ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৫২

যেসব কারণে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম, যা জানালো মন্ত্রণালয়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:০৬ ৭ আগস্ট ২০২২  

একাধিক কারণে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। শনিবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে তারা। এতে বলা হয়, ২০২১ সালের ১১ মার্চ স্থানীয় পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে পূনঃনির্ধারণ করা হয়। সেসময় বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির প্রবণতা সত্ত্বেও অকটেন ও পেট্রোলের দাম বাড়ানো হয়নি।

 

২০২১-২২ অর্থবছরের শুরুতে করোনা মহামারি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বেড়ে যায়। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।


বিবৃতিতে জানানো হয়, বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল ডিজেল ৭৪ দশমিক শূন্য ৪ এবং অকটেন ৮৪ দশমিক ৮৪ ডলারের নেমে এলে লিটারপ্রতি যথাক্রম ৮০ টাকা এবং ৮৯ টাকায় অর্থাৎ বিদ্যমান দামে বিক্রি করা যেত। কিন্তু এখন তা সম্ভব নয়।

 

একইসঙ্গে ক্রুড অয়েলেল মূল্য গত জুনে ১১৭ ডলারে ওঠে। যা এখনও বিদ্যমান আছে।
জ্বালানি তেল আমদানিতে গত জুলাইয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান ডিজেলে ৭৪,৯৪,৯২,৭০০ টাকা। আর অকটেনে লোকসান ২,৯২,২৩,২১৬ টাকা। গত মে ও জুনে লোকসান ছিল প্রায় শতাধিক কোটি টাকা। এতে গত ফেব্রুয়ারি-জুলাইয়ে লোকসান বা ভর্তুকি দাঁড়ায় ৮০১৪ কোটি টাকার ওপরে। সবশেষ মূল্য সমন্বয়ে ডিজেল লিটারে ১১৪ টাকা  গড় হিসাবে দাম পড়বে ১২২ দশমিক ১৩ টাকা। তবু প্রতি লিটারে লোকসান হবে ৮ দশমিক ১৩ টাকা।


 
মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে কলকাতায় প্রতি লিটার ডিজেলের দর ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি (১১৫ দশমিক ০৯ টাকা)। বাংলাদেশ থেকে যা প্রায় ৩৪ দশমিক শূন্য ৯ টাকা বেশি। সেখানে পেট্রোলের দাম ১০৬ দশমিক ০৩  রুপি (১৩০ দশমিক ৪২ টাকা)। বাংলাদেশ থেকে যা ৪৪ দশমিক শূন্য ৯ টাকা বেশি। এ পার্থক্যের কারণে বহু কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে আমদানিকৃত জ্বালানি পণ্য পাচার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই তেলের মূল্য সমন্বয় করা হচ্ছে।

 

বিবৃতিতে জানানো হয়, এ মুহূর্তে বিপিসির আর্থিক সক্ষমতা ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। আয়-ব্যয় বাদে গত ৩১ জুলাইয়ের হিসাব মতে, করপোরেশনের হাতে রয়েছে ২২০০০ কোটি টাকা। যা দিয়ে আগস্টের আমদানি ব্যয় অর্থায়ন করা সম্ভব নয়। তাই জ্বালানি তেলের মূল্য সম্বনয় করে বিপিসির আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত রাখা জরুরি।

 

তাতে বলা হয়, ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রতি ডলারের দাম ছিল ৮৫ দশমিক ৮৫ টাকা। তবে বর্তমানে ডলারের বিপরীতে টাকার ব্যাপক অবমূল্যায়ন হয়েছে। এখন তা দাঁড়িয়েছে ৯৩ দশমিক ৫০ টাকা। এতে জ্বালানি তেল আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে।

 

বর্তমানে বিপিসি অধীনে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন, ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন, জেট-এ ১ পাইপলাইন, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ পাইপলাইনের মতো মেগা প্রকল্প রয়েছে। তেলের মূল্য না বাড়ালে সেসব বাস্তবায়নে বিপিসি আর্থিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে।

 

এর আগে গতকাল শুক্রবার (৫ আগস্ট) দেশে সবধরনের তেলের দাম বাড়ায় সরকার। ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি পণ্যগুলোর মূল্য এক লাফে লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়। দিবাগত রাত ১২টা থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর হয়েছে।

 

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, লিটারে ডিজেল ৩৪ টাকা, পেট্রোল ৪৪ এবং অকটেনের দাম বেড়েছে ৪৬ টাকা। এতে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা হয়েছে।