ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ২৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩১৩

ম্যাথিউসের আগে `টাইমড আউট` হয়েছেন যারা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:৩১ ৮ নভেম্বর ২০২৩  

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার দেখা গেল এমন ঘটনা। ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হতে দেরি করায় আউট হয়ে গেছেন শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। দিল্লিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ম্যাচে এমন ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বকাপে তো প্রথমই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এর আগে কেউ এভাবে আউট হননি। ক্রিকেটের আউটগুলোর মধ্যে মানকাড নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক আছে। এবার ম্যাথিউসকে 'টাইমড আউট' করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিল বাংলাদেশ। 

 

সোমবার (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ২৫তম ওভারের কথা। সাদিরা সামারাবিক্রমা আউট হয়ে গেলে ক্রিজে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। কিন্তু হেলমেটের ফিতা ঠিক না থাকায় ব্যাটিংয়ে নামতে দেরি করছিলেন তিনি। পরে অন্য একটি হেলমেট নিয়ে আসলেও সেটিও তার কাছে খেলায় ব্যবহারে উপযোগী মনে না হওয়ায় সময়ক্ষেপণ করছিলেন। যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আউটের আবেদন জানান।

 

এমসিসির আইনের ৪০.১.১ নম্বর ধারা অনুযায়ী ম্যাথিউসকে টাইমড আউট ঘোষণা করেন আম্পায়ার। এই আইনে বলা আছে, 'একজন ব্যাটসম্যানের আউট হয়ে যাওয়া বা অবসরের পর যে ব্যাটসম্যান আসবেন, তাকে অথবা অন্য ব্যাটসম্যানকে ৩ মিনিটের মধ্যে বলের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। অন্যথায় যে ব্যাটসম্যান নামছেন, তাকে আউট হতে হবে।'

 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার এমন ঘটনা ঘটলেও স্বীকৃত ক্রিকেটে এমন ঘটনা দেখা গেছে আগেও। এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে টাইমড আউটের ঘটনা ঘটেছে ছয়বার।  

 

অ্যান্ড্রু জর্ডান: প্রথম ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে। দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথমবার টাইমড আউটের ঘটনা ঘটে। ইস্টার্ন প্রভিন্স ও ট্রান্সভালের মধ্যকার ম্যাচে অ্যান্ড্রু জর্ডান শূন্য রানে দিনের খেলা শেষ করেছিলেন। কিন্তু রাতে অতি ভারি বর্ষণে রাস্তার অবস্থা এতো খারাপ হয়ে পরেছিল যে, পরদিন তিনি খেলা শুরুর পর সময়মতো উপস্থিত হতে পারেননি। তাকে টাইমড আউট ঘোষণা করেন আম্পায়ার। 

 

হেমুলাল যাদব: দ্বিতীয় ঘটনাটি ১৯৯৭ সালে ভারতের। কটকের বারাবাটি স্টেডিয়ামে ত্রিপুরা ও উড়িষ্যার মধ্যকার ম্যাচে ঘটেছিল ঘটনাটি। উড়িষ্যার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে ত্রিপুরা নবম উইকেট হারানোর পর আম্পায়ার পানের বিরতি দেন। ত্রিপুরার ১১ নম্বর ব্যাটার হেমুলাল যাদব পানের বিরতি শেষ হয়ে গেলেও ক্রিজে উপস্থিত হননি। তিনি তখনও বাউন্ডারি লাইনের বাইরে দলের ম্যানেজারের সঙ্গে গভীর আলোচনায় মগ্ন ছিলেন। আম্পায়ার আউট দেন তাকে। 

 

ভাসবার্ট ড্রেকস: তৃতীয় ঘটনাটিও দক্ষিণ আফ্রিকায় ঘটে। ২০০২ সালে  বর্ডার বনাম ফ্রি স্টেটের ম্যাচে ভাসবার্ট ড্রেকস। 'টাইমড আউট' হন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ খেলে কলম্বো থেকে ফিরছিলেন। কলম্বো থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্ট লন্ডনের দূরত্ব ৪,৪০০ মাইল। ম্যাচটি শুরু হয়ে গেলেও তখনও বিমানেই ছিলেন ড্রেকস। বিমানের বিলম্ব দেখে এই ক্যারিবিয়ানের ব্যাটিং অর্ডার বেশ পিছিয়েও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। মাঝ আকাশে আউট হওয়া একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে নাম লেখান ড্রেকস। 

 

এজে হ্যারিস: ২০০৩ সালে কাউন্টি দল নটিংহাম্পশায়ার বনাম ডারহামের ম্যাচে 'টাইমড আউট' হয়েছিলেন এজে হ্যারিস। ডারহামের বিপক্ষে নটিংহাম্পশায়ার দারুণ ব্যাটিং করছিল। তাদের ১১ নম্বর ব্যাটার অ্যান্ড্রু হ্যারিস গ্রোয়েন ইনজুরিতে ভুগছিল কিন্তু তার নামার প্রয়োজন পড়বে না মনে করে তৈরিও ছিলেন না। কিন্তু হঠাৎ করেই নটিংহাম্পশায়ারের মিডলঅর্ডারে ধস নামে এবং হ্যারিসের ব্যাটিংয়ে নামার ডাক আসে। তড়িঘড়ি করে তিনি কাপড় বদলে তৈরি হচ্ছিলেন, কিন্তু ততক্ষণে অনবেক দেরি হয়ে গেছে। তার সঙ্গী ক্রিস রিড বিষয়টি নিয়ে খুশি হতে পারেননি, কারণ তখন তিনি ৯৪ রানে ব্যাট করছিলেন। 

 

রায়ান অস্টিন: সেন্ট ভিনসেন্টে কম্বাইন্ড ক্যাম্পাস ও কলেজ বনাম উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডের ম্যাচে ২০১৩-১৪ মৌসুমে এই ঘটনা ঘটে। ক্যারিয়ারের সেরা বোলিংয়ে ৮ উইকেট নেওয়ার পর পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে কম্বাইন্ড ক্যাম্পাস ও কলেজের রায়ান অস্টিন পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে 'টাইমড আউট' এর খাতায় নাম লেখান। বোলিং ওপেন করতে নেমে ৬৪ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন অস্টিন। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে যখন তার ব্যাটিংয়ে নামার ডাক আসে, তিনি মাঠে নামতে ব্যর্থ হন। 

 

চার্লস কুঞ্জে: ২০১৭ সালে বুলাওয়ে'তে মাউন্টেনার্স বনাম তুস্কার্সের ম্যাচে তিনি ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে টাইমড আউট হন।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর