ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৩৬১

বগুড়ার পশ্চিম এলাকায় ধানের জমিতে চাষ হচ্ছে সবজি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৮:২৫ ১৪ মার্চ ২০১৯  

রিপন দাস, বগুড়া : বগুড়ার পশ্চিম এলাকার চাষীরা এখন বোরো ও আমনের পরিবর্তে সবজি চাষে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। এক শ্রেণির মধ্যস্বত্ত্ব ভোগীদের কারণেই মূলত এ লোকশান গুণতে হচ্ছে চাষীদের।
তবে কৃষি বিভাগের হিসাব অনুসারে বলা হয়েছে, সবজি চাষ হলেও এখন কৃষকরা আউশ ধান চাষ করছে। এর ফলে ধানের যে মোট উৎপাদন সেটি ঠিক আছে। অর্থ্যাৎ লোকশান হলেও সরকারী প্রণোদনা থাকায় সে ক্ষতি চাষিরা পোষিয়ে নিচ্ছেন আউস ধান চাষ করে।
পরিবারের নিজস্ব চাহিদা পূরণের জন্য মূলত এসব এলাকায় সবজি চাষ করা হতো। পশ্চিম বগুড়ার নন্দীগ্রামসহ প্রায় ছয় উপজেলায় কয়েক বছর আগেও আমন আর বোরো চাষে লোকশান গুণতে হতো চাষীদের। এর হাত থেকে রক্ষা পেতে চাষিরা এখন ধান ক্ষেতে সবজি আর মশলা চাষ করছে। চাষিরা জানান, আমন আর বোরো ধানের পরিবর্তে সবজি আর মশলা চাষে যেমন সমস্যা হয় না, তেমনি লাভও হয় ভালো।
শাজাহানপুর এলাকার চাষী জালাল উদ্দিন বলেন, সবজি চাষে খরচ কম কিন্তু লাভ বেশি।  আগে সাড়া বছরই প্রায় ধান চাষ করতাম কিন্তু তাতে ধান বিক্রি করে তেমন লাভ হতো না। তবে এখন ধানের পাশাপাশি সবজি চাষ করে আমার লাভ বেশি হয়।      
এ ছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, পশ্চিম বগুড়ার কাহালু, নন্দীগ্রাম, শেরপুর, দুপচাঁচিয়া ও আদমদিঘীতে কয়েক বছর আগেও প্রায় সাড়ে ৬ লাখ বিঘা জমির পুরোটাতেই চাষ হতো ধান। কিন্তু এখন ধান চাষযোগ্য প্রায় ২২ হাজার বিঘা জমিতে বোরো আর আমনের পরিবর্তে সবজি আর মশলা চাষ হচ্ছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বগুড়ার পশ্চিম এলাকা কাহালু, নন্দীগ্রাম এসব এলাকায় মূলত এক সময় ধান চাষই হতো। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ধান উৎপাদন করে তারা খুব বেশি লাভবান হতে পারছে না। এতে চাষীরা আবাদ ছেড়ে দিচ্ছে না দিলেও তারা এখানে বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ কিছুটা কমিয়ে সেখানে তারা সবজি চাষ করছে। এতে একদিকে যেমন ফলন বেশি পাচ্ছে ঠিক তেমনিভাবে মূল্যও বেশি পাচ্ছে। কৃষকেরা আউশ চাষ বাড়িয়েছে কাজেই ধানের যে মোট উৎপাদন সেটা ঠিক আছে। কিন্তু ধান চাষে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের কারণেই ধানের ন্যায্য মূল্য তারা পায় না। মানুষ এখন এসবের হাত থেকে বাঁচার জন্যে সবজি চাষের দিকে যাচ্ছে।
তবে তিনি আরো জানান, সবজি চাষে লাভ বেশি হওয়ায় সবাই প্রায় সবজির দিকে চলে যাচ্ছে। তবে ধানের যে চাহিদা সেটা কিন্তু ঠিক আছে। আগে আউশ চাষ হতো না এখন চাষ হচ্ছে এর ফলে মোট ধানের আবাদ ঠিক আছে। ফলে ধান চাষে কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি বরং বেড়েই চলেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রাথমিক হিসাবে বলা হয়েছে প্রতি বছর আমন ও বোরো চাষ কমছে গড়ে প্রায় ৪ হাজার বিঘা জমিতে।