ঢাকা, ০৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ২১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৫২৫

পরিচ্ছন্ন মাঠে দুরন্ত শৈশব

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১০:২৮ ২৪ জুন ২০১৯  

শিশুরা বেড়ে উঠবে। এই বেড়ে ওঠা শুধু শারীরিক দিক দিয়েই নয়, এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে মানসিক বিকাশও। ভবিষ্যৎ সুনাগরিক হিসেবে যথাযথভাবে গড়ে তোলার জন্য শিশুকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র, অভিভাবক ও সমাজ সবারই দায়িত্ব রয়েছে। এজন্য দরকার তার মানসিক বিকাশ। আর এই মানসিক বিকাশের জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে খেলাধুলা।
কথা হচ্ছে, শহরগুলোয় খেলাধুলার ব্যবস্থা কোথায়? উন্মুক্ত পরিবেশে খোলা মাঠে যে খেলাধুলা শিশুর বিকাশে সহায়ক, তা অনুপস্থিত। নেই মাঠ, নেই পর্যাপ্ত অনুষঙ্গ। জন্মের পর থেকে ফ্ল্যাটের মধ্যে বেড়ে উঠতে গিয়ে শিশুদের মানসিক বিকাশের পর্যাপ্ত অনুষঙ্গ প্রায় অনুপস্থিত থেকে যায়। তাই শিশুরা ঘরের মেঝে ও বাড়ির ছাদকে বানিয়ে নিয়েছে খেলার মাঠ। কেউ বুদ হয়ে থাকে কম্পিউটার মনিটর বা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে। কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন গেমস আর টেলিভিশনের কার্টুন কেড়ে নিচ্ছে খোলা পরিবেশে বেড়ে ওঠার মানসিক বিকাশের সুযোগ। যদিও জাতিসংঘের শিশু সনদে বলা হয়েছে, শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ রক্ষা ও সৃষ্টি করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। জাতীয় শিশুনীতি ও শিক্ষানীতিতেও শিশুর বিকাশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। অথচ বাস্তবে হচ্ছে উল্টোটা। সুযোগ সৃষ্টি তো হচ্ছেই না; যেটুকু সুযোগ আছে, তাও রক্ষা করা যাচ্ছে না। না আছে খেলাধুলা বা শরীরচর্চার সুযোগ, না আছে মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ। বিদ্যা অর্জন বা বিকশিত হওয়ার জন্য সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন দুটিই জরুরি। এজন্য দরকার উম্মুক্ত পরিবেশে খেলাধুলার সুযোগ।
মাঠে খেলাধুলা হবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু পর্যাপ্ত মাঠ কোথায়? ঢাকা শহরে মানুষের তুলনায় খেলার উপযোগী মাঠ নেই বললেই চলে। শহরজুড়ে শুধু বিল্ডিং। এখানে খেলার মাঠ নেই। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের আগে যেসব ভালো খেলার মাঠ ছিল সেগুলোও আর এখন নেই। আমাদের সন্তানদের জন্য খেলাধুলার উপযোগী স্থান তো দূরের কথা, হাঁটা-চলার জন্যও তেমন ভালো জায়গা মেলে না। আর যে কয়েকটি খেলার মাঠ রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সবকটির যথাযথ পরিবেশ নেই। পরিচ্ছন্নতার অভাবে সেগুলো পরিবেশ হারিয়েছে। তবে আশার কথা,
সরকারি-বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান খেলার মাঠের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে। সম্প্রতি এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছে ‘ডেটল হারপিক পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ’ ক্যাম্পেইন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিককে সঙ্গে নিয়ে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ ক্যাম্পেইন রাজধানীর বিভিন্ন মাঠের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। শহরের মাঠগুলোকে পরিচ্ছন্ন করে খেলাধুলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনলে হয়তো শৈশবের দুরন্তপনা আবারও দৃশ্যমান হবে।
মোহাম্মদ রফিক বলেন, আসলে মাঠ নিয়ে এর আগে অনেকবার আন্দোলন হয়েছে। কিছু মাঠ দখল হয়ে আছে। অনেক মাঠ পরিচ্ছন্নতার অভাবে খেলার উপযোগিতা হারিয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বে যেভাবে নিজেকে প্রমাণ করেছে, সেই জায়গা ধরে রাখতে এবং আরও এগিয়ে যেতে ভালো ও খেলার উপযোগী মাঠের কোনো বিকল্প নেই। তাই আমাদের সবার উচিত হবে মাঠগুলোকে খেলার উপযোগী করতে এগিয়ে আসা। মাঠগুলোকে পরিচ্ছন্ন করার পাশপাশি এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

জিলফুল মুরাদ

শিশু বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর