ঢাকা, ০৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৬৪২

যেসব কারণে শিশুর দুধ দাঁতের পরিচর্যা জরুরি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৫৯ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২  

চার বছর বয়সী অশোকের চকোলেট খুব পছন্দ। তাই বাবাও প্রতিদিন অফিস থেকে ফেরার পথে তা নিয়েই বাসায় ঢুকে। আবার অশোক বাইরে গেলেও দোকানে চকোলেট দেখলে খুব জেদ করে খাওয়ার জন্য। বাবা কিনেও দেয়। কিন্তু একদিন দেখা গেল তার ছোট ছোট দাঁতে ক্ষয় ধরেছে। তখন অশোকের বাবা-মা বুঝতে পারল এটা বেশি চকোলেট খাওয়ার কারণেই হয়েছে।

 

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মতে, দাঁত হচ্ছে মানব শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য একটি অঙ্গ। একজন মানুষের পুরো জীবনে দাঁত উঠে দুইবার। প্রথমবার যেটি আসে সেটিকে অনেকে দুধ দাঁত বলে। আর এটির আরেক নাম হচ্ছে ডেসিডুয়াস। দুধ দাঁত পড়ে যাওয়ার পর যা উঠে সেটিই স্থায়ী হয়। মূলত শিশুদের দাঁত উঠে ছয় মাস বয়স থেকে। এটা মূলত ছয় বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আর তা থাকে সর্বোচ্চ ২০টি। এরপর আস্তে আস্তে সেসব পড়ে গিয়ে স্থায়ী দাঁত উঠে।

 

ডেন্টাল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আনসার আহমেদ বলেন, প্রায়ই বাবা-মায়ের মধ্যে শিশুদের দাঁত নিয়ে এক ধরনের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। তারা মনে করেন, দুধ দাঁত পড়ে গিয়ে স্থায়ী দাঁত এমনিতেই উঠবে। তাই দুধ দাঁত পড়ে গেলে আর তারা কোনো চিকিৎসা করান না। কিন্তু অনেক সময় এসব দাঁত পড়ে গিয়ে মাড়িতে গর্তের সৃষ্টি হয়। সেজন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গিয়ে ফিলিং বা চিকিৎসা করাতে হয়। তবে অধিকাংশ বাবা-মা’ই তা করান না। আবার অনেকে সময়ের অনেক আগেই দুধ দাঁত ফেলে দেয়। এটা কোনোভাবেই উচিত নয়।

 

তিনি বলেন, শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যেঙ্গের যত্ন নিতে হবে। দাঁতও শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই দুধ দাঁতের যত্ন নিতে হবে।

 

আরেক বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুল হাসান বলেন, অনেক বাচ্চার ঘুমের মধ্যে খাওয়ার অভ্যেস আছে। আবার অনেক বাচ্চা খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়ে। এর ফলে দাঁতের বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। মূলত প্রাথমিকভাবে ল্যাকটোবেসিলাস ও স্ট্রেপটোবক্কাস মিউট্যানস নামক ব্যাকটেরিয়াগুলো দাঁতের ক্যাভিটি তৈরির জন্য দায়ী। দুধ, মিষ্টিজাতীয় খাবার বা এ জাতীয় কোনো খাবার যদি দাঁতে দীর্ঘক্ষণ লেগে থাকে, তাহলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া নিঃসরণে উপযুক্ত মাধ্যম তৈরি করে, যা ল্যাকটিড অ্যাসিড তৈরি করে দাঁতের ওপরের আবরণ অ্যানামেলকে ক্ষয় করে ফেলে এবং দাঁতে গর্তের সৃষ্টি করে।

 

তিনি বলেন, প্রায়ই শিশুদের নার্সিং বোটল সিনড্রোম বা আর্লি চাইল্ডহুড ক্যারিস রোগ হয়। এর ফলে সামনের দাঁতগুলোয় গর্তের সৃষ্টি হয়। যদি ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন হয়, তাহলে দাঁতে তীব্র ব্যথা শুরু হয়। তখন অবশ্যই সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে।

 

ডা. কামরুল হাসান বলেন, কারো কোনো দুধ দাঁত যদি সময়ের অনেক আগে পড়ে যায় বা সময়ের অনেক পরে পড়ে, তখন স্থায়ী দাঁতগুলো আঁকা-বাঁকা হয়ে উঠবে। ফলে দাঁত উঁচু-নিঁচু হয়ে যায় এবং দাঁতের মাঝে ফাঁকা থাকে। আর এসব থেকে দাঁতকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই বাবা-মাকে একটি সময় পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। যাতে করে কোনো সমস্যা তৈরি না হয়। আর যদি সমস্যা হয় তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

শিশু বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর