ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৪৯

মার্কিন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার টার্গেট হতে পারে বাংলাদেশ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:১৪ ৩০ নভেম্বর ২০২৩  

শ্রমমান ও শ্রমিক অধিকার বিষয়ে মার্কিন নতুন নীতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস। তারা বলছে, দেশের রাজনৈতিক ইস্যু ঘিরে এটি ব্যবহার করা হতে পারে পোশাক খাতে। এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে আগামী সপ্তাহে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।  

 

বিশ্বব্যাপী শ্রমমান নিশ্চিত আর শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষায় সপ্তাহ দুয়েক আগে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যাতে উল্লেখ করা হয় বাংলাদেশের নামও। এর প্রতিক্রিয়া না দেখা গেলেও শঙ্কার নতুন রূপ মিললো ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের লেখা চিঠিতে।

বাণিজ্য সচিবকে লেখা চিঠিতে দূতাবাস বলছে, শ্রম পরিবেশ আর শ্রমিক অধিকার রক্ষার ইস্যু বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত। কাজেই অবহেলা না করে গুরুত্ব দিতে হবে এই বিষয়ে। চিঠিতে বলা হয়, যদিও নীতিটি সর্বজনীন। তবে শঙ্কা রয়েছে বাংলাদেশকে লক্ষ্য বানানোর। 

 

বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই। কারণ, বাংলাদেশের শ্রম খাতে শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়-এরকম কোনও ঘটনা ঘটে না। আমাদের অ্যাপারেল সেক্টরে হয় না। জাতিসংঘের বাণিজ্য সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে, বাংলাদেশের নিটওয়্যার ফ্যাক্টরি বিশ্বের মধ্যে গ্রিন। ওয়ার্ল্ডের হাই-স্ট্যান্ডার্ড আমরা মেইনটেইন করি। সুতরাং এখানে শ্রমিকের অধিকার বঞ্চিত হওয়ার কোনও সুযোগ নেই।   

 

ধারণা করা হচ্ছে, এই নীতি কোনও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রয়োগ করার সুযোগ আছে, যদি তারা মনে করে সেখানে শ্রম অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। দূতাবাসের চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যেখানে রাজনৈতিক ইস্যুতে ব্যবহারের জন্য আনা হতে পারে শ্রমমান ও শ্রমিক অধিকারের ইস্যুটি। মোটাদাগে পদক্ষেপ আসতে পারে দেশের পোশাক খাত ঘিরে। 

 

অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, একে একেবারে অমূলক বলে উড়িয়ে দেয়া যাবে না। এই প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি, সরকারের উচিত বিষয়টিতে সিরিয়াসলি নেয়া। ইন্ডাস্ট্রির উচিত গুরুত্বসহকারে দেখা। দেশের শ্রমিক ইস্যু আন্তর্জাতিক মানের বলে বিশ্বে তুলে ধরা।  

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, এই বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে কাজ করছেন তারা। তিনি বলেন, চিঠি ইস্যুতে আমরা আগামী সপ্তাহে বৈঠক করবো। এতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ডাকা হবে। শ্রমমান উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যার অগ্রগতিও ইতিবাচক। বৈঠকে তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

 

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কও ভালো। আমরা তাদের কনসার্ন বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি। ফলে নতুন মার্কিন শ্রমনীতি নিয়ে উদ্বেগের কিছু দেখছি না।   

 

বিশ্বব্যাপী কর্মীদের ক্ষমতায়ন, অধিকার ও হাই-লেবার স্ট্যান্ডার্ড উন্নয়ন ইস্যুতে গত ১৬ নভেম্বর প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম ঘোষণা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যারা ইউনিয়ন নেতা, শ্রমিক অধিকার রক্ষাকারী এবং শ্রমিক সংগঠনকে আক্রমণ করে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য বিষয়ক জরিমানা ও ভিসা নিষেধাজ্ঞার মতো পদক্ষেপ নেয়া হবে।