ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪৮১

পাক-ভারত যুদ্ধে বন্ধ বাংলাদেশ-ভারতের রেলরুট ফের চালু হবে

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৫৪ ১৬ অক্টোবর ২০১৯  

১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেল যোগাযোগ। ওই সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া রেল রুটগুলো ফের চালু করা হবে। জানালেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা-কুড়িগ্রাম-ঢাকা রুটে প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন চালু এবং রংপুর এক্সপ্রেস ও লালমনিরহাট এক্সপ্রেসের র‍্যাক প্রতিস্থাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা জানালেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন যেটা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, উত্তরবঙ্গে যে সমস্ত রেল যোগাযোগগুলো বন্ধ ছিল সেগুলো যেমন আমরা চালু করেছি। আর ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হওয়ার পর যে সমস্ত লিংকগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তখনকার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে, সেই লিংকগুলো আবার আমরা চালু করে দিতে চাচ্ছি।

এই লাইনগুলো ফের চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশ রেলওয়ে আরও লাভবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

দীর্ঘদিন ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকার পর ২০০৮ সালে ঢাকা- কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং ২০১৭ সালে খুলনা-কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল শুরু হয়।

এছাড়া দুই দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ বাড়াতে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি, আখাউড়া-আগরতলাসহ কয়েকটি রুট পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে অনেক রেল ও রেললাইন বন্ধ করে দেয়। এটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছিল। রেলকে উন্নত করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নেই।

পাশাপাশি যে সব এলাকায় রেল যোগাযোগ ছিল না, সে সব জায়গাও রেল যোগাযোগ স্থাপন করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ বঙ্গসহ সারা বাংলাদেশই রেল যোগাযোগের আওতয় নিয়ে আসা হবে।

দ্রুতগতির রেল চালুরও পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেটা একেবারে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল, যেটা লাভজনক ছিল না বলে যারা এটাকে বন্ধ করতে চেয়েছিল, আমরা আজকে তদেরকে দেখাতে চাই যে, রেলকে লাভজনক করা যেতে পারে। উন্নত করা যেতে পারে।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী সবুজ পতাকা নেড়ে, বাঁশি বাজিয়ে নতুন ট্রেনের উদ্বোধন করেন। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু বৃহস্পতিবার।

শেখ হাসিনা বলেন, কুড়িগ্রামকে আমরা সব সময়ই গুরুত্ব দেই। কারণ কুড়িগ্রাম, রংপুর বা ওই অঞ্চলটাই ছিল দুর্ভিক্ষপীড়িত একটা এলাকা। এই কুড়িগ্রাম বলতে গেলে প্রায় প্রতি বছর সেখানে দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকত। যোগযোগ ব্যবস্থা এত দুর্গম ছিল যে, সেটা চিন্তাও করা যায় না।

রেলের জন্য কুড়িগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির কথা উল্লেখ করে সে দাবি পূরণে নিজের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, দুর্ভিক্ষপীড়িত ওই অঞ্চলের উন্নয়ন এবং যোগাযোগ বৃদ্ধির সব উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, কুড়িগ্রামে আমরা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিতে পারি। আর লালমনিরহাটে আমরা ভিন্ন ধরনের একটি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। সেটা হচ্ছে অ্যারোস্পেস অ্যান্ড এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়।
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস

ভিডিও কনফারেন্সের গুরুতেই গণভবনে ’কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস’ এবং রেল সেক্টরের উন্নয়ন নিয়ে একটি উপস্থাপনা দেন রেল সচিব মোফাজ্জেল হোসেন।

তিনি জানান, ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের মধ্যে প্রথম আন্তঃনগর কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস আটটি স্টেশনে থামবে। কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন থেকে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ছেড়ে বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে। কমলাপুর স্টেশন থেকে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে কুড়িগ্রাম স্টেশনে পৌঁছাবে।

ট্রেনটি বুধবার চলাচল করবে না। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে শোভন চেয়ার ৫১০ টাকা, স্নিগ্ধা চেয়ার ৯৭২ টাকা, এসি প্রতি আসন ১১৬৮ টাকা এবং এসি বাথ ১৮০৪ টাকা।

সচিব বলেন, প্রতিদিন এক হাজার ৩০৬ জন যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। ট্রেনটি থেকে বছরে ২৫ কোটি টাকা আয় করতে পারবে রেলওয়ে।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।

ভিডিও কনফারেন্সে কুড়িগ্রাম প্রান্ত থেকে বক্তব্য রাখেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।