ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৮৩

ভয়াবহ ডেঙ্গু: যেসব বিষয় না জানলেই নয়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:৪৫ ২৪ জুলাই ২০২৩  

গত কয়েক বছরের মতো এ বছরও ভয়ংকর রূপ নিয়েছে দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি। প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে। ডেঙ্গু রোগীতে কানায় কানায় পূর্ণ প্রতিটি হাসপাতাল। ভয় ধরাচ্ছে দৈনিক মৃতের সংখ্যাও।

 

ডেঙ্গু হলে কোন কোন লক্ষণ দেখে তা বোঝা যাবে, এ রোগ হলে কী করবেন, কী করবেন না, কখন বাসায় চিকিৎসা নেবেন আর কখন হাসপাতালে যাবেন- এসব বিষয়ে জানা থাকলে আর চিন্তা নেই।

 

এ ব্যাপারে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন রাজধানীর নতুন বাজারের ‘ফারাজি ডায়গনাস্টিক অ্যান্ড হসপিটাল লিমিটেড’-এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. ইব্রাহীম মাসুম বিল্লাহ।

 

ডেঙ্গুর লক্ষণ কী?

ডা. ইব্রাহীম মাসুম বিল্লাহ বলছেন, ‘জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাধারণত ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি থাকে। ডেঙ্গু জ্বর হলে সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে। শরীরে তীব্র ব্যথা, মাথা ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, গায়ে র‌্যাশ বা লালচে দানা আসতে পারে।

 

ডেঙ্গু হলে কখন আমরা হাসপাতালে যাবো, কখন বাসায় চিকিৎসা নেব এবং কী ধরণের চিবিৎসা নেব- এ সম্পর্কে ডা. ইব্রাহীম মাসুম বিল্লাহ বলছেন, ডেঙ্গুর চিকিৎসাকে সাধারণত তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। এ, বি এবং সি।

 

অধিকাংশ রোগী ‘এ’ ক্যাটাগরির। শুধু জ্বর ছাড়া অন্য কোনো লক্ষণ থাকে না। এক্ষেত্রে রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাসায়ই চিকিৎসা নিতে পারবেন।

 

‘বি’ ক্যাটগরির ডেঙ্গু রোগীদের কিডনি কিংবা লিভারে সমস্যা, পেট ব্যথা, বমি অথবা অন্তঃসত্ত্বা, অথবা জন্মগত যদি কোনো সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে, চিকিৎসা করাতে হবে।

 

‘সি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু জ্বরকে সবচেয়ে খারাপ বলছেন ডা. ইব্রাহীম মাসুম বিল্লাহ । তিনি বলেন, এক্ষেত্রে রোগীর লিভার, কিডনি বা মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অনেক সময় রোগীর জন্য আইসিইউ বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের প্রয়োজন হতে পারে।

 

ডেঙ্গু জ্বর হলে বাড়িতে করণীয় কী

ডা. ইব্রাহীম মাসুম বিল্লাহ বলছেন, রোগীকে পরিপূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে তরল পানি, লেবুর পানি, ডাবের পানি, ফলের রস অথবা স্যুপ প্রতিদিনই বেশি করে খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি ওষুধ হিসেবে প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে। সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কমপক্ষে আটটি প্যারাসিটামল খেতে পারেন।

 

যদি ডেঙ্গু রোগীর হার্টে, লিভারে বা কিডনিতে কোনো সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে তাকে অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে হবে। ডেঙ্গু হলে শরীরের বিভিন্ন অংশের ব্যথা কমানোর জন্য কোনো ধরনের ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না। কারণ, এ জাতীয় ওষুধ শরীরে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে।

 

ডেঙ্গু জ্বর হলে বাসায় যা করা যাবে না

ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্লাটিলেট গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল। তবে বর্তমানে এটি আর মুখ্য বিষয় নয় বলে জানাচ্ছেন ডা. ইব্রাহীম মাসুম বিল্লাহ। তিনি বলছেন, প্লাটিলেট কমে গেলে বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। যদি কোনো কারণে রোগীর প্লাটিলেট ১০ হাজারের নিচে নেমে যায় বা রোগীর ব্লেডিং মেনিফেস্টিশন বা কোনো ধরনের রক্তপাত হয়, সেক্ষেত্রে চিকিৎসক চাইলে রোগীকে প্লাটিলেট বা ফ্রেস ব্লাড দিতে পারেন।

 

পেঁপে পাতার রস খেলে প্লাটিলেট বাড়ে- এমন একটি কথা প্রচলিত আছে। তবে ডা. ইব্রাহিম মাসুম বিল্লাহ বলছেন, প্লাটিলেট বাড়ানোর জন্য আমরা রোগীকে পেঁপে পাতার রস বা এ জাতীয় কিছু খাওয়ার পরামর্শ দেব না। এতে করে রোগীর কনস্টিপেশন বা কোষ্ঠকাঠিন্যসহ অন্য কোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

জ্বরের শেষ দিকে করণীয়

এ পর্যায়ে রোগীর দাঁতের মাড়ি, নাক অথবা মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। অথবা রোগীর ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে। এই অবস্থায় রোগীকে আইবি বা শিরাপথে স্যালাইন দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। সেটি অবশ্যই কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাসপাতালে দিতে হবে।