ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৩৯৫

নাটোরের উত্তরা গণভবনে কী কী আছে?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১২:০৪ ৪ মার্চ ২০২১  

ঘুরতে ভালো লাগে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। আর ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের জন্য ভ্রমণের অন্যতম স্থান হতে পারে নাটোরের উত্তরা গণভবন। শহরের বিখ্যাত দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি বর্তমানে উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত। রানী ভবানী তার নায়েব দয়ারাম রায়কে দিঘাপতিয়া পরগনা উপহার দেন। পরবর্তীতে নায়েব সেখানে কয়েকটি প্রাসাদ গড়ে তোলেন। 


যা যা দেখতে পাবেন
প্রায় ৪৩ একর আয়তনের লেক ও প্রাচীর বেষ্টিত রাজবাড়িটিতে মোট ১২টি ভবন রয়েছে। উত্তরা গণভবনের পিরামিড আকৃতির চারতলা প্রবেশদ্বারের চূড়ায় বিখ্যাত কোক অ্যান্ড টেলভি কোম্পানির তৈরি একটি ঘণ্টা ঘড়ি স্থাপন করা হয়েছে। আর মূল প্রাসাদ ভবনে প্রবেশ করলে রাজার সিংহাসন, আক্রমণ ঠেকানোর বর্ম এবং তলোয়ার দেখতে পাওয়া যায়। 


রাজ প্রাসাদের প্রাঙ্গণে ইতালি থেকে সংগৃহীত ভাস্কর্যে সুসজ্জিত বাগান রয়েছে। মনোমুগ্ধকর এই বাগানে স্থান পেয়েছে হাপরমালি, নীলমণিলতা, রাজ-অশোক, পারিজাত, কর্পূর, সৌরভী, হৈমন্তী, যষ্টিমধু, বনপুলক, পেয়ালি, সেঁউতি, তারাঝরা, সাইকাস, মাধবী ইত্যাদি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এছাড়া আছে রাজা প্রসন্ননাথের অবক্ষমূর্তি, জমিদার দয়ারামের ভাস্কর্য, চারটি কামান, কুমার ভবন, তহশিল অফিস ও অতিথিশালা।
 
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
নাটোর জেলা শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তরা গণভবন বর্তমানে উত্তরবঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর স্থানীয় কার্যালয় এবং বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই উত্তরা গণভবন পরিদর্শন করতে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়।
 
উত্তরা গণভবন পরিদর্শনের সময়সূচি
গ্রীষ্মকালে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উত্তরা গণভবন দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। তবে শীতকালে ৫টায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সপ্তাহের প্রতি রবিবার উত্তরা গণভবন বন্ধ থাকে। গণভবনের আঙিনায় প্রবেশ করতে ২০ টাকা মুল্যের টিকেট ক্রয় করতে হয়। প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন–নেজারত ডেপুটি কালেক্টর, নাটোর – 0771-66652, 01762-692122।
 
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে নাটোর যাওয়া যায়। নাটোর বাস স্টপ কিংবা রেলস্টেশন থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উত্তরা গণভবন যেতে মাত্র ১৫ মিনিট লাগে অথবা নাটোরের যেকোনও জায়গা থেকে উত্তরা গণভবনে যাওয়ার পর্যাপ্ত রিক্সা বা অটোরিক্সা পাবেন। নাটোরের মাদ্রাসা মোড় থেকে উত্তরা গণভবন যেতে ৩০ টাকা রিকশা ভাড়া লাগে।
 
বাসে ঢাকা থেকে নাটোর
ঢাকা থেকে নাটোর যাওয়ার বেশকিছু বাস সার্ভিস রয়েছে। এর মধ্যে গ্রীণ লাইন, হানিফ, দেশ, শ্যামলি এবং ন্যাশনাল পরিবহন উল্লেখযোগ্য। এসব পরিবহনের বাসগুলো নিয়মিতভাবে ঢাকার কল্যানপুর ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে নাটোরের উদ্দেশে যাত্রা করে। বাসভেদে জনপ্রতি টিকেটের মূল্য নন-এসি ৩৮০ টাকা এবং এসি ৬০০ টাকা।
 
ট্রেনে ঢাকা থেকে নাটোর
ঢাকা থেকে সাধারণত রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাটগামী রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো নাটোর স্টেশনে যাত্রা বিরতি দিয়ে গন্তব্যের পথে এগিয়ে যায়। তাই সময় জেনে এসব ট্রেনে সহজেই নাটোর যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে জনপ্রতি ট্রেনের টিকেটের ভাড়া শোভন: ২৬৫ টাকা, শোভন চেয়ার ৩১৫ টাকা, স্নিগ্ধা ৫২৫ টাকা, এসি ৬৩০ টাকা এবং এসি বার্থ ৯৪০টাকা।
 
যেখানে থাকবেন
নাটোরে মোটামুটি মানের কতগুলো আবাসিক হোটেল ও বোর্ডিং রয়েছে। হোটেল ভি.আই.পি (0771-66097, 01718-673735) এবং হোটেল রুখসানায় (0771-62431, 01739-987017) সিংগেল কেবিন ২৫০ থেকে ৩০০ ও ডাবল কেবিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়ায় রাত্রি যাপন করতে পারবেন। এছাড়া যোগাযোগ করতে পারেন সার্কিট হাউস নাটোর (0771-66932), নাটোর সদর ডাক বাংলো, হোটেল প্রিন্স (0771-61356, 01746-029429), নাটোর বোর্ডিং (0771-62001), হোটেল রাজ (0771-66660, 01727-371500) কিংবা হোটেল মিল্লাতে।
 
যেখানে খাবেন
উদরপূর্তির জন্য নাটোরে বেশকিছু বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। নিজের পছন্দমতো যেকোনও রেস্টুরেন্টে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার খেতে পারবেন। কম খরচে খাওয়ার জন্য ইসলামিয়া পঁচুর হোটেলের বেশ সুনাম রয়েছে। এছাড়া রেলস্টেশনের কাছে নয়ন হোটেলের খাবারও বেশ ভালো। সমগ্র বাংলাদেশে চলনবিল এবং রানী ভবানী সুস্বাদু মাছের সুনাম ছড়িয়ে আছে। তাই নাটোর ভ্রমণকালে মাছ খাওয়ার এ সুযোগ মিস করা মোটেও ঠিক হবে না। সাথে নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা খেয়ে সঙ্গে করে নিয়েও আসতে পারেন।
 

নাটোরে আর যা দেখতে পারেন
•    রাণী ভবানী রাজবাড়ী
•    পুঠিয়া রাজবাড়ি
•    চিনির মিল
•    চলনবিল