ঢাকা, ১৯ জানুয়ারি রোববার, ২০২৫ || ৬ মাঘ ১৪৩১
good-food
২৯৩

যে বধ্যভূমির সংস্কারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও অকার্যকর

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৪৪ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯  

স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণসহ আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি নওগাঁর আতাইকুলা গ্রামের বধ্যভূমিতে। অথচ ২০১৫ সালে বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। ক্ষুব্ধ শহীদ পরিবার ও স্থানীয়রা। অপরদিকে পাক বাহিনীর হাতে নিহত ৫২ জন শহীদদের পরিবার এখনও পায়নি রাষ্ট্রীয় সম্মান। শহীদ পরিবারের সদস্যরা কোনো রকমে ইটের প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রেখেছেন বধ্যভূমিটি।

নারকীয় ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে যাওয়া আতাইকুলা গ্রামের প্রদ্যুত চন্দ্র পাল, সাধন চন্দ্র পাল ও নিখিল চন্দ্র পাল ওই দিনের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করলেন। বললেন, ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল রবিবার সকাল ১০টায় ছোট যমুনা নদী পার হয়ে আসে একদল হানাদার পাকবাহিনী। মুক্তিযোদ্ধারা এই গ্রামে আছে বলে তারা সন্দেহ করে প্রথমে গ্রামটি ঘিরে ফেলে। প্রতিটি বাড়ি থেকে নগদ টাকা স্বর্ণালংকাসহ বাড়ির নারী-পুরুষকে ধরে নিয়ে ওই গ্রামের যোগেন্দ্রনাথ চন্দ্রের বাড়ির উঠানে নিয়ে যায়। সেখানে পুরুষদের উঠানে সারিবদ্ধ করে দাঁড়িয়ে রাখে আর উঠানের পাশেই নারীদের এক ঘরে রাখা হয়। একের পর এক নারীদের ওপরে চালায় পাশবিক নির্যাতন। পরে সারিবদ্ধ পুরুষদের ওপরে চলে ব্রাশ ফায়ার। মুহূর্তের মধ্যেই ওই গ্রামের ৬৮ জনের মধ্যে ৫২ জন শহীদ হন। পরে তারা বিভিন্ন বাড়িতে লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগ করে চলে যায়। শহীদদের মধ্য থেকে গুলিবিদ্ধ হয়েও কোনো রকমে বেঁচে যান প্রদ্যুত পাল, সাধন পাল ও নিখিল পাল।

প্রদ্যুত পাল আরও জানান, সবাইকে হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়েছি। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হলেও কোনো সরকারের আমলে কোনো শহীদ পরিবার এখনও সহযোগিতা পায়নি।

শহীদ পরিবারের সন্তান গৌতম পাল জানান, সেই দিন ৫২টি লাশ ৩দিন পরে থাকার পর পাশের গ্রামের লোকজনরা এসে কোনো রকমে ঘটনাস্থলের পাশেই মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখে। এরপর আমরা এখানে স্মৃতিস্তম্ভ ও সংরক্ষণ করার জন্য জমি দান করেছি। এছাড়াও অনেক পথ অতিক্রম করে গত ১৫ সালের মার্চ মাসের ১৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও এখানে স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলার জন্য তার কার্যালয় থেকে একটি নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা আজও বাস্তবায়ন করা হয় নাই। এতে করে আমরা শহীদ পরিবারসহ স্থানীয়রা চরম হতাশ।

অপরাধ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর