ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২২৮

পুষ্টির লেশ নেই মিনিকেট-নাজিরশাইলে

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:৫৩ ২৪ জানুয়ারি ২০২৪  

অতিরিক্ত ছাঁটাই করে বানানো চিকন চাল মিনিকেট ও নাজিরশাইলে পুষ্টির টিকি না মিললেও বেড়েছে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করার পরিমাণ। বিজ্ঞান সাময়িকী ফুডে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। যদিও মাত্র ১০ শতাংশ ছাঁটাই করলেই ব্রি উদ্ভাবিত জাতের চালে জিংক, আয়রন, প্রোটিন ভিটামিনসহ সবই মিলছে।  

 

জনপ্রিয়তা থাকায় মিলে ছাঁটাই করে মোটা চালকে বানানো হচ্ছে চিকন। এতে শুধু চালের সর্বনাশ হচ্ছে না, হচ্ছে ভোক্তারও। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এক গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। 

 

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিআর ১১, ব্রিধান ২৮, ব্রিধান ২৯  ব্রিধান ৪৯ এবং ব্রিধান ৮৪ এর জিংক ও আয়রন নিয়ে গবেষণা করে প্রতিষ্ঠান দুটি। ফুড জার্নালে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে উঠে আসে ভয়াভয় চিত্র। দেখা যায়, এই জাতগুলোর চালে যে পরিমাণ জিংক সাধারণত থাকে, সেটার ৩৯ শতাংশই হাওয়া হয়েছে ছাঁটাইয়ের কারণে। আর আয়রন কমেছে ২১ শতাংশ পরয্ন্ত। ফলে এসব চাল যারা খাচ্ছেন, তাদের শরীরে শুধুই শর্করা ঢুকছে। 

 

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মো. হাবিবুল বারি বলেন, চাল বেশি পোলিশ করলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। এতে ৩০ শতাংশ জিংক কমে যায়। আমরা সেই উপাদান সমৃদ্ধ ধান উদ্ভাবন করেছি। কিন্তু ক্রেতা পর্যায়ে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে না। কারণ, সেসব চালের চাকচিক্যের কাছে এটি হেরে যাচ্ছে।

 

ভাতের মাধ্যমে পুষ্টি নিশ্চিতে যখন পুষ্টিসমৃদ্ধ ১৩টি ধানের জাত উদ্ভাবন করছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। তখন চালের অতিরিক্ত ছাঁটাই আত্মঘাতী বলছেন সংস্থাটির শীর্ষ কর্তা। 

 

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন,  ১০ শতাংশ পর্যন্ত চাল পোলিশ করা যেতে পারে। এর বেশি করলেই ক্ষতি। একটি কুচক্রী মহল সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমাদের প্রধান খাদ্য ভাত। এতে পুষ্টি উপাদানগুলো ঢোকাতে পারলে সাধারণ মানুষের সহজেই পুষ্টির চাহিদা মিটবে। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।

 

তিনি আরো বলেন, দেশে বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ হলেও সেগুলোকে কাটাই ছাঁটাই করে মিনিকেট অথবা নাজিশাইল হিসেবে বাজারে বিক্রি করেন মিল মালিকরা। সেটা বন্ধ করা জরুরি। 


বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বলেন, ধানের নামের চালের নামকরণ করতে হবে। অন্যথায় আমরা পুষ্টিসমৃদ্ধ যে ধান উদ্ভাবন করেছি, সেটির সুফল জনগণ পাবে না। তার দাবি, ভোক্তারা স্বাস্থ্য সচেতন না হলে কোনোভাবেই চালের অতিরিক্ত ছাঁটাই বন্ধ করা সম্ভব নয়।