ঢাকা, ২৩ নভেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৩৬

নিজেকে কর্মক্ষম করার সেরা ১০ উপায়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:৩৯ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিমিত খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম, মনকে শান্ত রাখা, অর্থের যথোপযুক্ত ব্যবহার এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে তেমনটা হয়ে উঠে না। আজ এমনই কিছু উপায় নিয়ে লিখবো যেগুলো খুব সহজেই আপনাকে করে তুলবে আরো কার্যক্ষম। চলুন জানা যাক...

 

নিজেকে সুস্থ ও সুখী রাখুন

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কাজের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে নিজের শরীরের সুস্থতা এবং মানসিক প্রশান্তির কথা ভুলে যান। নিয়মিত খাবার না খাওয়া সহ ব্যায়াম এবং বিশ্রামের মতো  সবচাইতে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর প্রতি অবহেলা করে থাকেন। কিন্তু আপনি যদি একটি  কাজের প্রতি পুরোপুরি মনোযোগী হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সুস্থ থাকতে হবে। আপনি যত বেশি শারীরিক এবং মানসিকভাবে সবল থাকবেন, প্রয়োজনীয় কাজগুলোতে মস্তিষ্ক তত বেশি কাজ করবে। 

 

নিজের প্রতি এবং নিজের কাজের প্রতি ইতিবাচক থাকুন

কাজের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়ার জন্য  বহুল প্রচলিত উপদেশটি হচ্ছে, “ইতিবাচক থাকুন এবং ইতিবাচক চিন্তা করুন। ইতিবাচক ফলাফলগুলো আপনাআপনি আসতে থাকবে।” একটি কাজের প্রতি আপনি যত বেশি ইতিবাচক হবেন, কাজটিতে তত বেশি লেগে থাকার চেষ্টাটা আপনার থাকবে। আর যত বেশি লেগে থাকবেন, তত বেশি ইতিবাচক ফলাফল আসবে।

 

প্রতিদিনের কাজের তালিকা তৈরি করুন

সকালে ঘুম থেকে উঠেই সারাদিনের অসংখ্য কাজ করার ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকি। এতশত কাজ, কিন্তু কোনটি রেখে কোনটি করবো তা নিয়ে ঝামেলায় পড়ে যাই। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রত্যেকের উচিত ঘুমানোর আগে পরেরদিনের কাজের একটি লিস্ট করে রাখা। বিশেষ করে অনিয়মিত যেসব কাজ করা হয় সেগুলো যেন ছোট কাগজে লিখে রাখা হয়। আর অবশ্যই লিস্টে গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলোর অগ্রাধিকার দিতে হবে। কাজের লিস্টটা এমন একটা জায়গায় আটকে রাখুন যাতে করে ঘুম থেকে উঠার পরেই সেটি চোখে পড়ে।

 

দিনের নির্দিষ্ট কাজ শেষ করার প্রতি মনোযোগী হোন

প্রতিদিন এমন একটি কাজ  করুন যেটি ঐদিনেই শেষ করা যাবে। কাজটি ছোট  কিংবা বড় হতে পারে। এমনও হতে পারে ঐ কাজটি আপনার বড় কোনো প্রকল্পের নির্দিষ্ট একটি অংশ।  কিন্তু কাজটি যেন প্রয়োজনীয় হয় সে দিকেও খেয়াল রাখুন। এতে করে আপনার বৃহৎ বৃহৎ লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য আপনাকে আরো বেশি কার্যক্ষম করে তুলবে। আর আপনি যখন  প্রতিদিন লক্ষ্য নির্ধারণ করে একটি করে কাজ শেষ করে ফেলবেন। সপ্তাহ কিংবা মাস শেষে দেখবেন আপনি অনেকগুলো কাজ গুছিয়ে ফেলেছেন।

 

কাজের সময় ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস শব্দহীন রাখুন

বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে মোবাইল, কম্পিউটারসহ এসব ইলেকট্রিকাল ডিভাইসগুলোর ই-মেইল, ফেসবুক এর মতো সেবাগুলো আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে কর্পোরেট জীবন পর্যন্ত এদের বিস্তর প্রভাব রয়েছে। আজকাল আমরা এসবের বাইরে নিজেদের চিন্তাও করতে পারি না। কিন্তু এ সেবাগুলোই বিভিন্ন সময় আমাদের কার্যক্রমগুলোতে বাঁধা প্রদান করে থাকে।

 

বিশেষ করে আপনি যখন কোনো কাজে মনোযোগী হবেন, তখন ই-মেইল, মেসেজের নোটিফিকেশন কিংবা ফোন কলের মতো সেবাগুলোও আপনার মনোযোগ ভঙ্গ করতে সক্ষম। তাই একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ডিভাইসগুলোকে শব্দহীন অবস্থায় রাখুন। এতে করে পূর্ণ মনযোগের সাথে নিজের কাজগুলো সম্পাদন করতে পারবেন।

 

না বলতে শিখুন

না’ বলাটা একটি বৈধ প্রতিক্রিয়া। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই এই ছোট শব্দটি বলতে দ্বিধা বোধ করে। ধরুন, কেউ আপনাকে একটি কাজ করার জন্য বললো কিংবা কোথাও যাওয়ার ব্যাপারে অনুরোধ করলো। কিন্তু ঐ কাজটিতে আপনার বিন্দু মাত্র আগ্রহ নেই। তা স্বত্ত্বেও কাজটি করতে যাওয়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত বলে আপনি মনে করেন? এমনকি আপনার নিজেকেও এমন কিছু করার ব্যাপারে না করুন, যেটি আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময়ের অপচয় করবে।ৱ

 

করণীয় কাজটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখুন

আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত নিজেকে আরো বেশি কার্যক্ষম করে তুলে পারবেন না, যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনার করণীয় কাজের ব্যাপারে সঠিক ধারণা রাখবেন। এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। ধরুন, আপনি একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।

 

কিন্তু প্রকল্পটি কিভাবে অগ্রসর হবে, শুরুটা কিভাবে হবে, এটি সম্পন্ন করতে কি কি লাগতে পারে, কত সময় ধরে কাজ করতে হবে, সম্ভাব্য ফলাফল কি আশা করছেন। এইসব ব্যাপারগুলো  সম্পর্কে যদি সঠিক ধারণা না থাকে তাহলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে আপনি আটকে যেতে পারেন। তাই কাজটি শুরু করার আগে এর সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিন। 

 

ভুল ও ব্যর্থতা থেকে শিখুন

উদ্যোক্তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত, ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্র‍্যানসন ভুলগুলোকে আলিঙ্গন করে, তাদের কাছ থেকে শিখতে উৎসাহ দিয়েছেন। সেজন্য দুঃখ প্রকাশ না করে এগিয়ে যেতে বলেছেন। তিনি বলেন, “Don’t be embarrassed by your failures, learn from them and start again.”

 

শুধু রিচার্ড ব্র‍্যানসন না, পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেক সফল ব্যক্তির একই গল্প। আপনি যদি দৈনন্দিন কাজগুলোতে ভুল করে বসেন। একটি প্রকল্প হাতে নিয়েও যদি তাতে ব্যর্থ হন। তাহলে এতে বিমূঢ় হওয়ার কিছু নেই। ব্যর্থ হয়ে যত বেশি মন খারাপ করে বসে থাকবে, ভুলগুলোর জন্য যত বেশি নিজেকে দোষী করবেন, আপনার কার্যক্ষমতা তত বেশি হ্রাস পাবে। সময় অপচয় হবে এবং একটা সময় সঠিক পথ থেকে ছিটকে যাবেন। তাই ব্যর্থতাগুলোর জন্য মন খারাপ না করে সেখান থেকে শিখুন এবং সঠিক ধারণা নিয়ে এগিয়ে যান।

 

পড়ুন, পড়ুন ও পড়ুন

প্রত্যেক সপ্তাহে নির্দিষ্ট একটি বই শেষ করার চেষ্টা করুন; ফিকশন কিংবা নন-ফিকশন। নিজের কাজের সাথে মিলতে হবে ব্যাপারটা তেমন না। কিন্তু আপনি যত বেশি পড়বেন তত বেশি আপনার মস্তিষ্ক খুলে যাবে। নতুন নতুন আইডিয়া মাথায় খেলা করবে। যেগুলো খুব সহজেই বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে পারবেন।

 

নিজেকে পুরস্কৃত করুন

ছোট, বড় যেকোনো কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর নিজেকে তার জন্য কিছু একটা উপহার দিন। সেটা এককাপ কফিও হতে পারে। এতে করে নিজের প্রতি নিজের আত্মবিশ্বাস দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। এটি অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করবে। যার কারণে পরবর্তী প্রকল্পগুলোকে ত্বরান্বিত করার জন্য আরো বেশি উৎসাহ পাবেন।