ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২১৮

পানি সংকট নিরসনে ভারতে নয়া কৌশল

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:২৫ ১৯ আগস্ট ২০২২  

ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ের ব্যস্ত সড়ক থেকে ১২০ মাইল দূরে কেরাওয়াদি গ্রাম। যেখানে বাস করেন ছায়া বিদূষী। গ্রামটির বাসিন্দাদের জীবনযাপন পুরো পৃথিবী থেকে ভিন্ন। নদী থেকে পানি আনতে দিনের ৪ ঘণ্টা চলে যায় তাদের। প্রতিদিন দুইবার (বিকেল ও সন্ধ্যা) নদীতে যান তারা। 

 

ছায়া বিদূষী বলেন, গ্রীষ্মে প্রখর রোদ। পানি আনতে গিয়ে অনেকে জ্ঞান হারান। আমার মাথা, হাত ও পিঠ ব্যথা হয়। বয়স্কদের জন্য তা আরও কঠিন। 

 

পানি সংকটের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে এভাবে জীবন ক্ষয় করতে চাচ্ছেন না তরুণীরা। তারা ক্লান্তি বোধ করেন। গ্রামের কাউকে বিয়ে করতে অনাগ্রহী ওরা। 

 

তিনি বলেন, আমাদের গ্রামে বহু পুরুষ আছেন। তারা বিয়ে করতে পারছেন না। এজন্য দায়ী পানি সংকট।

 

গ্রামীণ ভারতে এমন ঘটনা অহরহ। সম্প্রতি কিছুটা অগ্রগতি ঘটলেও প্রায় অর্ধেক বসতবাড়িতে পানির অভাব রয়েছে। কৃষিক্ষেত ও শিল্প-কারখানায়ও বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। 

 

এনআইটিআই আয়োগকে পরামর্শ দেয়া অভিনাস মিসরা বলেন, ভারতে পানির উৎসগুলো সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে না। ফলে এ সংকট চলছে।


ভারতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা অতিরিক্ত মাত্রায় বাড়ছে। এতে মাটির নিচের পানির স্তর আরও পড়ে যাচ্ছে। 


ভালো উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে এ সমস্যার একটা সমাধান বের করা যেতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় জলবিজ্ঞান প্রকল্প (এনএইচপি) বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছে ভারতের জলশক্তি মন্ত্রণালয়।

 

১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝিতে এ রকম দুটি পরিকল্পনা ছিল। এখন তৃতীয় প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে রয়েছে সরকার। আগামী ২০২৪ সালের মার্চে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।

 

এরই মধ্যে ভারতের বিভিন্ন লেক, নদী ও জলাধারে ৬ হাজার সেনসর বসানো হয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানি শনাক্ত করতে বসিয়েছে আরও ১ হাজার ৬০০ সেনসর। আর সবটির সঙ্গে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের সংযোগ করা হয়েছে। যাতে পানির স্তর, আবহাওয়ার অবস্থা, আর্দ্রতা, বায়ুর চাপ ও বৃষ্টিপাত নিয়ে রিয়েল-টাইম উপাত্ত পাঠাতে পারে।

 

একটি কেন্দ্রীয় ওয়েবভিত্তিক ব্যবস্থায় এসব উপাত্ত জমা থাকবে। যে কেউ ইচ্ছা করলে তা ব্যবহার করতে পারবে। এ সংক্রান্ত সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। 

 

এতে নীতিরির্ধারকেরা সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। অর্থাৎ এর মধ্য দিয়ে পানি সংকট নিরসনে ভারতীয় সরকার প্রযুক্তিনির্ভর কার্যকর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।

 

পানি সংরক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহে প্রযুক্তিনির্ভর এসব জাতীয় প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ শেষ হয়েছে। শিগগিরই ফল পেতে শুরু করবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ব বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর