার অভিজ্ঞতা কম। তবে, তাদের ব্যবসার ভবিষ্যতের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” প্রযুক্তি শিল্পে বিনিয়োগের ‘সম্ভাবনাময় জায়গা’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা। তবে, এতে অগ্রগতির হার প্রত্যাশার চেয়ে কম হওয়ায় এই খাতে ব্যপক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সেইসঙ্গে বন্ধ হয়েছে এ নিয়ে বাজী ধরা উদ্যোগ।

 

মেটা বলেছে, তুলনামূলক বেশি প্যারামিটার পরীক্ষা করে বা এমন কোনো ভেরিয়েবল, যা অ্যালগরিদমের বিবেচনায় আসে, বিভিন্ন এমন প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছাড়িয়ে যেতে পারে নতুন এই ভাষা মডেলের কার্যক্রম। কোম্পানির দাবি, চ্যাটজিপিটি’র পুর্ববর্তী মডেল জিপিটি-৩’কে ছাড়িয়ে যেতে পারে এক হাজার তিনশ কোটি পারামিটার থাকা এলএলএমএ’র এক সংস্করণ।

 

মেটার এক মুখপাত্র এই মডেলের কার্যকারিতার কৃতিত্ব দিয়েছেন এর বিশাল পরিমাণ ‘ঝামেলাহীন’ ডেটা ও ‘কাঠামোগত উন্নয়নের’ মতো বিষয়গুলোকে, যা এর প্রশিক্ষণের স্থিতিশীলতাও বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বছরের মে মাসে গবেষকদের লক্ষ্য করে ‘ওপিটি-১৭৫বি’ নামেও বিশাল এক ভাষা মডেল প্রকাশ করে মেটা। আর এটি তৈরি হয়েছে তাদের ‘ব্লেন্ডারবট’ নামের চ্যাটবটের নতুন সংস্করণের ভিত্তিতে।

 

পরবর্তীতে, ‘গ্যালাকটিকা’ নামে এক মডেলের আত্মপ্রকাশ ঘটায় মেটা। এটি বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ লেখার পাশাপাশি অংকের সমাধানও দিতে পারতো। তবে, এর নমুনা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভুল উত্তর দেওয়ার কারণে দ্রুতই এটি বন্ধ হয়ে যায়।