ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৮৩

মানসিক স্বাস্থ্য সত্যিকারেই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ: সায়মা ওয়াজেদ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:৩৬ ১০ অক্টোবর ২০২০  

নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডারস এবং অটিজম সম্পর্কিত বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেছেন, মানসিক স্বাস্থ্য সত্যিকারেই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, যা মোটেও উপেক্ষা করা যায় না। কারণ, ২০৩০ সালের মধ্যে সব দেশ সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ (ইউএইচসি) অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

 

তিনি বলেন, ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডার অংশ হিসেবে প্রত্যেক দেশ ওই সময়ের মধ্যে ইউএইচসি অর্জন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মানসিক ছাড়া কোনও স্বাস্থ্য হতে পারে না। এটি ব্যতীত টেকসই উন্নয়ন হতে পারে না।

 

বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা জোরদারে সহায়তার লক্ষ্যে শুক্রবার ইম্পেরিয়াল কলেজের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ গবেষণা নেটওয়ার্কের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান হয়। এতে মূল বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন সায়মা। লন্ডনের ওই কলেজের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।

 

বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের রূপরেখা এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ভবিষ্যত সম্পর্কে তিনি পরিকল্পনা তুলে ধরেন। প্রকল্পটি ইউকে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (ইউকেআরআই) গ্লোবাল চ্যালেঞ্জস রিসার্চ ফান্ড থেকে ইম্পেরিয়ালের অর্থে পরিচালিত।

 

বাংলাদেশী সহযোগীদের মধ্যে রয়েছে আইসিসিডিআরবি, ইনোভেশন ফর ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশন, জেপিজিএসপিএইচ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের অংশীদারদের মধ্যে আছে চ্যাথাম হাউস, পূর্ব লন্ডন এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়।

 

মন প্রথম (মাইন্ড ফার্স্ট) গবেষণা সহযোগী প্রতিষ্ঠান পরিষেবাগুলো শক্তিশালী এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে বাংলাদেশের সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের সঙ্গে সংহত করতে সহায়তা করার জন্য একাধিক গবেষণা চালাচ্ছে।

 

ইম্পেরিয়াল ও চ্যাথাম হাউসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের এবং ব্রিটিশ অর্থায়ন সংস্থার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও নেতা, স্বাস্থ্য পেশাজীবীরা যোগ দেন। তারা বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনা করেন।

 

প্রকল্পের প্রধান ইম্পেরিয়াল স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক মালা রাও বলেন, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের আগে আমরা বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মন প্রথম সংস্থার অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরে আনন্দিত।

 

তিনি বলেন, এ অংশীদারিত্ব সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজর অংশ হিসেবে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে বাংলাদেশে ‘সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য’ অর্জন করার উপায় উন্নয়নে সহায়তা করার বিরাট সুযোগ।

 

মালা বলেন, এ বছর আমাদের সবার জীবনে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর প্রভাবের কারণে এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে এবং আগামী বছরগুলোতে আমাদের অংশীদারিত্ব ও বন্ধুত্ব জোরদার করার প্রত্যাশায় রয়েছি।

 

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য বিশ্বজুড়ে অবহেলিত জরুরি অবস্থা, যা মানুষের জীবনে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাবে আরও খারাপ হয়েছে।

 

তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ সম্পর্কে এ উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল আলোচনার অংশ হতে পেরে খুব আনন্দিত। আমি আশা করি, এ অনুষ্ঠান জোরদার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মানসিক স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়নে দিকনির্দেশনা দিবে।

 

হাইকমিশনার আশা প্রকাশ করেন, এ প্রয়াস ২০১৮ সালের মানসিক স্বাস্থ্য আইনের ভিত্তিতে বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে সহায়ক হবে। এছাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের আরও মানসিক স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ এ গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদানের সুযোগ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।

 

ইনোভেশন ফর ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মনিরা রহমান বলেন, বাংলাদেশে মেন্টাল হেলথ ফার্স্ট এইড প্রোগ্রাম মানসিক অসুস্থতার প্রতি সামাজিক মনোভাব বদলাতে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং জাতীয় পর্যায়ে এ কর্মসূচি জোরদার করার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

তিনি বলেন, আমি আশা করি, নীতিনির্ধারক, বিজ্ঞানী এবং অর্থ সহায়তা প্রদানকারীদের একত্রিত করে আমরা অনেক সমস্যা সমাধানে সহায়তা করব। কারণ, মানসিক স্বাস্থ্য সবার দায়িত্ব।

 

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে অনেক স্বাস্থ্য সূচক যেমন গড় আয়ু, মোট শিশু জন্মদান হার এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হারের ক্ষেত্রে উন্নতি অর্জন করেছে এবং কার্যকর মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের যথাযথ পথে রয়েছে।

 

স্বাস্থ্যকর গড় আয়ু বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এখন মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্বের স্বীকৃতি রয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের যথেষ্ট অভাবসহ অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে।