ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪৩২

প্লেগ মহামারীতে ধনীরা আরো ধনী হয়েছিল

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৫:৩৮ ৩ জুলাই ২০২০  

প্লেগ বা ব্ল্যাক ডেথে যখন ইউরোপের এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা স্রেফ নাই হয়ে গিয়েছিল সেই সময় মহাদেশটির সম্পদ গিয়ে জমা হয়েছিল ক্ষুদ্র একটি গ্রুপের হাতে। অর্থাৎ জনসংখ্যার যে নগণ্য অংশটি আগে থেকেই ধনী ছিল মহামারীকালীন ও পরবর্তীতে তারা আরো বেশি সম্পদের মালিক হয়ে উঠেছিল। এই কভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীতেও কি সেই ব্ল্যাক ডেথের পুনরাবৃত্তি ঘটবে? 

এই প্রশ্নটি কিন্তু শুরু থেকেই উঠছে। যখন দেখা গেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে শুরু হলো লকডাউন, বন্ধ হয়ে গেল ব্যবসা-বাণিজ্য, ভ্রমণসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক তৎপরতা, সেই সময় চাঙ্গা হয়ে উঠলো ই-কমার্স ব্যবসা। অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো অর্ডার সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছিল। সে পরিস্থিতির এখনো খুব একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এরকম আরো কিছু বিশেষ ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য কিন্তু করোনাকালে অবিশ্বাস্যরকম চাঙ্গা হয়েছে।

১৩৪৮ সালের জুনে ইংল্যান্ডে প্রথম প্লেগ আঘাত হানে। মূলত মধ্যএশিয়া থেকে সেনা এবং বণিকদের মাধ্যমেই এই রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ইউরোপে প্রবেশ কর।

ব্ল্যাক ডেথের প্রাদুর্ভাবে ইউরোপ ও নিকট প্রাচ্যের প্রায় এক তৃতীয়াংশ থেকে অর্ধেক জনসংখ্যা মারা যায়। এই বিপুল প্রাণহানির পাশাপাশি অর্থনীতিতেও ধস নামে। কারণ শ্রমশক্তির এক তৃতীয়াংশ তখন মৃত, বিশেষ করে কৃষিখাত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। এমনকি ইংল্যান্ডের দশটির একটি গ্রাম পুরোপুরি বিরানভূমিতে পরিণত হয়। এসব গ্রাম আর কখনোই আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। 

ব্ল্যাক ডেথে আক্রান্তদের ৮০ শতাংশই মারা গেছেন। এই মহামারীর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নিয়ে পরে অনেকেই গল্প উপন্যাস কবিতা লিখেছেন। স্কটিশ গল্পকথক জন অব ফরডান লিখেছেন, সবাই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছিল, তবে বিশেষ করে মধ্যবিত্ত আর গরিব নিম্নশ্রেণির লোকেরাই বড়লোকদের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। এটা এমন এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির তৈরি করে যে সন্তানরা মৃত্যুপথযাত্রী বাবা-মাকে ত্যাগ করতো আর বাবা-মায়েরা আক্রান্ত সন্তানদের কাছে যেত না। এটিকে কুষ্ঠ বা ভয়ঙ্কর বিষধর সাপের মতোই এড়িয়ে চলতো মানুষ।

এখনকার করোনা মহামারীর সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায় এই গল্প।

ফিচার বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর