ঢাকা, ১৯ জানুয়ারি রোববার, ২০২৫ || ৬ মাঘ ১৪৩১
good-food
৭৮৯

দেশে আনার প্রস্তুতি চলছে

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে গ্রেপ্তার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১২:৩৩ ৪ অক্টোবর ২০১৯  

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউ এ ই) দুবাই শহরে গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের তালিকাভুক্ত পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ। তার নামে ইন্টারপোলের রেড নোটিশও ছিল।
শীর্ষ সন্ত্রাসী ও রাজধানীর মালিবাগে দুই পুলিশ হত্যা মামলার আসামি জিসান আহমেদকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছে পুলিশ সদর দফতর। তাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাই থেকে দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।  

পুলিশ সদর দফতর জানিয়েছে, জিসানকে দুবাইয়ে গ্রেফতার করা হয় বুধবার রাতে।  যদিও দুবাইয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কয়েকদিন আগেই আটক হন জিসান। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হয় বুধবার।

গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তার হাতে ছিল ভারতীয় পাসপোর্ট। সেখানে তার নাম লেখা ছিল আলী আকবর চৌধুরী। পরে এনসিবি ঢাকা আর এনসিবি দুবাই মিলে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হয় যে, গ্রেপ্তার এই আলী আকবর চৌধুরীই বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান।

এআইজি (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) মহিউল ইসলাম বলেন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে দুবাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ করছে। তারা জানিয়েছে যে, জিসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুবাই কর্তৃপক্ষ এখন জিসানকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আইনশৃংখলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, পলাতক সন্ত্রাসী জিসান একটি ভারতীয় পাসপোর্ট বহন করছেন। সেখানে তার নাম বলা হয়েছে আলী আকবর চৌধুরী। ওই পাসপোর্ট নিয়েই তিনি এতদিন দুবাই অবস্থান করছেন।

বাংলাদেশ পুলিশের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে দুবাইয়ে পাঠানো হবে। পরে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সেরে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০১ সালে যে ২৩ জন ‘শীর্ষ সন্ত্রাসীর’ তালিকা করেছিল, জিসান আহমেদ ওরফে মন্টি তাদেরই একজন। এই পলাতক আসামিকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল।

গত শতকের শেষ এবং এ শতকের শুরুর দিকের বছরগুলোতে ঢাকার মতিঝিল, মালিবাগ, বাড্ডা, গুলশান, বনানীর ব্যবসায়ীদের কাছে জিসান ছিলেন আতঙ্কের নাম। তার চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির নানা গল্প সে সময় মানুষের মুখে মুখে ঘুরত।

২০০৩ সালের ১৪ মে ঢাকার মালিবাগে একটি হোটেলে জিসানকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযানে গিয়ে গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের দুই কর্মকর্তা। ওই হত্যাকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।

এরপর জিসান গা ঢাকা দেন এবং ভারত হয়ে দুবাইয়ে চলে যান বলে ধারণা করা হয়। তাকে ধরতে বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল।

সেই নোটিশে জিসানের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক বহনের অভিযোগ থাকার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি তার ডোমিনিকান রিপাবলিকের নাগরিকত্ব রয়েছে বলেও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন দেশে না থাকালেও জিসান দুবাইয়ে বসেই ঢাকার অপরাধ জগতের ‘অনেক কিছু’ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন বলে বিভিন্ন সময়ে খবর এসেছে গণমাধ্যমে।

সম্প্রতি ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এবং ঠিকাদার জিকে শামীম গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিসানের নাম নতুন করে আলোচনায় আসে।

গেল মাসের শেষে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, শামীম ও খালেদকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে জিসানের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তখনই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে নতুন নামে জিসানের দুবাইয়ে অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হন তারা। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এক কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং দুই হাজার ইয়াবাসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। 


 

অপরাধ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর