ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৪৮

যে ৬ অভ্যাস নষ্ট করছে আপনার মানসিক শান্তি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৫:৪০ ১৭ মার্চ ২০২৪  

ব্যস্ত ও প্রতিযোগিতামূলক জীবনে মানসিক শান্তি বজায় রাখাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এক মুহূর্ত বন্ধুদের সঙ্গে হাসিঠাট্টায় মেতে উঠলেও দেখা যায় ঠিক পরের মুহূর্তে আমরা কোনও না কোনও কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাচ্ছি। আমাদের তুচ্ছ কিছু অভ্যাসের কারণেও মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে আমাদের।জেনে নিন ছোট কিন্তু দৈনন্দিন অভ্যাসের তালিকা যা আমাদের মানসিক শান্তি নষ্ট করে। 

 

১. অবিরাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ক্রল করার অভ্যাস ডিজিটাল যুগে একটি বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এই প্ল্যাটফর্মগুলো মানুষকে সংযুক্ত করার জন্যই নকশা করা হয়েছে, তবে অত্যধিক ব্যবহার আপনার মানসিক শান্তি বিনষ্ট করতে পারে। তুলনা, ঈর্ষা এবং উদ্বেগের কারণ হতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অন্যদের জীবন দেখে অবাস্তব প্রত্যাশা তৈরি করতে পারে এই ধরনের প্ল্যাটফর্ম। এটি প্রতিরোধ করতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার জন্য সময়সীমা সেট করুন। 'সোশ্যাল মিডিয়া-মুক্ত' সময় তৈরি করুন। ভার্চুয়াল অভিজ্ঞতার পরিবর্তে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার উপর ফোকাস করে এমন ক্রিয়াকলাপে যোগ দিন যা আপনাকে আনন্দ এবং পরিপূর্ণতা দেবে।

 

২. কাজ বিলম্বিত করার অভ্যাস আমাদের মানসিকভাবে চাপে রাখে। সময়ের কাজ সময়ে না করলে শেষ মুহূর্তের অপ্রয়োজনীয় চাপ পড়ে ও কাজের মান হ্রাস পায়। এই অপরাধবোধ আপনার মানসিক শান্তিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এবং নিরাপত্তাহীনতা এবং নিজেকে অবজ্ঞা করার মতো অনুভূতির কারণ হতে পারে। এটি প্রতিরোধ করতে কাজগুলোকে ছোট, পরিচালনাযোগ্য ধাপে ভাগ করুন এবং নিজের জন্য বাস্তবসম্মত সময়সীমা সেট করুন। তাদের গুরুত্বের উপর ভিত্তি করে অগ্রাধিকার দিন। 

 

৩. অতিরিক্ত চিন্তা করার অভ্যাস, অতীতের ঘটনা নিয়ে চিন্তা করা বা ভবিষ্যৎ নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা আপনার মানসিক শান্তির জন্য সত্যিই ক্ষতিকারক হতে পারে। ওভারথিঙ্কিং হলো যখন আপনি ক্রমাগত আপনার মনের মধ্যে দৃশ্যকল্পগুলোকে রিপ্লে করেন, কী ভুল হয়েছে এবং আপনি অন্যভাবে কী করতে পারতেন তা নিয়ে ভাবছেন। এই অভ্যাসটি স্ট্রেসের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এটি যাতে না ঘটে তার জন্য মননশীলতার অনুশীলন করুন এবং আপনার ফোকাসকে বর্তমান মুহুর্তে আনুন। যখন চিন্তাগুলো অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে, তখন লিখুন কেন এই চিন্তাগুলো আপনাকে বিরক্ত করছে। 

 

৪. যদিও মাল্টিটাস্কিং একটি ক্ষেত্রবিশেষে উৎপাদনশীলতার কারণ হতে পারে, তবে এটি কিন্তু দক্ষতা হ্রাস করে এবং চাপ বৃদ্ধি করে। ক্রমাগত একাধিক কাজ করা মানুষকে যেকোনো একটি কার্যকলাপে পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে বাধা দেয়, যার ফলে হতাশার অনুভূতি হয়। মাল্টিটাস্কিং আপনার স্বাস্থ্য, মানসিক এবং শারীরিক উভয়ের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

 

৫. কাজে সফল হতে না পারলে নিজেকে হেয় করার অভ্যাস মানসিকভাবে আপনাকে অশান্তিতে রাখতে পারে। এটি যাতে না ঘটে সেজন্য নেতিবাচক চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ করা গুরুত্বপূর্ণ। নিজের সমালোচনা করার পরিবর্তে এবং সারাজীবন আপনি কী ভুল করেছেন তা নিয়ে চিন্তা করার পরিবর্তে আপনি যে বিন্দু থেকে শুরু করেছিলেন তা থেকে আপনি কতটা এগিয়ে এসেছেন তা নিয়ে ভাবুন। 

 

৬. সর্বদা সবার জন্য সবসময় সহজলভ্য থাকা এবং সীমানা নির্ধারণ না করা খারাপ মানসিক স্বাস্থ্যের আরেকটি কারণ হতে পারে। এই সীমানাগুলো স্থাপন করতে ব্যর্থ হলে একটা সময়ের পর ক্লান্তির অনুভূতি হবে। নিজেকে কাজ, সামাজিক বাধ্যবাধকতা বা অন্যান্য দায়িত্বের প্রতি অত্যধিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার কারণে নিজের প্রতি যত্ন নেওয়ার সময় বের করা সম্ভব হয় না। এটি দীর্ঘমেয়াদে আপনার মানসিক সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলে।
এমনটা যাতে না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনে 'না' বলতে শিখুন এবং নিজেকে অগ্রাধিকার দিন।