ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৮৮৫

পান-সুপারি-জর্দায় ভয়ংকর ক্যানসার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৩৫ ২৩ জানুয়ারি ২০২১  

অনেকেই জানেন, পান–সুপারি–জর্দার কারণে মুখের ভেতরের বিভিন্ন অংশে ক্যানসার হতে পারে। তাদের এমনও ধারণা আছে, তাড়াতাড়ি ধরা পড়লে এই ক্যানসার সেরে যায়। কিন্তু সত্যিই কি তাই? 


ভারতীয় ক্যানসার বিশেষজ্ঞ মধুছন্দা কর বলছেন, সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে, এই নেশার ফলে হওয়া ক্যানসার শুধু মুখের ভেতরে সীমাবদ্ধ থাকে না, মুখ–গলা–খাদ্যনালী সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আর এই ক্যানসাগুলো আরও মারাত্মক। এদের কোনও প্রি–ক্যানসার স্টেজও হয় না।


কিন্তু সমস্যা হলো বিপদ বুঝেও মানুষ অনেক সময় এই মারাত্মক নেশা ছাড়তে পারেন না। বিশেষ করে পানের সঙ্গে খয়ের, চুন, সুপারি খেলে ভয়াবহ বিপদ। সেই সঙ্গে জর্দা খেলে তো কথায় নেই। সময় যত গড়ায়, এগুলোর নেশা তত জাঁকিয়ে বসে।

 

সারা পৃথিবীতেই এই নেশার প্রচলন রয়েছে।  চা–কফি, সিগারেট, মদের পরই এই নেশার স্থান। এর ফলে শুধু ক্যানসার নয়, আরও কিছু মারাত্মক বিপদের আশঙ্কা থাকে। অধিকাংশ মানুষ সেই খবর জানেন না। তাই চিকিৎসা চলার সময়ও নেশা ছাড়েন না। ফলে চিকিৎসায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। বিপদ বাড়ে।

 

নেশা ও ফল

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেল্থের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সুপারি–জর্দার মিশ্রণ শরীরে গিয়ে উদ্দীপকের কাজ করে। অল্প করে খেলে ক্যাফেইন ও নিকোটিনের সমতূল্য উদ্দীপনা হয়। আর মাত্রা বেড়ে গেলে, তা হয়ে যায় কোকেনের সমতূল্য। 


ভারতীয় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নিয়মিত মাত্রাছাড়া নেশা চালিয়ে গেলে হৃৎস্পন্দন এলেমেলো হয়ে গিয়ে কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া নামে জটিল সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে। তাতে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।


এখানেই শেষ নয়। এই নেশার ফলে মস্তিষ্কের কিছু কাজকর্মের গতিপথ বদলে যেতে পারে। মুখে বেশি থুতু তৈরি হয়, চোখে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়, ঘাম বেশি হয়, মল–মূত্র ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়, কথায় কথায় ডায়েরিয়া ও বমি লেগে থাকতে পারে।

 

এসব কাণ্ড–কারখানার কারণেই বিজ্ঞানীরা একে মাদকের তকমা দিয়ে দিয়েছেন। অন্য মাদকের মতো এ থেকে ‘ইউফোরিয়া’ও হয়। অর্থাৎ অহেতুক আনন্দ হয়, উত্তেজনা বেড়ে যায়। অতিরিক্ত সচেতনও হয়ে যান কেউ কেউ। না খেলে হয় সমস্যা দেখা দেয়। ফলে আরও বেশি করে নেশার দিকে ঝুঁকে পড়েন মানুষ।