ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৬৫২

যেসব দেশকে টপকে ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি হবে বাংলাদেশ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৫৫ ২৯ ডিসেম্বর ২০২০  

২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি হবে বাংলাদেশ। সেজন্য শুধু বর্তমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাটা ধরে রাখতে হবে। যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) এ পূর্বাভাস দিয়েছে।

গেল শুক্রবার ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবল-২০২১’ শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিইবিআর। তাতে আগামী ১৫ বছরে বিশ্বের কোন দেশের অর্থনীতি কেমন হবে, সেই অনুমাণ করা হয়েছে। প্রতিবছর এ রিপোর্ট প্রকাশ করে তারা।

তাদের সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০৩৫ সাল নাগাদ ১৯৩টি দেশের মধ্যে বহু ধাপ ওপরে উঠে আসবে বাংলাদেশ। বিশ্বের ২৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি হবে এ দেশ। ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী, এখন বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ।

সিইবিআর বলছে, এক করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতি ওলটপালট করে দিয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়ার বেশিরভাগ বড় অর্থনীতির দেশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে মহামারি সত্ত্বেও চলতি বছর প্রবৃদ্ধির সংকোচন এড়াতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। সামনের বছরগুলোতে এদেশের অর্থনীতির জোরালো প্রবৃদ্ধি আশা করা হচ্ছে।

কোভিড-১৯ অতিমারি শুরুর আগের বছরগুলোতে বাংলাদেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো ছিল। জনসংখ্যা বৃদ্ধি সত্ত্বেও সেটা হয়েছে। গেল ৫ বছরে গড়ে এখানে জনগণ বাড়ে ১ শতাংশ।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক হারে করোনা ছড়িয়েছে। তবে সেই তুলনায় বাংলাদেশে সংক্রমণ কম। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত এদেশে প্রাণঘাতী ভাইরাসে মারা গেছেন ৭০৫২ জন। প্রতি ১ লাখে যা মাত্র ৪ জন। 

স্বভাবতই বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের ওপর মহামারির প্রভাব পড়েছে সীমিত। তবে এতে অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। কারণ, বিশ্বজুড়ে পণ্যের চাহিদা কমেছে। আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেইনও বিপর্যস্ত হয়েছে।

তবে অনেক দেশে অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি হলেও তা এড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩.৮ শতাংশ। যেখানে ২০১৯ সালে হয় ৮.২ শতাংশ। সিইবিআর’র ভাষ্যমতে, ২০২১-২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে গড়ে ৬. ৮ শতাংশ। কিন্তু পরের ১০ বছরে এ হার কিছুটা কমে গড়ে ৬.৫ শতাংশ হবে। 

চলতি বছর বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৫১৩৯ ডলার। সেই হিসাবে এখন নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে এটি।

অর্থনীতিতে বাংলাদেশের নাটকীয় উত্থান ঘটছে। সিইবিআর’র সূচক অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতিতে ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রথম ২৫ দেশের তালিকায় ঢুকে যাবে এ দেশ। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ৪১, ২০২৫ সালে হবে ৩৪, ২০৩০ সালে দাঁড়াবে ২৮। আর ২০৩৫ সালে হবে বিশ্বের ২৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি।

সেই হিসাবে অর্থনীতিতে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ডেনমার্ক, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, নরওয়ে, আর্জেন্টিনা, ইসরায়েল, আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, নাইজেরিয়া, বেলজিয়াম, সুইডেন, ইরান ও তাইওয়ানকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ। বর্তমান বিশ্ব সূচকে এদেশের ওপরে রয়েছে সেই দেশগুলো। কারণ তাদের অর্থনীতি বাংলাদেশের চেয়ে বড়।

উল্লেখ্য, কেবল কোন দেশের অর্থনীতির জিডিপির আকার ধরে এ সূচক তৈরি করা হয়। নাগরিকের মাথাপিছু আয় কিংবা জীবনমান আমলে নেয়া হয় না। পক্ষান্তরে, বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। ২০৩৫ সাল পর্যন্ত জনসংখ্যা আরও বাড়বে। তাই টপকে যাওয়া দেশগুলোর তুলনায় সবদিক থেকে এদেশের মানুষের জীবনমানে ওই সময়ও পার্থক্য থাকবে।

সিইবিআর’র সূচকে বিশ্ব অর্থনীতিতে এখনো এক নম্বর শক্তি যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে চীন ও জাপান। প্রথম ১০টি দেশের তালিকায় এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ভারত, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা ও কোরিয়া।

২০৩৫ সালে এ প্রথম ১০টি দেশের তালিকা থেকে পড়ে যাবে ইতালি, কানাডা ও কোরিয়া। তাদের স্থলে প্রথম ১০টি দেশের তালিকায় ঢুকবে ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল ও রাশিয়া। ২০৩৫ সাল নাগাদ বিশ্বের প্রথম ২৫টি দেশের তালিকায় যুক্ত হবে তিনটি নতুন দেশ-ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশ।