ঢাকা, ০৮ সেপ্টেম্বর রোববার, ২০২৪ || ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
good-food
১১১

প্রতিদিন গরুর মাংস খাওয়ার প্রভাব

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:১৪ ২৬ জুন ২০২৪  

কাঁচা অবস্থায় লাল থাকে- যেকারণে গরু, খাসি, ভেড়া বা ছাগলের মাংস’কে বলা হয় ‘রেডি মিট’। প্রোটিন, লৌহ ও ভিটামিন বি-টুয়েল্ভ’য়ের প্রাণিজ উৎস হল এই ধরনের মাংস। তবে অতিরিক্ত গ্রহণের সমস্যাও আছে।

 

পুষ্টি উপাদান

ওয়েবএমডি ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয় রান্নার পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে গরুর মাংসের পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ পরিবর্তন ঘটতে পারে। গড়ে ৭ গ্রাম মাংস থেকে সাধারণত যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান মিলবে তা হলো- ২৬৫ ক্যালরি। ২১ গ্রাম প্রোটিন। ১৯ গ্রাম চর্বি। শূন্য পরিমাণ কার্বোহাইড্রেইটস। শূন্য পরিমাণ আঁশ। শূন্য পরিমাণ চিনি বা শর্করা।

 

১০০ গ্রামের একটু বেশি পরিমাণ মাংস থেকে লৌহের দৈনিক চাহিদার ১২ শতাংশ পূরণ করা যায়। এছাড়া অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ হিসেবে মিলবে- ফসফরাস, ভিটামিন বি-থ্রি, ভিটামিন বি-সিক্স, ভিটামিন বি-টুয়েল্ভ এবং জিংক।অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। তেমনি ‘রেড মিট’ বা লাল মাংস দৈনিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারলেও অতিরিক্ত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগতে হতে পারে। যেহেতু এতে কোনো আঁশ নেই। তাই এই ধরনের মাংসের সাথে বেশি করে সবজি খাওয়ার পরামর্শ দেয় পুষ্টিবিদেরা। এছাড়াও রয়েছে নানান প্রভাব।

 

প্রোটিনের চাহিদা পূরণ

“লাল মাংস প্রোটিনের উৎকৃষ্ঠ উৎস”- ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা নিবাসী পুষ্টিবিদ সারাহ গারোনি। তিনি জানান- দেহে দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা হল ৫০ গ্রাম। আর ৮৫ গ্রাম লাল মাংস থেকে মিলবে ২৬ গ্রাম প্রোটিন।

 

কোলেস্টেরল বাড়বে

খারাপ বা ‘এলডিএল’ এবং ভালো বা ‘এইচডিএল’- দুই ধরনের কোলেস্টেরলই হৃদস্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব রাখে। এই মোমের মতো পিচ্ছিল উপাদান ধমনিতে জমে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। যা থেকে স্ট্রোক এবং হৃদরোগের সৃষ্টি হয়। আর লাল মাংস এলডিএল বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি’র করা এক গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, প্রতিদিন অতিরিক্ত ৫০ গ্রাম প্রক্রিয়াজাত ‘রেড মিট’ খেলে হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে ১৮ শতাংশ। আর অপ্রক্রিয়াজাত করা অবস্থায় খেলে বাড়ে ৯ শতাংশ।

 

টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে

মনে হতে পারে ‘কার্ব’ গ্রহণের প্রভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। তবে লাল মাংসে থাকা প্রোটিনও এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। ‘নিউট্রিয়েন্স’ সাময়িকীতে ২০১৪ সালে প্রকাশিত ‘দি জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের করা গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়- প্রতিনিয়ত মাংস খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কারণ ‘রেড মিট’ দেহের ওজন বাড়ায়, প্রদাহের মাত্রা বৃদ্ধি করে। আর এসবই ডায়াবেটিস হওয়ার প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

 

শক্তিশালী বোধ করা

ভিটামিন বি-টুয়েল্ভ এবং লৌহের উৎকৃষ্ট উৎস লাল মাংস। দুই পুষ্টি উপাদান দেহে শক্তি সরবরাতে ভূমিকা রাখে। এসবের অভাবে দুর্বলতা দেখা দেয়, ক্লান্তি বোধ হয়।

 

পায়ুপথে ক্যান্সার

অতিরিক্ত লাল মাংস খাওয়ার কারণে ‘কোলোরেক্টাল’ ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইস্তাম্বুল ইউনিভার্সিটি’র ‘মেডিকেল অনকোলজি, ইন্সটিটিউট অফ অনকোলজি’ বিভাগের করা গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়- গরু, ভেড়া ও শূকরের মাংস বেশি গ্রহণ করলে অন্ত্রের অসুস্থতার মাত্রা বাড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার’ লাল মাংস’কে, মানব দেহের জন্য ক্যান্সার তৈরির উপাদান ‘কার্সিনোজনিক’ শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত করেছে।

 

পেটভরা অনুভূতি

প্রোটিন-ধর্মী খাবার যে দীর্ঘক্ষণ পেটভরা অনুভূতি দেয়- সেটা এখন প্রায় সবারই জানা। তাই দৈনিক খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের অন্যতম উৎস ‘রেড মিট’ রাখলে সারাদিনে খাওয়ার পরিমাণ কমে। যে কারণে স্বাস্থ্যকর ওজন রাখা যায়।পুষ্টিবিদ সারাহ গারোনি বলেন, “তবে ওই যে মনে রাখতে হবে- অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। আর সাথে রাখতে হবে শাকসবজি।”