ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৫৯৮

যে কারণে শিশুর প্রায়ই অসুখ লেগে থাকে

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:৫১ ২৫ নভেম্বর ২০১৯  

 ১৮ মাস বয়সী প্রান্ত’র প্রায়ই অসুখ লেগে থাকে। বিশেষ করে সর্দি আর কাশি। এজন্য মাসের প্রায় দিনই তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হয়। আর ওষুধ খেতে হয়। ওষুধ খাওয়ানোর সময় যেন যুদ্ধ করতে হয় মা লাভলী আক্তারকে। ছেলে কোনোভাবেই ওষুধ খেতে চায় না। ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন নিয়মিত যেন নেবুলাইজ করা হয় প্রান্তকে। তাও নিতে চায় না ছেলে। খুব কান্নাকাটি করে সে। পরপর কয়েকবার তাকে দেখে ডাক্তার জানতে চান তাদের বাসা কোন জায়গায়। সেখানে ধুলো-বালি বেশি কি না? ইত্যাদি। সব শুনে ডাক্তার বুঝলেন মূলত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকার কারণে প্রান্ত বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তিনি পরামর্শ দিলেন বাসায় যেন প্রতিদিন ধুলোবালি পরিষ্কার করা হয়। আর জীবানুমুক্ত রাখা হয়।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাইদুর রহমান বলেন, শিশুদের প্রতিটি বিষয়ই খুব স্পর্শকাতর। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম। তাই শিশুদের অতিরিক্ত যত্ন নিতে হয়। বাসা-বাড়ি সব সময় পরিষ্কার করে রাখতে হয়, যেন কোনও ধুলোবালি জমে না থাকে। তাদের কাপড়ও পরিষ্কার করে রাখতে হবে। আর বাসা-বাড়ি সব সময় জীবানুমুক্ত রাখতে হবে। বাচ্চাদের পাশাপাশি বড়রাও যেন সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। অন্যথায় বড়দের জীবাণু সহজে ছোট বাচ্চাদের সংক্রমণ করতে পারে।
তিনি বলেন, যাদের বাচ্চা রয়েছে, তাদের বাতাস চলাচল করতে পারে এমন ঘরেই থাকা উচিত। কারণ, বাতাসের কারণে জীবাণুগুলো স্থির হতে পারে না। তাই ঘরে অবশ্যই বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া বাইরের অতিথি আসলে তাদের সরাসরি নবজাতক বাচ্চার রুমে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। কারণ, বাইরে থেকে আসা অনেকের শরীরে বিভিন্ন জীবাণু থাকে। আর তাই তাদের অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং জীবাণুমুক্ত হয়ে শিশুর রুমে প্রবেশ করা উচিত।
ডা. সোহাগ বলেন, ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জিনিসগুলো এবং ওষুধ অবশ্যই শিশুদের হাতের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। এছাড়া বাথরুম পরিষ্কার করার সামগ্রী এবং ঘরের মেঝে পরিষ্কার করার জীবানুনাশক লিকুইড অবশ্যই শিশুদের হাতের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। বাইরে ব্যবহৃত জুতা, স্যান্ডেল ঘরের বাইরে রাখাই ভালো।
তিনি বলেন, বাসার রান্না ঘর অবশ্যই সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অন্যথায় মাছির উপদ্রব হতে পারে। আর মাছি হাড়ি-পাতিল, বাসন অথবা খাবারে বসতে পারে, যা শিশুদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ, মাছির অনেক ধরনের জীবাণু থাকতে পারে।
এছাড়া বাথরুম অবশ্যই সবসময় জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। বাথরুমে অনেক ধরনের জীবাণু থাকে। এসব জীবাণু থেকে ছোটরা যেমন আক্রান্ত হতে পারে, তেমনি বড়রাও আক্রান্ত হতে পারে। তাই অবশ্যই বাথরুম জীবাণুনাশক ব্যবহার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকইে বাড়ির মধ্যেই যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে রাখে। এটা কখনই উচিত নয়। আর যে সব বাসা-বাড়িতে নবজাতক শিশু বা বড় শিশু রয়েছে, সেসব বাসা-বাড়ি অবশ্যই পরিষ্কার রাখতে হবে। এজন্য প্রায় প্রতিদিনই বাসার মেঝে জীবানুনাশক দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। এছাড়া বাসার আসবাবপত্র নিয়মিতভাবে ঝাড়– দিয়ে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন।