ঢাকা, ১৩ এপ্রিল রোববার, ২০২৫ || ৩০ চৈত্র ১৪৩১
good-food
৪১

ফুটবলের নতুন ক্রেজ হামজা চৌধুরীকে কতটা জানেন?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:১৮ ২০ মার্চ ২০২৫  

হামজা চৌধুরীর নাম এখন সবার মুখে মুখে। ইতোমধ্যে টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছেন তিনি। তাকে নিয়ে উন্মাদনার শেষ নেই ফুটবলপ্রেমীদের। লাল-সবুজের জার্সিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংলিশ ফুটবলারকে উন্মুখ তারা। শিগগিরই তাদের প্রতীক্ষার প্রহরও শেষ হতে যাচ্ছে। আগামী ২৫ মার্চ মেঘালয়ের শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সিতে প্রথমবার নামবেন দেশের ফুটবলের হালের ক্রেজ। এর আগে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জেগেছে, এই নতুন সেনসেশন আসলে কে? তাকে কতটাই বা জানেন সবাই?

 

১৯৯৭ সালের ১ অক্টোবর ইংল্যান্ডের লেস্টারশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন হামজা। জন্মগতভাবে বাংলাদেশি মা ও গ্রেনাডীয় বাবার সন্তান তিনি। ঐতিহ্যবাহী বাঙালি মুসলিম পরিবারে মা ও সৎ বাবার কোলে বেড়ে ওঠেন। শৈশব থেকেই বাংলাদেশ সফর করছেন। তার মায়ের পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের হবিগঞ্জের বাহুবলে। সৎ বাবাও বাঙালি। স্বাচ্ছন্দ্যে সিলেটি ভাষায় কথা বলতে পারেন হামজা। 

 

হামজা একজন সুন্নি মুসলিম এবং সান্ধ্য মাদ্রাসায় পড়তেন। ম্যাচের জন্য চেঞ্জিং রুম থেকে বের হওয়ার আগে কুরআনের কিছু অংশ পাঠ করেন। ২০১৯ সালের এপ্রিলে ঐতিহাসিক এক টুইটের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন। পরে তাকে অসদাচরণের জন্য অভিযুক্ত এবং ৫,০০০ ইউরো জরিমানা করা হয়। হামজা ও তার স্ত্রীর ঘরে তিন সন্তান রয়েছে। 

 

ব্রিটিশ ক্লাব লেস্টার সিটির একাডেমিতে ২০১১–১২ মৌসুমে খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেন হামজা। মাত্র ১৬ বছর বয়সে শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি ইউরোপিয়ান ক্লাবের নজরে আসেন। ২০১৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি লিগ ওয়ান ক্লাব বার্টন আলবিয়নে ধারে খেলার চুক্তিতে যোগ দেন। একই দিনে ব্রিটিশ ফুটবল লিগে আত্মপ্রকাশ করেন। বার্টন আলবিয়নে ২ মৌসুম অতিবাহিত করেন। সেখানে ২৬ ম্যাচ খেলেন।

 

২০১৬ সালের ৬ আগস্ট আবারও বার্টন আলবিয়নের সঙ্গে ২০১৬-১৭ মৌসুমের জন্য ধারে খেলার চুক্তি করেন হামজা। ওই দিনই প্রথমবারের মতো ফুটবল লিগ চ্যাম্পিয়নশিপে মাঠে নামেন। ২০১৭–১৮ মৌসুমে পুনরায় লেস্টার সিটিতে যোগদান করেন। ২০১৭ সালের ১৯ মার্চ সিটির হয়ে অভিষেক হয় ইএফএল কাপের তৃতীয় রাউন্ডে লিভারপুলের বিপক্ষে। ২০২২–২৩ মৌসুমে ধারে ওয়াটফোর্ডে যোগদান করেন।
 

২০১৮ সালের ২৬ মে তোলুন টুর্নামেন্টে চীন অনূর্ধ্ব-২১ এর বিরুদ্ধে ২-১ তে জয়ের প্রধান কারিগর ছিলেন হামজা। এর মাধ্যমে ইংল্যান্ড জাতীয় অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০১৯ সালের ২৭ মে তাকে উয়েফা ইউরোপীয় অনূর্ধ্ব-২১ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ইংল্যান্ডের ২৩ সদস্যের দলে রাখা হয়। পরে ফ্রান্সের বিপক্ষে বেপরোয়া ট্যাকলের জন্য লাল কার্ড দেখানো হয়।

 

২০১৯ সালের অক্টোবরে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার স্বপ্নের কথা জানান হামজা। তবে ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমে জানা যায়, ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে যোগদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ২০২৪ সালের ২৩ আগস্ট বাংলাদেশি পাসপোর্ট পান তিনি। ২৪ সেপ্টেম্বর ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাকে অনাপত্তিপত্র দেয়। সেই সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার অনুমতি দেয়।

 

প্রচলিত স্কোরিং পজিশনের খেলোয়াড় নন হামজা। তাকে মূলত অর্কাস্ট্রেটর ঘরানার ফুটবলার বলা যেতে পারে। মাঝমাঠে বল ডিস্ট্রিবিউশন, নিয়ন্ত্রণ কিংবা ডিফেন্সচেরা থ্রু পাসিং তার সবচেয়ে বড় শক্তি। সবমিলিয়ে প্লেয়িং স্টাইল ইতালিয়ান কিংবদন্তি আন্দ্রেয়া পিরলোর মতো। তবে এই পজিশনে লাল-সবুজ শিবিরে বেগ পেতে হবে তাকে। অতীতে লেস্টার সিটির হয়ে তা করে দেখাতে পারেননি। ফলে রক্ষণাত্মক ঘরানার হামজাকে লং বলের ওপরেই নির্ভর করতে হবে।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর