ফিরে এলো একুশ, কোন পথে বাংলা ভাষা
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ২১:৩৩ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১
বাঙালির জাতীয় জীবনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি বড় অধ্যায়জুড়ে রয়েছে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষায় বাংলার অকুতোভয় দামাল ছেলেরা আপন বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখাতে শেখায়। অমর একুশে তাই আমাদের জাতীয় জীবনে বেদনাবিধুর একটি দিন।
প্রতিবছর এ দিন শোকাবহ স্মৃতি ও চেতনার ধারাকে বহন করে আমাদের মাঝে ফিরে আসে। জাতীয় চেতনার বিকাশ ঘটার ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গৌরবদীপ্ত ঐতিহাসিক দিন। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের মাতৃভাষা দিবস নয়। প্রতিবছর সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে।
কিন্তু শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও সফিকদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা আমরা আদৌ কি রাখতে পেরেছি? দিতে পেরেছি কি ভাষা শহীদদের যথার্থ সম্মান? অথচ ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। ভাষাই আমাদের ভিত্তি। কিন্তু ভাষার মর্যাদা যেভাবে দেওয়ার কথা ছিল সেভাবে আমরা দিতে পারিনি।
স্বাধীন বাংলার উর্বর ভূমিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা ইংরেজি স্কুলের ছেলে-মেয়েরা শুধু ইংরেজি ভাষাটা শেখার জন্য নিজের ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য সবকিছু উৎসর্গ করছে। আজকের আধুনিক সমাজের অধিকাংশ ছেলেমেয়ে বাংলা ঠিকমতো বোঝেই না। তারা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানে না ও জানার চেষ্টাও করছে না।
অথচ নতুন প্রজন্মকে নিজের শিকড় জানতে হবে আগে। এ প্রসঙ্গে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন- ‘আগে চাই বাংলা ভাষার গাঁথুনি তারপর ইংরেজি শেখার পত্তন।’ ভুল শিক্ষা পদ্ধতির কারণে দেশে আজ নানারকম শিক্ষাব্যবস্থা চালু রয়েছে। শুধু তাই নয় আমাদের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেও রয়েছে ভিন্নতা ও সমন্বয়হীনতা।
অথচ আমাদের প্রয়োজন ছিল একরৈখিক বা একমুখী শিক্ষা পদ্ধতি। শিক্ষা ব্যবস্থার এই মারাত্মক ত্রুটির কারণে শহীদদের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মাতৃভাষার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ছাত্রছাত্রীরা জানছে না। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত বাজানো হয় না। জাতীয় পতাকা উত্তোলণ সঠিকভাবে হচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে না সহশিক্ষা কার্যক্রমের সাথে। ভাড়াবাড়ি ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণে তা সম্ভবও হচ্ছে না।
ফলে কোমলমতি ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হচ্ছে দেশমাতৃকার প্রকৃত ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জ্ঞানার্জন থেকে। ইংরেজি আমাদের জানা প্রয়োজন, তবে অবশ্যই বাংলাকে বাদ দিয়ে নয়। আবার দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বাঙালির সঠিক ইতিহাস, সংস্কৃতি, সাহিত্য, সংস্কার আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ তথা বাঙালির শেকড়ের সন্ধান দিতে না পারায় ছাত্র-ছাত্রীরা বিপথগামী হচ্ছে ভয়ানকভাবে।
সম্প্রতি মুক্তচিন্তার লেখক, গবেষক ও প্রকাশক দীপন ও অভিজিৎ হত্যার বিচারের রায় হয়েছে। এজন্য সরকারকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। কিন্তু এরূপ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত , খোঁজ নিলে দেখা যাবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তারা হয় কোনও ইংরেজি স্কুলের মেধাবী ছাত্র নয়তো মাদ্রাসার ছাত্র।
এখন মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা জিহাদী মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করার মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত হচ্ছে। অভিজিৎ, অনন্ত, নিলয়, বাবু, রাজীব, দীপন, সামাদ, জুলহাস, তনয় হত্যাকাণ্ড এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শুধু তাই নয় সঠিক শিক্ষার দিক নির্দেশনা ও পরিবেশ না পাওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাং এর মতো ভয়ানক সংগঠনের সাথে।
তাই সময় এসেছে বাঙালির প্রকৃত ইতিহাস ঐতিহ্য তথা সংস্কৃতিকে ছেলেমেয়েদের মাঝে গ্রোথিত ও লালন করার সুযোগ করে দেওয়ার। এ দায়িত্ব শুধু সরকারের একার নয়, আমাদের সবাইকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। নতুন প্রজন্ম তথা জাতি যখন বাঙালির প্রকৃত ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আত্মত্যাগের গুরুত্ব ও তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারবে, তখনই তাদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত হবে।
দেশের প্রতি সৃষ্টি হবে ভালোবাসা, স্নেহ, মায়া ও মমতার। দেশমাতৃকার প্রতি এরূপ ভালোবাসা সৃষ্টি হলে পরপারে ভাষা শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। আরও উল্লেখ্য, বাংলা ভাষার চর্চা ও সর্বত্র এর ব্যবহার আমরা আইন তৈরি করেও বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তাহলে আমাদের বুঝতে হবে আইন দিয়ে বাংলা ভাষার ব্যবহার, চর্চা ও গবেষণা সম্ভব নয়।
দরকার হলো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ ও সবার একান্ত আন্তরিকতা। ২১ শে ফেব্রুয়ারি যেমন আন্তর্জাতিক রূপ পেয়েছে, ঠিক তেমনি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে।
এক্ষেত্রে মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, বাংলা একাডেমি, এশিয়াটিক সোসাইটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা গবেষকগণ বৈপ্লবিক ভূমিকা রাখতে পারেন। আমাদের অনুবাদ সাহিত্যকে বিশ্বমানের ও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নেওয়া যেতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে একটি ভালো বই বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনুবাদ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হচ্ছে না।
বাংলা সাহিত্যের অতুজ্জ্বল নক্ষত্র কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ, গান যদি অন্য ভাষায় অনুদিত হয়, তবে সারা বিশ্বের মানুষ তাকে চিনবে। একাধিক ভাষায় অনুদিত হওয়ায় যেমনটি চিনেছে বিশ্ববাসী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ‘লালসালু’ উপন্যাস। কাজেই আমাদের বসে থাকলে চলবে না বাংলা ভাষার সাহিত্য রস বিশ্বের পরতে পরতে ছড়িয়ে দিতে হলে সবাইকে অত্যন্ত সাহসের সাথে কাজ করতে হবে। তবেই ২১ শে ফেব্রুয়ারি সার্থক হবে, সার্থক হবে শহীদদের নিঃস্বার্থ আত্মদান।
লেখক-মোহা. জালাল উদ্দীন
সহকারী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ,
উত্তরা কমার্স কলেজ।
- আনিসুল-ফারুক খানসহ ৯ জন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার
- ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে, আশা টবি ক্যাডম্যানের
- সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে আবারো কড়াকড়ি
- শিবিরের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে যা বললেন পূজা চেরি
- যে কারণে নারীকে প্রতিদিন একটি ডিম খেতে হবে
- ইতিহাস গড়ে সাকিব-মালিঙ্গা-সাউদির রেকর্ডে ভাগ বসালেন শাহিন আফ্রিদি
- সিরিয়ায় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হামলা চালালো ইসরায়েল
- শেখ হাসিনা-রেহানার ব্যাংক হিসাব তলব
- অর্থপাচার মামলায় তারেক রহমানের সাজা স্থগিত
- মাশরাফি ও তার বাবাসহ ২৯৫ জনের নামে মামলা
- এখন থেকে ‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান নয়
- এবার দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে আরএসএস সমর্থকদের বিক্ষোভ
- শীতে প্রতিদিন খেজুর গুড় খাওয়ার যত উপকারিতা
- জামিন পেলেন শমী কায়সার
- বাবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা তরুণীকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ
- অভিনয় ছেড়ে উপস্থাপনায় জায়েদ খান
- বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় ভারত: বিক্রম মিশ্র
- বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম
- দিল্লি থেকে দূতাবাস ঢাকায় স্থানান্তর করুন: প্রধান উপদেষ্টা
- গোলান মালভূমির নিয়ন্ত্রণ নিলো ইসরাইল : দামেস্কে লুটপাট
- মানুষ সঙ্গীকে ধোঁকা কেন দেয়?
- জুলাই-আগস্ট ইস্যুতে চাঁদাবাজি করলে ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার
- শিগগিরই একসঙ্গে আমির শাহরুখ ও সালমান
- রাশিয়ায় আসাদের আশ্রয় নেওয়ার বিষয়ে যা বললেন বাইডেন
- কেন বলে কামড় দিয়েছিলেন, এক যুগ পর মুখ খুললেন আফ্রিদি
- উঠেছে নতুন ধান তবুও বাড়ছে দাম, নেপথ্যে কারা
- ২০২৫ সালেই জাতীয় নির্বাচন হতে পারে-ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
- বাংলাদেশ হাইকমিশন অভিমুখে আরএসএসের কর্মসূচি ঘোষণা
- দ্বিতীয় বিয়ে করলেন অভিনেত্রী তানজিকা
- শীতে মধু-রসুন একসঙ্গে খাবেন যেসব কারণে
- ২০২৫ সালেই জাতীয় নির্বাচন হতে পারে-ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
- নাক বন্ধ থাকলে মুখ দিয়ে শ্বাস নিচ্ছেন, কিন্তু সাবধান
- শীতে মধু-রসুন একসঙ্গে খাবেন যেসব কারণে
- সেই ১৩৪ কোটি টাকা কার, মুখ খুললেন মুন্নী সাহা
- পাকিস্তানকে উড়িয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ
- বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের শিগগির সরাসরি ফ্লাইট চালু
- শত পার্থক্য থাকলেও আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য: ড. ইউনূস
- ‘রোনালদো ইসলাম ধর্ম গ্রহণে আগ্রহী’
- অগ্রিম টিকিটেই বাজিমাত আল্লু অর্জুনের পুষ্পা-২, বিশাল আয়ের আভাস
- দ্বিতীয় বিয়ে করলেন অভিনেত্রী তানজিকা
- শিগগিরই মানুষকে ‘ধরে ফেলবে’ কোয়ান্টাম প্রযুক্তির রোবট
- শেখ হাসিনা আবারো রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত
- শসার বীজে এত গুণ
- যে বার্তা নিয়ে বাংলাদেশে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
- মানুষ সঙ্গীকে ধোঁকা কেন দেয়?
- বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম
- ডেঙ্গু শনাক্তে ‘এনএস১ এলাইজা’ বেশি নির্ভরযোগ্য: গবেষণা
- বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় ভারত: বিক্রম মিশ্র
- ভারতে বন্যাকে বয়কটের ডাক
- সিরিয়ায় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হামলা চালালো ইসরায়েল