ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৭ পৌষ ১৪৩১
good-food
৭৯

বঙ্গভবন এলাকা থমথমে, নিরাপত্তা বাড়াতে কাঁটাতারের বেড়া

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:৩৭ ২৩ অক্টোবর ২০২৪  

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ উত্তেজনার পর বঙ্গভবনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেখানে কোনো আন্দোলনকারীকে জড়ো হতে দেখা যায়নি। তবে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনা সদস্যদের সতর্ক অবস্থানের মধ্যে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে পুরো এলাকায়।

 

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শাহরিয়ার আলী বলেন, “বঙ্গভবন এলাকায় এখন আন্দোলনকারীদের কোনো অবস্থান নেই। তবে গতকালের পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের ডেপ্লয়মেন্ট বাড়ানো হয়েছে।"

 

বঙ্গভবনের সামনে কয়েক ধাপে ব্যারিকেডসহ বসানো হয়েছে কাঁটা তারের বেড়া। সেখানে সেনা সদস্যের পাশাপাশি পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

 

উপ-কমিশনার শাহরিয়ার আলী বলেন, "যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমাদের ব্যপক প্রস্তুতি রয়েছে।"

 

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বঙ্গভবনের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা পদত্যাগ করার জন্য রাষ্ট্রপতিকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে এ সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

 

সন্ধ্যার পরপর বঙ্গভবনের সামনের অবস্থান ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় পুলিশ লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাদের সরানোর চেষ্টা করে। এ সময় অন্তত তিন জন আহত হন।

 

পরে পুলিশের ওপর চড়াও হয় আন্দোলনকারীরা। তারা পুলিশের একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে। গাড়িতে উঠে পুলিশকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতেও দেখা যায়। রাত পৌনে ১০টার দিকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে একদল বিক্ষোভকারী বঙ্গভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে তাদের আবার সংঘাত হয়। পরে আন্দোলনকারীরা ইট পাটকেল ছোড়াছুড়ি করলে পুলিশ দৈনিক বাংলা মোড়ের দিকে সরে যায়।

 

সে সময় সেনাবাহিনীর একটি দলকে বেশ কিছু সাঁজোয়া যানসহ পাহারায় থাকতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে সেখানে যান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। পরে সেখানে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান বজায় রাখা নিয়ে দুটি পক্ষ তৈরি হয়ে যায়। হাসনাত ও সারজিস আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে দুই দিন সময় চেয়ে তাদেরকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন।

 

এরপর রাত পৌনে ১২টার দিকে একটি পক্ষ সেই এলাকা ত্যাগ করলেও আরেকটি পক্ষ রাতের মধ্যেই পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে থাকে। সে সময় রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নেতা তারেক রহমান ও তার অনুসারীরা।

 

তুমুল গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কি না, সে বিষয়টি নিয়ে আড়াই মাস পর বিতর্ক তৈরি হয় রাষ্ট্রপতির একটি কথায়।

 

দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগের কথা শুনেছেন, কিন্তু কোনো দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই।

 

ওই বক্তব্য মানবজমিনের একটি ম্যাগাজিনে ছাপা হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি চাপে পড়েন। প্রথমে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দাবি করেন, সাহাবুদ্দিন ‘মিথ্যা’ বলে শপথ ভঙ্গ করেছেন। তাকে অপসারণের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ জুলাই-অগাস্টের অভ্যুত্থানে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে মাঠে নামে।