প্রবাসীদের কষ্টকর প্রবাসজীবন
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ১২:০১ ৪ আগস্ট ২০২২

২০১৮ সালের ১৯ জুলাই হজ পালনের জন্য সস্ত্রীক মক্কার উদ্দেশে যাত্রা করি। মক্কায় আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল ক্লক টাওয়ারের পাশে রিতাজ হোটেলে। এই হোটেলে আমরা ১৮ দিন ছিলাম। ভালোই ছিলাম এই হোটেলে। কাবার একদম কাছাকাছি, যেতে আসতে ৫ মিনিটের বেশি সময় লাগতো না।
আমরা এক রুমে ওপরে নিচে ৬ জন থাকতাম। আমাদের মোয়াল্লেমর পক্ষ থেকে প্যাকেটে করে দুপুর ও রাতের খাবার সরবরাহ করা হতো। যে খাবার দেয়া হতো তা একজনের জন্য বলতে গেলে বেশিই ছিল। তাই প্রথম কয়েক বেলা আমাদের অনেকের খাবার অপচয় হতো। এটা ছিল আমার ও আমার স্ত্রীর জন্য একটি কষ্টকর ব্যাপার। খাবার অপচয় গুনাহর কাজ। আমরা উদ্বৃত্ত খাবার সদ্ব্যবহারের উপায় খুঁজছিলাম। আল্লাহ আমাদের সে ব্যবস্থা করে দিলেন।
আমরা হোটেলে উঠার পরদিন দেখলাম ৪ থেকে ৫ জন বাঙালি যুবক বারান্দায় ঘুরাঘুরি করছে। জিজ্ঞেস করলাম- আপনারা কি করেন এই হোটেলে। জানলাম- ওরা সবাই রুমবয়। একদিন ওদের রুমে ডেকে এনে গল্প জুড়ে দিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল ওদের প্রবাস জীবন সম্পর্কে একটা পরিপূর্ণ ধারণা নেয়া। বাড়ি-ঘর, জায়গাজমি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা ধার-কর্জ করে এরা বিদেশে এসে কত টাকা উপার্জন করে, কোথায় থাকে, কীভাবে জীবনযাপন করে, কতদিন অন্তর দেশে যেতে পারে, দেশে কীভাবে বা কত টাকা পাঠাতে পারে - এসব বিষয়ে পরিপূর্ণ একটি ধারণা এদের সাথে আলাপ করে এবং পরবর্তী সময়ে মদিনায় গিয়েও প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের সাথে আলাপ করে আমি জেনে গেলাম।
আপনারা শুনে অবাক হবেন- ব্যাতিক্রম ছাড়া বেশিরভাগ প্রবাসীর জীবনে লুকিয়ে আছে এক একটি করুণ কাহিনী। এসব করুণ কাহিনী বর্ণনা করার নয়, অনুভব করার বিষয়। ওরা ওখানে ভালো নেই। অনেক কষ্টে আছে।
মদিনার হোটেলে কর্মরত এক প্রবাসীর করুণ হৃদয় বিদারক কষ্টের কথা শুনে আমার চোখে পানি চলে এসেছিল। আমরা যেদিন মক্কায় ফিরছিলাম- সে যুবক বলেছিলেন, স্যার আমাকে অল্প হলেও কিছু টাকা দিয়ে যাবেন। আমার অনেক উপকার হবে। বাড়ি যেতে পারি না বহু বছর টিকিটের টাকার অভাবে। দেশে স্ত্রী এক ছেলে ও মা আছেন।
আমি টাকা না পাঠালে তাঁদের উপোস করতে হয়। এই হোটেলে কাজ করে আমি যা উপার্জন করি তাতে আমার নিজের চলতেই কষ্ট হয়। টাকা বাঁচানোর জন্য আমি প্রায় উপোস করি বা কম খাই। তার কষ্টের কাহিনী শুনে সেদিন আমার ভীষণ কষ্ট হয়েছিল, কোনো কিছুতেই মন বসাতে পারছিলাম না। কী আশা ও স্বপ্ন নিয়ে এরা বিদেশে আসে, আর এখানে এসে তারা কী মানবেতর জীবনযাপন করে। দেশে বসে ক'জন এসব ভাবে বা ভাবতে পারে!
অথচ এ মানুষগুলো যখন দেশে আসে তখন তাদের কতো অবজ্ঞা, কতো অবহেলা, কতো লাঞ্চনা-গঞ্জনা সইতে হয়। এদের যথাযোগ্য সম্মান জানানো হয় না। আমরা শুধু এদের কাছে রেমিট্যান্স চাই, এদের ন্যায্য প্রাপ্য সুযোগসুবিধা বা স্বাচ্ছন্দটুকু দেয়ার কথাটা ভাবি না। আমরা কতো নির্লজ্জ স্বার্থপর জাতি।
ফিরে আসি মক্কার প্রবাসী যুবকদের কাহিনীতে। ওদের অবস্থাও মোটামুটি একই রকম। দুয়েকজনের অবস্থা ভীষণ করুণ। আমার স্ত্রী একদিন আমাকে বলল- আমাদের উদ্বৃত্ত খাবারগুলো ফেলে না দিয়ে আমরা এগুলো এই যুবকদের দিতে পারি না? ওদের ভাষ্য মতে ওরা সচ্ছল নয়, নগন্য পরিমাণ বেতন পায়, যা বেতন পায় প্রায় সবটাই দেশে পাঠাতে হয়। অতি কষ্টে ওদের দিন কাটে। কথাটা আমার পছন্দ হলো। কিন্তু বলি কি করে! যদি এই প্রস্তাবকে ওরা খারাপভাবে নেয়? যদি আত্মসম্মানে লাগে! আমার বিশ্বাস ছিল হয়ত খারাপভাবে নেবে না।
প্রতিদিন ওরা রুমে আসতেন, কাজ করতেন এবং এতে করে ওদের সাথে আমাদের একটি নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাঁরা আমাদের যথেষ্ট সম্মান ও শ্রদ্ধা করতেন, যখন তখন খোঁজ-খবর নিতেন, কিছু লাগবে কি না জিজ্ঞেস করতেন। একদিন এক যুবককে গোপনে প্রস্তাবটি দিলাম। ওর চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে গেল। ও বলল- তাহলে তো স্যার ভালোই হয়।
এতগুলো খাবার পেলে আমাদের দুপুর ও রাতের খাবারের সংস্থান হয়ে যাবে। আমাদের অনেক টাকা বেঁচে যাবে। তারপর থেকে আমি প্রতিদিন সবার কাছ থেকে উদ্বৃত্ত খাবার জমিয়ে রাখতাম, ওদের একজন এসে কোনো এক সময় খাবারগুলো নিয়ে যেত। পুরো আঠার দিন আমরা ওদের এভাবে খাবার সরবরাহ করেছি। এটা যে আমাদের জন্য কীরকম স্বস্তি ও আনন্দের ব্যাপার ছিল তা হয়ত আমি কাউকে বোঝাতে পারব না। বিদায় নেওয়ার দিন আমাদের মনটা খারাপ হয়ে গেল।
ভাবছিলাম- আমার সামর্থ্য ও ক্ষমতা থাকলে এসব হতভাগ্য প্রবাসীদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করার জন্য বড় কিছু একটা করতাম। ওই মূহুর্তে যা করতে পেরেছি তা হলো আমি ওদের সাথে অন্তরঙ্গভাবে কোলাকুলি করছি, মন খুলে দোয়া করেছি, একটু চোখের পানি ফেলেছি, প্রত্যেকের হাতে কিছু টাকাও গুঁজে দিয়েছি। দেখলাম - ওদের সবার মন খারাপ এবং চোখে পানি।
লেখক: অধ্যাপক ড. মুনিরুদ্দিন আহমেদ
সাবেক ডিন, ফার্মেসি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
- গরমে শরীর-মন চাঙা রাখে যেসব ফল
- ১২৫ বছর পর অলিম্পিকে ক্রিকেট
- লন্ডনের বুকে শাহরুখ-কাজলের মূর্তি
- ৫২ বছরে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন ইউপি সদস্য
- পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে ১,৩৩০ জনের চাকরি
- মানুষ বলছে আপনারা আরো ৫ বছর থাকেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- জন্মের প্রথম কয়েক বছরের স্মৃতি মনে রাখতে পারি না কেন?
- ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে: ইসি আনোয়ারুল
- বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত
- চীন বাদে সব দেশের ওপর নতুন শুল্ক স্থগিত করলেন ট্রাম্প
- নাসার সঙ্গে চুক্তি, আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা জোটে ঢুকলো বাংলাদেশ
- প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাদ, থাকছে না পোষ্যও
- যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল
- বেঙ্গল গ্রুপ ও আরটিভির চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম গ্রেপ্তার
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে যেসব খাবার
- হোটেলে লঙ্কাকাণ্ড, মালাইকার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
- পাকিস্তানে উড়াল দিলেন লিটন-রিশাদ
- চোখের যত্নে ৫ গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- সালমান মুক্তাদির ও নাসির হোসেনকে নিয়ে প্রভার পোস্ট, যা আছে
- টাইগারদের দায়িত্ব পেলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের কোচ
- বিভিন্ন স্থানে কেএফসি-বাটায় ভাঙচুর ও লুট
- ঢাকায় মার্কিন নাগরিকদের চলাচলে সর্তকতা জারি
- ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষিকা বরখাস্ত
- ম্যাচের আগে কেন কলা খান খেলোয়াড়েরা?
- ওষুধ ছাড়াই কমবে ফ্যাটি লিভার, মেনে চলুন ৪ টোটকা
- বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা সৌদির
- রাজধানীতে ডেঙ্গুর চোখরাঙানি, কিউলেক্সের যন্ত্রণা
- বাতায়নে তথ্য হালনাগাদ না করলে সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতি নয়
- বাধ্যতামূলক ছুটিতে ইসলামী ব্যাংকের এমডি
- ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ: বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে বিপর্যয়
- ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ: বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে বিপর্যয়
- পরীমণির বিরুদ্ধে থানায় জিডি
- মোদির সাথে বৈঠকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইলেন ড. ইউনুস
- পেঙ্গুইন দ্বীপেও শুল্কারোপ করলেন ট্রাম্প
- ওষুধ ছাড়াই কমবে ফ্যাটি লিভার, মেনে চলুন ৪ টোটকা
- ম্যাচের আগে কেন কলা খান খেলোয়াড়েরা?
- রাজধানীতে ডেঙ্গুর চোখরাঙানি, কিউলেক্সের যন্ত্রণা
- সালমান মুক্তাদির ও নাসির হোসেনকে নিয়ে প্রভার পোস্ট, যা আছে
- যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল
- জন্মের প্রথম কয়েক বছরের স্মৃতি মনে রাখতে পারি না কেন?
- চোখের যত্নে ৫ গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- টাইগারদের দায়িত্ব পেলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের কোচ
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে যেসব খাবার
- ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষিকা বরখাস্ত
- বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা সৌদির
- হোটেলে লঙ্কাকাণ্ড, মালাইকার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
- বাধ্যতামূলক ছুটিতে ইসলামী ব্যাংকের এমডি
- ঢাকায় মার্কিন নাগরিকদের চলাচলে সর্তকতা জারি
- বাতায়নে তথ্য হালনাগাদ না করলে সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতি নয়
- বিভিন্ন স্থানে কেএফসি-বাটায় ভাঙচুর ও লুট