ঢাকা, ০৮ সেপ্টেম্বর রোববার, ২০২৪ || ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
good-food
৮৬

প্রশ্নফাঁস : আবেদ আলীর গুরু কে, জানা গেল

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:১৮ ১৮ জুলাই ২০২৪  

গাড়িচালক আবেদ আলীই প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলহোতা নন, তারও গুরু আছেন। তিনি হলেন, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক সদস্য দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। জানা গেছে,  ‘হাওয়া ভবন’র ঘনিষ্ঠ ও আশীর্বাদপুষ্ট ছিলেন মাহফুজুর। তার হাত ধরেই প্রশ্নফাঁস চক্রের হোতা হিসেবে আবেদ আলী আবির্ভূত হন। 

 

বিএনপি-জামায়াত জোটের সময়ে সিন্ডিকেট গড়েন মাহফুজ। ২৪তম বিসিএসে বিষয়টি ব্যাপকতা পেয়েছিল। সুযোগ নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রশ্ন বাণিজ্য গড়েন তারা। শীর্ষ রাজনীতিবিদরাও সেই টাকায় ভাগ পেতেন। হাওয়া ভবনেই টাকা ভাগাভাগি হতো। কারা চাকরি পাবেন, তা-ও নির্ধারণ করা হতো। পরে তালিকা অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়ার পর তাদের চাকরি দিতো পিএসসি। 

 

তবে ওয়ান ইলেভেনে অর্থাৎ ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীন নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ধরা খান মাহফুজ। দুদকের প্রকাশিত ৫০ জন সন্দেহভাজন 'দুর্নীতিবাজের' তালিকাতেও তার নাম ছিল। অভিযোগ উঠে, বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় ঘুষ গ্রহণসহ পরীক্ষায় অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন তিনি। এরপর ২০০৯ সালে মাহফুজকে ১৩ বছরের সাজা দেয় ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালত। তিনি আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারেও পাঠায় আদালত। 

 

সম্প্রতি ফের আলোচনায় এসেছেন সেই মাহফুজুর রহমান। আদালতে আবেদ আলীও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মাহফুজের নাম বলেছেন। আদালতে প্রায় সব কিছুই জানিয়েছেন আবেদ আলী। কারা কারা জড়িত তা-ও বলেছেন। অর্থের ভাগবাটোয়ারা, চাকরিপ্রাপ্তদের নামও বলেছেন। আবেদ জানিয়েছেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় পিএসসিতে প্রশ্নফাঁস শুরু হয়। আর ২৪তম বিসিএসে এটা জেঁকে বসে। পরে ২৫তম বিসিএসে তা ধরা পড়ে। এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন মাহফুজ। আবেদ আলীর নেতৃত্বে টিমটি তৈরি করা হয়। মাঠ লেভেলে কাজ করতেন তারা।

 

হাওয়া ভবনে প্রায়ই বসতেন মাহফুজ। গডফাদারদের সঙ্গে চলাফেরা ছিল তার। গুলশানে বাড়ির পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ‘ভিন্ন জগত’ নামে রিসোর্ট ছিল। চাকরি পেয়ে মাহফুজকে অর্থ দিত তারা, ওই দুই জায়গায় রেখে পড়ানো হতো প্রশ্নপত্র। বিশেষ জায়গাতেও পরীক্ষা নেওয়া হতো। এমনকি পছন্দের পরীক্ষকও থাকতেন। ফলাফলে মাহফুজের লোকেরাই সর্বোচ্চ নম্বর পেত।

 

এভাবেই হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়ে নেন মাহফুজুর রহমান । দলীয় নেতাদের পাঠানো তালিকাতে চাকরি দিতে হতো, সেখান থেকে অর্থও আসতো। হাওয়া ভবনে প্রথমে মোটা অঙ্কের টাকা যেতো। বাকি টাকাটা মাহফুজ ও আবেদ আলী চক্র পেতো। এরপর জামিনে ছাড়া পেয়ে দেশের বাইরে চলে যান মাহফুজুর রহমান।

অপরাধ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর