ঢাকা, ৩০ নভেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ১৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৯২

জানত না পার্কস্ট্রীটের বাসিন্দারা

মাস্টারমশাই-ই বঙ্গবন্ধুর খুনী!

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:০৫ ১৪ এপ্রিল ২০২০  

মহল্লা তাঁকে কখনও উচ্চস্বরে কথা বলতে দেখেনি, হিংসা-বিবাদ তো দূর! লোকটা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন নিয়ম করে। থাকতেন চুপচাপ। সেই 'মাস্টারমশাই' নামে পরিচিত ব্যাক্তি নাকি বঙ্গবন্ধুর খুনি!

এখনও ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না লকডাউনের পার্ক স্ট্রিট। এই পার্ক স্ট্রিটের বেডফোর্ড লেনের ভাড়া বাড়িতে থাকতেন বঙ্গবন্ধুর ঘাতক আব্দুল মাজেদ।

কলকাতার দৈনিক বর্তমান পত্রিকার প্রিন্ট সংস্করণে রবিবার এভাবে প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনটি।


ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গেল ৭ এপ্রিল বাংলাদেশের মিরপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি আব্দুল মাজেদ গ্রেপ্তারের পর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দেখে রীতিমতো অবাক পার্ক স্ট্রিটের বেডফোর্ড লেনের বাসিন্দারা!

 

কিন্তু আব্দুল মাজেদ নয়। পার্ক স্ট্রিট তাঁকে চেনে আলি আহমেদ ওরফে ইংরেজির মাস্টারমশাই হিসেবে। এলাকার লোকে জানত, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে থেকে পাশ করেছেন মাস্টারমশাই। টিউশন পড়িয়ে সংসার চালাতেন তিনি। প্রথমে তালতলার ভাড়া বাড়িতে একাই থাকতেন মাজেদ। পরে পার্ক স্ট্রিটে চলে আসেন।

 

২০১১ সালে তাঁর থেকে ৩২ বছরের ছোট উলুবেড়িয়ার সেলিনা বেগমকে বিয়ে করেন তিনি। তাঁদের ছ’বছরের এক মেয়ে রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই বছর বাহাত্তরের মাজেদের শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পিজি হাসপাতালে একপ্রস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষাও হয়।

 

দিনটা ছিল গত ২২ ফেব্রুয়ারি। পিজি হাসপাতাল থেকে সেই রিপোর্ট আনতে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। সেটাই শেষ। আর বাড়ি ফেরা হয়নি মাজেদের। স্বভাবতই উদ্বিগ্ন স্ত্রী রাতে পার্ক স্ট্রিট থানায় মিসিং ডায়েরি করেন। তদন্তে শুরু করে পার্ক স্ট্রিট থানা। পিজি হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ তন্নতন্ন করে ঘাঁটলেও হদিস মেলে না মাজেদের। এরপর পুলিশ মাজেদের ভাড়া বাড়ি থেকে একটি ব্যাগ পায়। সেই ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে সিম কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার আইডি, ভারতীয় পাসপোর্ট এবং এক মহিলা সহ তিনজন শিশুর ছবি পাওয়া যায়।

 

স্ত্রী সেলিনা পুলিশকে জানায়, ব্যাগের মতো তাঁর অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিসে কাউকে হাত দিতে দিতেন না মাজেদ। মহল্লায় খুব একটা মেলামেশা করতেন না তিনি। টিউশনির পাশাপাশি বড়জোর এলাকার এক চায়ের দোকান, রেশন দোকান এবং এক বিল্ডার্সের দোকানে আড্ডা দিতেন মাজেদ। বাড়ির সদর দরজায় সব সময় তালা লাগানো থাকত। বাইরের কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হতো না।

এক আধ বছর নয়, এভাবেই আঠারো-উনিশ বছর ডেরা বেঁধে কলকাতায় আত্মগোপন করেছিলেন আব্দুল মাজেদ। ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা ৪ মিনিটে বেডফোর্ড লেনের বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আব্দুল মাজেদের যাত্রাপথের একাংশের সিসিটিভি ফুটেজ হাতে এসেছে পুলিশের। কি আছে সেই ফুটেজে?

বিশ্ব বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর