ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৭৩৪

লবঙ্গের যত কার্যকারিতা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:২৩ ২৩ আগস্ট ২০২০  

সর্দি-কাশিতে লবঙ্গের উপকারিতার কথা কমবেশি আমরা সবাই জানি। তবে এর কার্যকারিতার পরিধি আরও বিস্তৃত। রান্নায় বাড়তি স্বাদ আনে ঝাঁঝ লবঙ্গ। এটি গলা খুসখুস দূর করে। 

আমাদের দেশে রান্নাবান্নায় এর ব্যবহার বেশি। তবে গবেষণায় বারবার প্রমাণিত হয়েছে, রোগ নিরাময়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করে মশলা  জাতীয় পণ্যটি। এবার চলুন সবিস্তারে জেনে নিই লবঙ্গের উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি-
•  এক চা চামচ (৫ গ্রাম) লবঙ্গে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন কে ও ম্যাঙ্গানিজ়। মস্তিষ্কের বিভিন্ন কাজকর্ম সুষ্ঠু রাখতে ও হাড় শক্ত করতে ম্যাঙ্গানিজ় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 
•  এতে পর্যাপ্ত অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা ফ্রি র্যাডিকলস কমাতে সাহায্য করে। লবঙ্গের একটি উপাদান হলো ইউজেনল, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টি- অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে।
•  এর আরেকটি উপাদান নাইজেরিসিন। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে, এজন্য রক্ত থেকে শর্করা বিভিন্ন কোষে পৌঁছে, ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর মতো কাজ ভালোভাবে হয়। তাই মধ্য মাত্রার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ দারুণ উপকারী।
• সর্দি-কাশি, সাইনাসের ব্যথায় লবঙ্গ তেল মালিশ করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি দাঁতের ব্যথায় জাদুর মতো কাজ করে। লবঙ্গ দেয়া মাউথ ওয়াশ নিয়মিত ব্যবহার করলে মাড়ি সুস্থ থাকে। ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে দাঁত বাঁচে।
•  সংক্রমণ, স্ট্রেস বা জিনগত কারণে পেপটিক আলসার বা স্টমাক (পাকস্থলী) আলসারের সমস্যা বাড়ে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গের এসেনশিয়াল অয়েল গ্যাসট্রিক মিউকাসের উৎপাদনে সাহায্য করে। এ মিউকাসই সংক্রমণের হাত থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা করতে ঢাল হিসেবে কাজ করে।
•  লো-বোন মাস এমন একটি অবস্থা, যা বয়োজ্যেষ্ঠদের অস্টিয়োপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়। কয়েকটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, লবঙ্গের উপাদান হাড়ের জোড় ও বোন ডেনসিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
 
যেভাবে খাওয়া যায়
• সর্দি লাগলে লবঙ্গ চা হরহামেশা খাওয়া হয়। গার্গল করার সময় পানিতে তা দিলে সেটির ঝাঁঝে অনেকটা উপশম হয়।
• গরম পানিতে পাঁচ মিনিট লবঙ্গ ফুটিয়েও তা পান করা যায়।
• কাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে বা নুন মাখিয়ে খাওয়া যায়।
• মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
 সতর্কতা
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন-
• অনেকে অকারণেই মুখে লবঙ্গ রাখতে পছন্দ করেন। অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে বিষক্রিয়ার ভয় থাকে।
• অতিরিক্ত লবঙ্গ রক্ত পাতলা করে দেয়। রক্ত সঞ্চালনেও অনেক সময়ে বাধা দেয়। হিমোফিলিয়া রোগীদের এক্ষেত্রে ভয় বেশি।
• যাদের সুগার কমে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, তাদের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত লবঙ্গ হাইপোগ্লাইসিমিয়ার কারণ হতে পারে।
• লবঙ্গ বা লবঙ্গের তেলে অ্যালার্জি হচ্ছে কি না, নজর রাখতে হবে।
মনে রাখতে হবে-আদা, হলুদের মতো লবঙ্গের নানাবিধ ভেষজ গুণ নিয়ে প্রতিনিয়ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তাই কোনও রোগের নিরাময়ে এর কতটা ব্যবহার করবেন, তা চিকিৎসকের অনুমতি-পরামর্শ সাপেক্ষ।