ঢাকা, ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৩০

লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যায় আরও ৬ জন গ্রেফতার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৭:০৪ ৯ জুন ২০২০  

লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যা ও মানবপাচারের ঘটনায় আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রোববার ডিবি পুলিশের একাধিক টিম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। 
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-বাদশা মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, আকবর আলি, সুজন, নাজমুল হাসান ও লিয়াকত শেখ ওরফে লিপু। এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি পাসপোর্ট, দুটি মোবাইল ফোন ও টাকার হিসাব সম্মলিত দুটি নোটবুক উদ্ধার করা হয়।

সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেসব্রিফিং এ ডিবি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল বাতেন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, লিবিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ এবং সেখান হতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি দালালরা অনঅ্যারাইভাল ও ভিজিট ভিসার মাধ্যমে লোকজন পাচার করে। দেশটিতে পাচার করে ভিকটিমদের সেখানকার বিভিন্ন ক্যাম্পে আটক রেখে অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতিত ভিকটিমদের কান্নাকাটি, আকুতি-মিনতি করা অডিও বা সরাসরি মোবাইলে কথাবার্তা বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজনদের পাঠিয়ে টাকা নেয়া হতো। ভক্তভোগীদের বাঁচাতে তার আত্মীয়-স্বজনরা কোনও কোনও ক্ষেত্রে ভিটাবাড়ি বিক্রি করে টাকা পাঠাতো।

মো. আবদুল বাতেন বলেন, নিহত মাদারীপুরের ৭ জনকে বাংলাদেশ হতে লিবিয়াতে আমির হোসেনের কাছে পাচার করেছিল তার ভাই গ্রেফতারকৃত আকবর হোসেন। গ্রেফতারকৃত বাদশা মিয়া ১৩ বছর যাবৎ দেশটিতে অবস্থান করে। সেখানকার বেনগাজী, জোয়ারা শহরে তার নিজস্ব ক্যাম্প আছে। সমগ্র বাংলাদেশ থেকে সে নিয়মিত লিবিয়াতে মানবপাচার করে, পাচারকৃত বাংলাদশিদের তার ক্যাম্পে আটক রেখে নির্যাতন চালায়। পরে অতিরিক্ত টাকা পেলে তাদের সমুদ্রপথে ইতালিতে পাঠানো হতো। মাদারীপুরের নিহতদের মধ্যে ৪ জনকে ওই ক্যাম্পে আটক রেখে ত্রিপোলীতে পাচার করার এক পর্যায়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ডিবি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃত জাহাঙ্গীর আলম ঢাকাতে অবস্থান করে নিজস্ব কায়দায় বেনগাজিতে মানবপাচার করে। এছাড়া স্থানীয় অন্যান্য দালালদের কাছ থেকে প্রাপ্ত পাসপোর্টগুলো স্ক্যান করে সফটকপি দুবাই ও লিবিয়াতে প্রেরণ করে টুরিস্ট ভিসা এবং অনঅ্যারাইভাল মোয়াফাকা সংগ্রহ করে।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত সুজন ভিকটিম ইছার উদ্দিন, বিজয় ও মো. সজলদের লিবিয়ায় পাঠায়। ২৮ মে দেশটির ট্র্যাজিডিতে সজল আহত হয়ে সেখানকার এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। নিখোঁজ মো. বিজয় ও ইছার উদ্দিনের কোনও সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।
গ্রেফতারকৃতদের পল্টন ও তেজগাঁও থানায় মানবপাচার ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৮ মে লিবিয়ার মিসদাহ উপ-শহরের মরুভূমিতে ২৬ জন বাংলাদেদেশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া এ ঘটনায় আরও ১১ জন গুরুতর আহত হয়। লিবিয়া ও ইতালিতে অভিবাসী হতে যাওয়া শত শত বাংলাদেশি বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনে আহত, নিহত ও চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন। এসব ঘটনায় ভিকটিমদের আত্মীয়-স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ জেলা এবং ডিএমপি’র পল্টন ও তেজগাঁও থানায় পৃথক মামলা করা হয়।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর